শ্রীলঙ্কার মতো দেউলিয়া হওয়া এড়াতে পেরেছি: পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী
পতন এড়িয়ে পাকিস্তানের অর্থনীতিকে সঠিক পথে এগিয়ে নিতে সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল। তবে এরজন্য জনগণকে কিছুটা কষ্ট সহ্য করতে হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
জ্বালানি ও নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে ঋণ খেলাপি হওয়ার পথে থাকায় দেশটিকে এখনও কঠিন লড়াই করতে হচ্ছে।
পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, গত ২২ জুলাই সপ্তাহান্তে দেশটির আনুষ্ঠানিক বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৭৫৪ মিলিয়ন ডলার হ্রাস পেয়ে ৮.৫৭ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। ফলে আমদানি অর্থ পরিশোধে দেশটি হিমশিম খাচ্ছে।
মার্কিন গণমাধ্যম সিএনবিসির 'স্ট্রিট সাইনস এশিয়া'-য় মঙ্গলবার মিফতাহ ইসমাইল বলেন, 'পাকিস্তান শ্রীলঙ্কা হওয়ার পথে কি না তা নিয়ে গুরুতর উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে আমরা কিছু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন নিয়ে এসেছি। আমি মনে করি আমরা গুরুতর পরিস্থিতি এড়াতে পেরেছি'।
'আমরা এখন আইএমএফের প্রোগ্রামে আছি। আমরা স্টাফ পর্যায়ের চুক্তিতে পৌঁছেছি। এই মাসের শেষদিকে বোর্ডের অনুমোদন পাওয়ার আশা করছি। আমরা জ্বালানি থেকে, বিদ্যুৎ থেকে ভর্তুকি তুলে দিয়েছি…কর বাড়িয়েছি। তাই আমি মনে করি আমরা সঠিক পথে আছি'।
ঋণ সংকট
পাকিস্তান গুরুতর ঋণ সংকটের সম্মুখীন। চলতি বছর দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কার মতোই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকটে পড়ে তারা।
১৯৪৮ সালের পর থেকে সবচেয়ে বাজে অর্থনৈতিক সংকটের সঙ্গে লড়াই করছে শ্রীলঙ্কা। বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে দেশটি আইএমএফের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে।
তবে জুলাইয়ে আইএমএফের সঙ্গে চুক্তির পর পাকিস্তান ঋণ খেলাপি ও দেউলিয়া হওয়া থেকে রক্ষা পায়। দেশটি আইএমএফের সঙ্গে স্টাফ লেভেল এগ্রিমেন্টে যায়।
ইসলামাবাদ আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আইএমএফ থেকে প্রথম ধাপে ১.১৭ বিলিয়ন ডলার পাবে।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ
জুলাই মাসে, পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতি আগের বছরের তুলনায় ২৪ দশমিক ৯৩ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। দেশটির সরকারি তথ্য অনুসারে ২০০৮ সালের অক্টোবরের পর এই হার সর্বোচ্চ।
জুনে বাজেট বক্তৃতায় পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকার অর্থনৈতিক ও রাজস্ব নীতি পরিশীলিত করার মাধ্যমে স্ফীতি কমানোর চেষ্টা করবে।
'আমি মনে করি গমের দাম কমতে থাকায় নিত্যপণ্যের দাম কমছে। হেডলাইন মূল্যস্ফীতি যাই হোক না কেন পাকিস্তানের কোর (মূল) মূল্যস্ফীতি এখনও ১২ বা ১৩ শতাংশ,' বলেন অর্থমন্ত্রী।
'আমরা মনেটারি এক্সপেনশন বন্ধ করেছি। সুদের হার এখনও অনেক বেশি। আমার মনে হয় আমরা মূল্যস্ফীতিকে কোর মূল্যস্ফীতির পর্যায়ে নামিয়ে আনতে সক্ষম হব,' বলেন তিনি।
- সূত্র: সিএনবিসি