ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন, বন্দি মুক্তি স্থগিত করল হামাস
![](https://tbsnews.net/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/11/07e94480-e7cb-11ef-a319-fb4e7360c4ec.jpg.jpg)
ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করায় শনিবার নির্ধারিত ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তি 'পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত' স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছে হামাস।
হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু ওবাইদা সোমবার এক বিবৃতিতে বলেন, বন্দিরা 'দখলদার শক্তি আগের চুক্তি মেনে চলা এবং ক্ষতিপূরণ দেওয়া পর্যন্ত এটি স্থগিত থাকবে।'
ইসরায়েল এবং হামাস ৬ সপ্তাহের একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে রয়েছে। এই চুক্তির আওতায়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণে বন্দি হওয়া ইসরায়েলিদের মুক্তির বিনিময়ে প্রায় ২ হাজার ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে।
আবু ওবাইদা বলেন, ইসরায়েল বহুবার ওই যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গ করেছে। তিনি বলেন, "গত তিন সপ্তাহে আমরা শত্রুপক্ষ থেকে চুক্তির লঙ্ঘন এবং শর্ত পালনে ব্যর্থতা পর্যবেক্ষণ করেছি।"
"এই লঙ্ঘনগুলোর মধ্যে রয়েছে– উত্তর গাজায় উদ্বাস্তুদের ফিরে যাওয়ার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করা, গাজার বিভিন্ন অঞ্চলে গোলাবর্ষণ এবং গুলি চালানো এবং চুক্তি অনুযায়ী সব ধরনের ত্রাণ সামগ্রী প্রবেশে বাধা দেওয়া। এর মধ্যে, রেজিস্টেন্স তাদের সমস্ত দায়িত্ব পালন করেছে।"
কাসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র তাদের "চুক্তির শর্তাবলি পালনে প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন, যতক্ষণ না দখলদার শক্তি সেগুলি মেনে চলে।"
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ হামাসের এই পদক্ষেপের প্রতি দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, এটি "যুদ্ধবিরতি চুক্তির সম্পূর্ণ লঙ্ঘন"।
তিনি বলেন, "আমি [সেনাবাহিনীকে] গাজায় যে কোনো সম্ভাব্য পরিস্থিতির জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছি।"
দুই পক্ষই গত মাসে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর এখন পর্যন্ত পাঁচবার বন্দি বিনিময় করেছে। এর মাধ্যমে ২১ জন ইসরায়েলি এবং ৭৩০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি মুক্তি পেয়েছেন।
পরবর্তী বন্দি বিনিময় শনিবার হওয়ার কথা ছিল। তিনজন ইসরায়েলি বন্দির মুক্তির বিনিময়ে অনেক ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পেতেন।
বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি নাগরিককে বাড়ি ফেরার সময় ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন।
এদিকে, গাজা থেকে আহত ফিলিস্তিনি রোগীদের স্থানান্তর এবং ত্রাণ সামগ্রী বহনকারী ট্রাকের সংখ্যা যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে প্রতিশ্রুতির তুলনায় কম ছিল।
কাসাম ব্রিগেডের এই ঘোষণাটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক বিবৃতির পরিপ্রেক্ষিতে এসেছে, যিনি যুদ্ধবিরতি চুক্তির স্থায়িত্ব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
ট্রাম্প বারবার গাজায় জাতিগত নিধনের কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ওই অঞ্চলের "মালিকানা" নেবে।
চুক্তির প্রথম ধাপ ১ মার্চ শেষ হবে। দ্বিতীয় ধাপে সব বন্দির মুক্তি এবং একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি থাকার কথা। তবে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। চুক্তির তৃতীয় অংশে গাজা অঞ্চলের পুনর্গঠনের জন্য একটি বহু-বছরের পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত থাকার কথা।