গৃহবন্দী সু চি এবার নির্জন কারাগারে
মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চি (৭৭)-কে দেশটির সামরিক কর্তৃপক্ষ এবার রাজধানী নেপিডোর একটি নির্জন কারাগারে (সলিটারি কনফাইনমেন্ট) স্থানান্তরিত করেছে। মিয়ানমারের সামরিক মুখপাত্র জাও মিন তুন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে জান্তা সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে রাজধানীরই কোনো এক অজ্ঞাত স্থানে ছিলেন এই নোবেলজয়ী নেত্রী।
গ্রেপ্তারের পর থেকে সু চির ওপর অন্তত ২০টি ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে, সু চির সম্মিলিত কারাদণ্ডের সময়সীমা দাঁড়াবে ১৯০ বছর! অর্থাৎ বাকি জীবন কারাগারেই কাটাতে হবে তাকে।
সু চির ওপর একাধিক দুর্নীতির অভিযোগও আনা হয়েছে, যদিও এর কোনোটিই সু চি স্বীকার করেন নি।
বিবিসি বার্মিজ-ল্যাংগুয়েজ সার্ভিস একটি সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, সু চিকে নেপিডোতে কারাগারের অভ্যন্তরে একটি পৃথক ভবনে রাখা হয়েছে।
২০২০ সালের নভেম্বরে ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) হয়ে মিয়ানমারের সাধারণ নির্বাচনে জয়লাভ করে সরকার গঠন করেন সু চি। কিন্তু ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশটির সেনাবাহিনী।
সু চির বিরুদ্ধে নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ এনে দেশের সর্বময় ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।
এরপর থেকে দুর্নীতি, দাপ্তরিক গোপনীয়তা আইন ভঙ্গ, বিদ্রোহ উস্কে দেওয়াসহ নানা অপরাধে অভিযুক্ত করে সু চিকে গৃহবন্দী করে রাখে সেনাবাহিনী।
সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে আদালতে হাজির হওয়া ছাড়া সু চিকে আর জনসম্মুখে দেখা যায়নি বললেই চলে।
কারাগারে স্থানান্তরের বিষয়ে মন্তব্যের জন্য বার্তা সংস্থা রয়টার্স সু চি বা তার প্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। সু চির আইনজীবীদেরও তার মামলা সম্পর্কে কথা বলতে দেওয়া হয়নি।
১৯৮৯ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত প্রায় ১৫ বছর সেনাবাহিনীর হাতে আটক ছিলেন সু চি। মিয়ানমারে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯১ সালে তাকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়।
২০১৫ সালের নির্বাচনে তার দল বিজয়ী হলেও তাকে রাষ্ট্রপতির পদে বসতে দেওয়া হয়নি। কিন্তু তখন থেকেই তিনি ব্যাপকভাবে মিয়ানমারের 'ডি ফ্যাক্টো' শাসক হিসাবে বিবেচিত।
তবে ২০১৭ সালের রোহিঙ্গা সংকটের সময় ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয় সু চির সরকার।
- সূত্র- রয়টার্স ও বিবিসি