ঈশ্বরদীতে যুবলীগ নেতার গুলিতে নসিমন চালককে হত্যার অভিযোগ
পাবনার ঈশ্বরদীতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মামুন হোসেন (২৬) নামের এক ভটভটি (নসিমন) চালককে গুলি করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে পৌর যুবলীগের সদস্য আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ রকি হোসেন ও সুমন হোসেন নামের আরও দুইজন গুরুতর আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন ঈশ্বরদী পৌর যুবলীগের সদস্য এবং ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা কামাল উদ্দিনের ভাই।
আরো দুই অভিযুক্ত হলেন, একই ওয়ার্ডের ছাত্রলীগ নেতা হৃদয় হোসেন এবং ছাত্রলীগ কর্মী ইব্রাহিম।
আনোয়ার হোসেন ওই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই পরিবহনে চাঁদাবাজীর নেতৃত্বে দিয়ে আসছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
বুধবার রাতে হতাহতের এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি বলে জানান, ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার।
অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান পাবনার পুলিশ সুপার মোঃ আকবর আলী মুনশি। তিনি বলেন, 'এই ঘটনায় মামলা না হলেও পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।'
বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে পৌর শহরের কাচারিপাড়া কড়ইতলায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত মামুন হোসেন পিয়ারাখালী এলাকার মানিক হোসেনের ছেলে। যিনি পেশায় ভটভটি চালক। আহতরা হলেন, পিয়ারাখালী এলাকার শরীফ হোসেনের ছেলে রকি ও মো. বাবুর ছেলে সুমন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়েকজন যুবক বুধবার রাত ৯টার দিকে কড়ইতলা এলাকায় একটি নসিমন থামানোর চেষ্টা করেন। এ সময় পেছনে থাকা একটি লেগুনা নসিমনটির সঙ্গে ধাক্কা লাগলে লেগুনার সামনের কাচ ভেঙে যায়। এতে নসিমন চালকের চাবি কেড়ে নিয়ে তার কাছ থেকে জরিমানা দাবি করেন লেগুনাচালক।
এতে দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি থেকে হাতাহাতি শুরু হয়। একপর্যায়ে নসিমন চালক ঘটনাস্থল থেকে চলে যান। কিছুক্ষণ পর কয়েকজন যুবক এসে নসিমন চালককে কেন তাড়ানো হয়েছে- এ বিষয়ে লেগুনাচালকর পক্ষের লোকজনের কাছে জানতে চান। এতে আবারও দুই পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। বিষয়টি দেখে আশেপাশের লোকজন এসে তাদের থামানোর চেষ্টা করলে যুবলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন তার কোমরে থাকা পিস্তল বের করে গুলি করেন।
নিহত মামুনের মামা মনিরুল ইসলাম জানান, বাগবিতণ্ডার সময় আনোয়ার হোসেন নেশাগ্রস্ত ছিল। তারা ভটভটির চাঁদা আদায়ের সঙ্গে যুক্ত। আনোয়ার ঘটনাস্থলে এসে ভটভটি চালকের পক্ষ নিয়ে লেগুনার চালক ও এলাকার লোকজনের ওপর চড়াও হয়।
একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে গেলে আনোয়ার পিস্তল বের করে মামুন ও সুমনকে গুলি করে এবং আনোয়ারের সহযোগীরা রকিকে ছুরিকাঘাত করে। তলপেটে গুলি লাগায় মামুন ঘটনাস্থলেই মারা যায়। আহত রকি ও সুমনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা আনোয়ার হোসেনের ভাই পৌর কাউন্সিলর কামাল উদ্দিনকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় দিয়ে বাড়ি থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এ অভিযোগ করেন কামালের ভাই জামাল উদ্দিন। তবে এ বিষয়ে পুলিশ এখনো কিছু স্বীকার করেনি।