ঘরছাড়া অর্ধশতাধিক তরুণের খোঁজ মেলেনি এখনো: র্যাব
দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নিখোঁজ অর্ধশতাধিক তরুণের তথ্য দিয়েছিলো র্যাব। তারা নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়েই ঘর ছেড়েছে বলে জানিয়েছে এই এলিট ফোর্স।
'হিজরতে' বের হওয়া অর্ধশতাধিক জঙ্গির খোঁজ না পাওয়া, পার্বত্যাঞ্চলে প্রশিক্ষণ, ভারী অস্ত্র- এসব মিলিয়ে যেকোনো সময় যেকোনো ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছে র্যাব।
র্যাব বলছে, নিখোঁজ ব্যক্তিরা যেখানে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল তা গহিন বনাঞ্চল। যেখান থেকে পরিচয় গোপন করে যাওয়া-আসা অনেক সহজ। যখন তারা যায়, তখন ট্যুরিস্ট হিসেবেই যায়। পার্বত্যাঞ্চলে অনেক অরক্ষিত বনাঞ্চল রয়েছে। যেখানে তারা বিভিন্নভাবে যেতে পারে।
হামলার মতো সম্ভাব্য বিষয় মাথায় রেখে সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে পার্বত্যাঞ্চলের গহিন এলাকায় সেনাবাহিনী, র্যাব ও অন্যান্য বাহিনীর সমন্বয়ে যৌথ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
গত ৬ অক্টোবর থেকে মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ, যাত্রাবাড়ী, কেরানীগঞ্জ, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান এলাকায় চার দফায় অভিযান চালিয়ে নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার ২২ জনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
বৃহস্পতিবার কুমিল্লার লাকসামে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় আরও চারজনকে। পরে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, "নতুন এই সংগঠনটিকে আশ্রয় প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র দেওয়ার কাজটি টাকার বিনিময়ে করছে পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন 'কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট'–কেএনএফ। প্রতি মাসে ৩ লাখ টাকার বিনিময়ে জঙ্গিদের আশ্রয় ও প্রশিক্ষণ দিচ্ছে তারা।"
গত ৮-৯ মাসে দুই দফায় একে-২২, একে-৩২-এর মতো ভারী অস্ত্র কেনার জন্য কুকি-চিনকে ১৭ লাখ টাকা দিয়েছে জঙ্গিরা।
গ্রেপ্তার বাচ্চুর মাধ্যমে র্যাব জানতে পেরেছে, বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের মোবাইল ব্যাংকিং ও ব্যাংকিং চ্যানেলে তারা অস্ত্র কেনার জন্য টাকা দিয়েছে। টাকা পাওয়ার পর পার্বত্য চট্টগ্রামে যারা প্রশিক্ষণ নিচ্ছে, র্যাব আনুমানিকভাবে ধরে নিয়েছে তাদের সংখ্যাটা ৫০-এর বেশি।
র্যাব আরো জানিয়েছে, জঙ্গি সংগঠনটি দেশের বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে এক হাজার থেকে শুরু করে এক লাখ টাকা পর্যন্ত ডোনেশন পেয়েছে।
ডোনার শাখা ক, খ ও গ ক্যাটাগরিতে জঙ্গিদের অর্থ জোগান দিচ্ছে দেশের ভেতরে থাকা অনেকে। তাদেরও তালিকা পেয়েছে র্যাব।
ডোনার 'ক' ক্যাটাগরিতে ডোনাররা ১০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত প্রতি মাসে জঙ্গিদের দিয়ে থাকে। 'খ' ক্যাটাগরিতে ৩ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দেয়। আর 'গ' ক্যাটাগরিতে প্রতি মাসে ১ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত তারা দেয়।
এই ব্যক্তিরা নিজের টাকা জঙ্গিদের দিচ্ছে, নাকি দেশের বাইরে থেকেও কোনো সহায়তা আসছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।