মালিকরা শ্রমিকদের কালো তালিকাভুক্ত করলে ক্রেতাদের বলে তাদের গার্মেন্টসও কালো তালিকাভুক্ত করবো: আইবিসি
দেশের শ্রমিক সংগঠনগুলোর অন্যতম বৃহৎ প্লাটফর্ম ইন্ডাস্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিল (আইবিসি) গার্মেন্টস মালিকদের সতর্ক করে বলেছে, শ্রমিকদের কালো তালিকাভুক্ত করলে তারা ক্রেতাদের বলে গার্মেন্টসও কালো তালিকাভুক্ত করবে।
আইবিসির সিনিয়র সহ-সভাপতি বাবুল আক্তার এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, "গার্মেন্টস মালিকরা শ্রমিকদের কালো তালিকাভুক্ত করলে আমরাও পোশাক ক্রেতাদের বলে সেই গার্মেন্টসগুলো কালো তালিকাভুক্ত করবো।"
গার্মেন্টস শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরী নির্ধারনে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে সৃষ্ট শ্রম অসন্তোষ, শ্রমিক হত্যা, শ্রমিক ও শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা, হয়রানী এবং সম্প্রতি বিজিএমই এর পদক্ষেপ এবং ঘোষিত ন্যূনতম মজুরি পুনঃবিবেচনার দাবিতে আজ (১৫ নভেম্বর) সংবাদ সম্মেলন করে আইবিসি।
ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনের মধ্যে চারজন পোশাক শ্রমিক নিহতে ন্যায়বিচারের প্রয়োজনীয়তার উপরও জোর দিয়েছে তারা।
আইবিসির সভাপতি আমিরুল হক বলেন, "চার জন শ্রমিক নিহত হয়েছে। এ শ্রমিক হত্যায় জড়িতদের দ্রুত বিচার করতে হবে।"
আইবিসির সাধারণ সম্পাদক কুতু্বউদ্দিন আহমেদ বলেন, "অপারেটরদের গ্রেডের উপর ভিত্তি করে বেতন বৃদ্ধি করে সমন্বয় করতে হবে। গণহারে শ্রমিক ও শ্রমিক নেতাদের গ্রেপ্তার ও হয়রানী বন্ধ করতে হবে।"
আইবিসি'র লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, এ পর্যন্ত ৬২টি মামলা হয়েছে। প্রায় ২৩ হাজার অজ্ঞাতনামা শ্রমিককে আসামি করা হয়।
আমিরুল হক বলেন, "আমাদের ১২০ জন শ্রমিক গ্রেপ্তার হয়েছে। এ সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। ৬ জন শ্রমিক নেতা গ্রেপ্তার হয়েছে। সবাইকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।"
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, "১৩ (১) ধারায় বন্ধ রাখা কারখানার শ্রমিকদেরকে পূর্ণ মজুরী দিতে হবে, এ জন্য কোন শ্রমিকের মজুরী কম দেওয়া যাবে না। বন্ধ কারখানাগুলো অবিলম্বে খুলে দিতে হবে।"
আরও বলা হয়, "যেসব শ্রমিক আহত হয়েছেন তাদের চিকিৎসা সেবা দিতে হবে, এবং যে সব শ্রমিক নিহত হয়েছেন তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।"
বেশ কিছুদিন ধরে কমপক্ষে ২০,০০০ টাকা ন্যূনতম মজুরির দাবিতে পোশাক শ্রমিকরা আন্দোলন করলেও, সরকার কারখানার মালিকদের প্রস্তাবের সাথে সামঞ্জস্য রেখে মজুরি ১২,৫০০ টাকা নির্ধারণ করেছে।
গত ২২ অক্টোবর মজুরি বোর্ডের এক সভায় প্রতিনিধিরা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বিদ্যমান ৮,০০০ টাকা থেকে ২০,৩৯০ টাকায় উন্নীত করার দাবি জানালে মালিকপক্ষ তা ১০,৪০০ টাকা করার প্রস্তাব দেয়।
এরপর ২৩ অক্টোবর থেকে শ্রমিকরা সড়কে নামতে শুরু করে এবং তাদের আন্দোলন ধীরে ধীরে সহিংস রূপ নেয়।
৩০ অক্টোবর আশুলিয়া, সাভার ও গাজীপুরের কয়েকটি শিল্পাঞ্চলে পুলিশ ও শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষে অন্তত দুইজন নিহত ও প্রায় ৪০ জন আহত হয়।