২৩ বছর পর বন্ধু মাইকেলের মৃতদেহ উদ্ধারে এভারেস্ট অভিযানে গিয়েছিলেন বেয়ার গ্রিলস 

'ম্যান ভার্সাস ওয়াইল্ড' খ্যাত ব্রিটিশ অভিযাত্রী ও উপস্থাপক বেয়ার গ্রিলস জানিয়েছেন, তিনি 'মেড ইন চেলসি' টিভি সিরিজ খ্যাত তারকা স্পেন্সার ম্যাথিউসের ভাই মাইকেল ম্যাথিউসের মৃতদেহ উদ্ধারের জন্য এভারেস্ট অভিযানে গিয়েছিলেন। ২৩ বছর আগে এভারেস্ট জয় করে তৎকালীন ব্রিটেনের সর্বকনিষ্ঠ এভারেস্টজয়ী হিসেবে রেকর্ড গড়েছিলেন মাইকেল। কিন্তু এ ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পরে এভারেস্টের কোলেই মৃত্যুবরণ করেন তিনি।  

মাইকেল ম্যাথিউসের আরেক ভাই জেমস ম্যাথিউস ব্রিটিশ রাজপরিবারের বধূ কেট মিডলটনের বোন পিপা মিডলটনের স্বামী।  ১৯৯৯ সালে এভারেস্ট জয় করতে গিয়ে এক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন মাইকেল। ওই সময় তার বয়স ছিল ২২ বছর। তার ঠিক আগের বছর, ১৯৯৮ সালে বেয়ার গ্রিলস ২৩ বছর বয়সে এভারেস্ট জয় করে ব্রিটেনের সর্বকনিষ্ঠ এভারেস্টজয়ীর খেতাব লাভ করেন। তাকে দেখেই এভারেস্ট অভিযানে যেতে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন মাইকেল।

কিন্তু রেকর্ড গড়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই পৃথিবী থেকে বিদায় নেন মাইকেল। ২৩ বছর পরেও তার মৃতদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি, ফলে শোকের বোঝা আরও ভারি হয়ে চেপে বসেছে এই পরিবারটির বুকে।

১৯৯৯ সালে এভারেস্ট অভিযানের সময় মাইকেল ম্যাথিউস। ছবি: ডেইলি মেইল

স্পেন্সার ও জেমস ম্যাথিউসের সঙ্গে বেয়ার গ্রিলসের বন্ধুত্ব দীর্ঘদিনের। সম্প্রতি মাইকেলের মৃতদেহ উদ্ধারের জন্য নিজের প্রচেষ্টার কথা গণমাধ্যমের সামনে প্রকাশ করেছেন এই দুঃসাহসী অভিযাত্রী।

চলতি সপ্তাহে অক্সফোর্ড ইউনিয়ন সোসাইটিতে এ প্রসঙ্গে কথা বলেন বেয়ার গ্রিলস। তিনি বলেন, "মাইকেলের মৃতদেহ উদ্ধার করতে আমরা অভিযানও চালিয়েছিলাম। কিন্তু তার লাশ আমি খুঁজে পাইনি। আমরা পুরো একটা টিম ছিলাম, সেখানে ১০ জনের মতো নেপালি ছেলে ছিল এবং আরও কিছু  পশ্চিমা পর্বতারোহীও ছিল। আমরা একজনের লাশ খুঁজে পেয়েছিলাম, তবে সেটা মাইকেলের নয়। অন্য এক নেপালি পর্বতারোহীর।"

১৯৯৮ সালে নিল লাফটনের সাথে এভারেস্ট চূড়ায় বেয়ার গ্রিলস। ছবি: ডেইলি মেইল

বেয়ার গ্রিলস আরো বলেন, "আমরা সত্যিই খুব চেষ্টা করেছি। আমাদের সাথে বিশ্বের সেরা টিম ছিল। আমাদের এই অভিযানের গল্প এখনো কোথাও প্রকাশিত হয়নি, তাই আমি এটা নিয়ে খুব বেশি কথা বলবো না। পর্বতের চূড়ায় উঠেছিলাম আমরা। লোকে ঠিকই বলে, এভারেস্ট জয় করতে গেলে মূল্য চুকাতে হয়।" 

এবছরের মার্চে জানা গিয়েছিল যে স্পেন্সার তার ভাই মাইকেলের জীবনের শেষ মুহূর্তগুলো নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র বানাবেন। সেসময় এক সূত্রের ভাষ্য ছিল- "যদিও ম্যাথিউসের পরিবারের কেউ জানেনা মাইকেলের লাশ কোথায় আছে, কিন্তু একজন গাইড আছে যিনি জায়গাটা চেনেন বলে মনে করা হচ্ছে। এই প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণের সাথে অনেক আবেগ জড়িয়ে থাকবে, কিন্তু তাও স্পেন্সার চান এই প্রজেক্টটা হোক।"

সূত্র: মেট্রো