তিন ফরম্যাটে সাকিবকেই দীর্ঘমেয়াদে অধিনায়ক রাখতে চায় বিসিবি
ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট অধিনায়কত্বে অভিষেক হয় নাজমুল হোসেন শান্তর। নিউজিল্যান্ড সফরে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজেও নেতৃত্ব দেবেন তিনি। ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করা বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান দীর্ঘমেয়াদেও অধিনায়কত্ব করতে প্রস্তুত, যা তিনি বেশ কয়েকবার বলেছেন। যদিও আপাতত অধিনায়কত্বে পরিবর্তন আনার ভাবনা নেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি)।
তিন ফরম্যাটে সাকিবকেই অধিনায়ক রাখার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস। মঙ্গলবার মিরপুরে সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, নির্দিষ্ট সিরিজের জন্য শান্তকে নেতৃত্বের দায়িত্বে দেওয়া হয়েছে। তিন ফরম্যাটে সাকিবই অধিনায়ক, দীর্ঘমেয়াদে তাকেই অধিনায়ক রাখার পরিকল্পনা বিসিবির।
বিশ্বকাপ থেকেই সাকিবের চোট। তার অবর্তমানে বিশ্ব মঞ্চে দুটি ম্যাচে নেতৃত্ব দেন শান্ত। একই চোটে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলা হয়নি সাকিবের। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে শান্তর নেতৃত্বে খেলে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজেও নেই সাকিব, এবারও শান্তর ওপর আস্থা রেখেছে বাংলাদেশ।
আগে থেকেই টেস্ট ও টি-টোয়েন্টির নেতৃত্বে থাকা সাকিব বিশ্বকাপের আগে ওয়ানডে অধিনায়কত্ব পান। তামিম ইকবাল নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ালে অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডারবেক বেছে নেয় বিসিবি। কিন্তু তখনই একটি টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাকিব বলেন, বিশ্বকাপের পর একদিনও নেতৃত্বে থাকবেন না তিনি।
সাকিবের এমন মন্তব্য তো আছেই, পাশাপাশি ঘরের মাঠ ও বিদেশে কয়েকটি সিরিজে না থাকায় আলোচনায় সাকিবের অধিনায়কত্বের বিষয়টি। যদিও বিসিবি তাদের আগের পরিকল্পনাতেই আছে। জালাল ইউনুস বলেন, 'এখানে আসলে (অধিনায়কত্ব নিয়ে) নতুন করে ভাবনার কিছু আসে না। সে (সাকিব) এখনও আমাদের অধিনায়ক। এখন আমরা শান্তকে দায়িত্ব দিয়েছি। শান্তকে আমরা বলেছি যে, সামনের দুইটা সিরিজ আছে, যেটা নিউজিল্যান্ড সিরিজ, সে জন্য তাকে অধিনায়কত্ব দিয়েছি।'
'সাকিবকে একটা লম্বা সময়ের জন্য অধিনায়কত্ব দেওয়া হয়েছে। এখনও সে সব সংস্করণের অধিনায়ক। সাকিব ফিরলে আমরা ধরে নিচ্ছি সে-ই অধিনায়ক। এখন সামনে সে অধিনায়ক থাকবে কী থাকবে না, এ রকম কোনো প্রশ্ন উঠেনি। সে জানে সে এখনও অধিনায়ক। আমরাও তাকে চাই। এরই মধ্যে তাকে সেই দায়িত্ব দিয়ে রেখেছি।' যোগ করেন বিসিবির এই পরিচালক।
চোট ও ব্যক্তিগত ছুটির কারণে ক্রিকেট থেকে নিজেকে দূরে রাখা সাকিব নাম লিখিয়েছেন রাজনীতিতে। আসন্ন নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হয়ে মাগুরা-১ আসনে লড়বেন দেশসেরা এই ক্রিকেটার। বয়সও কম হয়নি, গত মার্চে ৩৬ পেরিয়েছেন সাকিব। সব মিলিয়ে তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ভবিষ্যত নিয়ে প্রায়ই প্রশ্ন ওঠে। যদিও এই ধোঁয়াশা তিনি দূর করেছেন। সোমবার আমেরিকাতে এক অনুষ্ঠানে সাকিব বলেন, জাতীয় দলে সময় দিতে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট থেকে নিজেকে দূরে রাখার পরিকল্পনা করেছেন তিনি।
অতীতে যে ক্রিকেটার জাতীয় দলের সিরিজ রেখে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটকে প্রাধান্য দিয়েছেন, তার এমন সিদ্ধান্তে রীতিমতো আনন্দিত বিসিবি। স্বস্তি প্রকাশ করে জালাল ইউনুস বলেন, 'ওর (সাকিব) কথা মিডিয়াতে দেখেছি। এটা আনন্দের ব্যাপার। এখন সে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট থেকে দেশের ক্রিকেটের ওপর বেশি মনোযোগ দেবে। এটা আমাদের জন্য বড় একটা স্বস্তির খবর। আমরা চাই, যতোগুলো সংস্করণ আছে, সে আমাদের দেশের জন্য খেলুক। এটা আমাদের কামনা।'