অবন্তিকার মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত সহপাঠী, সহকারী প্রক্টর পুলিশ হেফাজতে
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রী ফাইরুজ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় সংযোগ থাকার অভিযোগে তার সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকী ও বিশ্ববিদ্যালয়টির সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে শনিবার (১৬ মার্চ) আটক করেছে পুলিশ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, 'ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর থেকে এ দুজন পুলিশের নজরদারিতে ছিলেন। তারা এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।'
শনিবার সন্ধ্যায় অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম কুমিল্লার কোতোয়ালী মডেল থানায় অবন্তিকার সহপাঠী ও সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আবন্তিকার সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকী তাকে যৌন হয়রানি করত। ভুক্তভোগী সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের কাছে অভিযোগ করলে তিনি কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে তাকে অপমান করেন।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন বলেন, 'অবন্তিকার মা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
এর আগে এ দিন বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করে আম্মান সিদ্দিকী ও দ্বীন ইসলামকে গ্রেপ্তার ও স্থায়ী বহিষ্কারের বিষয়ে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে পাঁচ দফা দাবি পেশ করে।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৭–২৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী ফাইরুজ অবন্তিকা রাত ১০টার দিকে এক ফেসবুক পোস্টে তার সহপাঠী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরকে অভিযুক্ত করার পর কুমিল্লায় নিজের বাসায় আত্মহত্যা করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি এবং শিক্ষার্থী আম্মান সিদ্দিকীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে। প্রশাসন এ ঘটনায় চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
ফেসবুক পোস্টে অবন্তিকা লেখেন, 'আমি যদি কখনো সুইসাইড করে মারা যাই তবে আমার মৃত্যুর জন্য একমাত্র দায়ী থাকবে আমার ক্লাসমেট আম্মান সিদ্দিকী, আর তার সহকারী হিসেবে তার সাথে ভালো সম্পর্ক থাকার কারণে তাকে সাপোর্টকারী জগন্নাথের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম। আম্মান যে আমাকে অফলাইন অনলাইনে থ্রেটের উপর রাখতো সে বিষয়ে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করেও আমার লাভ হয় নাই। দ্বীন ইসলাম আমাকে নানান ভাবে ভয় দেখায় আম্মানের হয়ে যে আমাকে বহিষ্কার করা ওনার জন্য হাতের ময়লার মতো ব্যাপার। আমি জানি এখানে কোনো জাস্টিস পাবো না।'
পোস্টে তিনি আরও উল্লেখ করেন, 'আমি উপাচার্য সাদোকা হালিম ম্যামের কাছে আপনি এই প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক হিসেবে আপনার কাছে বিচার চাইলাম। আর আমি ফাঁসি দিয়ে মরতেসি।'