ট্রাম্পের পরিকল্পনায় ফিলিস্তিনিদের গাজায় ফেরত আসার অধিকার থাকবে না
![](https://tbsnews.net/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/11/trumpp.jpg)
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার গাজা অধিগ্রহণ পরিকল্পনায় ২ মিলিয়নেরও বেশি ফিলিস্তিনির জন্য ফেরত আসার কোনো অধিকার থাকবেন না বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে ধ্বংস হওয়া গাজা ছেড়ে যাওয়া ছাড়া তাদের "কোনো বিকল্প নেই"।
এটি মার্কিন প্রেসিডেন্টের জাতিগত নিধনের প্রতি আরও একটি দৃঢ় সমর্থন। গত সপ্তাহে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে একটি সামিটে ট্রাম্প তার পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। এই পরিকল্পনায় আরব বিশ্বে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এবং ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগীদেরও অবাক করেছে।
ফক্স নিউজের ব্রেট বায়ারের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, তিনি গাজা উপত্যকার "মালিকানা" নেবেন এবং এটি "ভবিষ্যতের জন্য একটি রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন" হবে।
একই সময়, তিনি ফিলিস্তিনিদের মিশর এবং জর্ডানে পুনর্বাসনের পরিকল্পনাকেও সমর্থন জানান। তবে উক্ত দুটি দেশই এই পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছে এবং এ অঞ্চলের বৃহত্তম আরব রাষ্ট্রগুলি জানিয়েছে, এটি একেবারেই অযৌক্তিক।
ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ফিলিস্তিনিদের বসবাসের জন্য গাজার বাইরে ছয়টি নতুন স্থান তৈরি করবেন, যা কার্যত স্থায়ী শরণার্থী শিবিরে পরিণত হবে এবং এর খরচ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বহন করবেন।
ফিলিস্তিনিদের গাজায় ফিরে আসার অধিকার থাকবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বায়ারের কাছে বলেন, "না, তাদের থাকবে না, কারণ তারা আরও ভালো আবাসন পাবে।" তিনি আরও বলেন, "আমি তাদের জন্য একটি স্থায়ী জায়গা নির্মাণের কথা বলছি, কারণ এখন ফিরতে হলে তাদের বছরের পর বছর সময় লেগে যাবে। এটা (গাজা) বসবাসযোগ্য নয়।"
ট্রাম্পের প্রস্তাবিত এই পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্র আইনগত বা লজিস্টিক্যালভাবে কীভাবে বাস্তবায়িত হবে, এ বিষয়ে পেন্টাগন বা মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে এখনো কোনো গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়নি।
তবে, ট্রাম্পের এই ঘোষণাকে ইসরায়েলের ডানপন্থি বসতি আন্দোলন এবং তাদের যুক্তরাষ্ট্রের ইভাঞ্জেলিক্যাল মিত্ররা সমর্থন জানিয়েছেন। তারা গাজা এবং অন্যান্য দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড [যার মধ্যে পশ্চিম তীরও অন্তর্ভুক্ত] একত্রীকরণের পক্ষেও সমর্থন জানিয়েছেন।
গাজা সম্পর্কে ট্রাম্প বলেছেন, "এই সময়ের মধ্যে আমি এর মালিক হবো। এটি ভবিষ্যতের জন্য একটি রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন হিসেবে ভাবুন। এটি একটি সুন্দর জমি হবে। খুব বেশি টাকা খরচ করা হবে না।"
রোববার জাতিসংঘের স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশনের প্রধান নাভি পিল্লাই 'পলিটিকো' নামক একটি সংবাদ ওয়েবসাইটে বলেন, ট্রাম্পের পরিকল্পনা "একটি অধিকারকৃত গোষ্ঠীকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা একটি আন্তর্জাতিক অপরাধ এবং জাতিগত নিধনের সমতুল্য।"
পিল্লাই আরও বলেন, "আইন অনুযায়ী, ট্রাম্পের পক্ষে ফিলিস্তিনিদের তাদের ভূমি থেকে বাস্তুচ্যুত করার হুমকি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।"
১৯৪৮ সালের আরব–ইসরায়েল যুদ্ধের সময় ঘরবাড়ি হারানো ১.৫ মিলিয়নেরও বেশি ফিলিস্তিনি এবং তাদের উত্তরসূরিরা বর্তমানে জর্ডান, লেবানন, সিরিয়া, গাজা উপত্যকা এবং পশ্চিম তীর (যার মধ্যে পূর্ব জেরুজালেমও অন্তর্ভুক্ত) অঞ্চলের শরণার্থী শিবিরে বসবাস করছেন।