মহামারির আগে ১ কোটি ৯০ লাখ মানুষের দারিদ্র্য বিমোচন করেছে বাংলাদেশ
২০৩০ সালের মধ্যে গরিব মানুষের সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনার পথে ভালোভাবেই এগোচ্ছিল বাংলাদেশ। কেননা, ২০১৪ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে বহুমাত্রিক দারিদ্র্য থেকে ১ কোটি ৯০ লাখ মানুষকে বের করে আনতে পেরেছে। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য দেওয়া হয়।
২০১৫ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে নিজ নিজ দেশের দারিদ্র্য অর্ধেকে নামিয়ে আনার পথে বাংলাদেশসহ ৪৭টি দেশ করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারি শুরু হওয়ার আগে বেশ ভালোভাবেই ছিল বলে জানানো হয় ওই প্রতিবেদনে।
অবশ্য, সাব-সাহারান আফ্রিকার ১৪টিসহ মোট ১৮টি দেশ এ ব্যাপারে লক্ষ্যচ্যূত হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার 'গ্লোবাল মাল্টি-ডায়মেনশনাল পোভার্টি ইনডেক্স (এমপিআই) ২০২০' শিরোনামের ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচী (ইউএনডিপি) এবং অক্সফোর্ড পোভার্টি অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (ওপিএইচআই)।
গরিব মানুষদের জীবন ধারনের নানা অসুবিধার ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক তথ্য আমলে নেয় এমপিআই।
সর্বশেষ সংস্করণে ১০৭টি উন্নয়নশীল দেশের দারিদ্র্যের একটি বিস্তৃত চিত্র এঁকে, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও জীবনযাত্রার মান- সমান গুরুত্বপূর্ণ এই তিন মাত্রায় প্রতিটি ব্যক্তিমানুষের ১০টি সূচক যাচাই করে দেখা হয়েছে।
বাংলাদেশে ২০১৯ সালে ওই তিন মাত্রার কোনোটিতে কিংবা সবগুলোতেই সুবিধাবঞ্চিতের সংখ্যা ছিল ৩ কোটি ৯২ লাখ ৪০ হাজার।
মানদণ্ডগুলোর মধ্যে জীবনযাত্রার মানের অবস্থান ছিল সবচেয়ে নাজুক। এই মাত্রায় সুবিধাবঞ্চিত ছিল ৪৫.১ শতাংশ জনগণ।
অন্যদিকে শিক্ষায় ৩৭.৬ ও স্বাস্থ্যে ১৭.৩ শতাংশ নাগরিক ছিল সুবিধাবঞ্চিত।
তাছাড়া বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার ৬.৫ শতাংশই বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার।
গবেষণাটির অন্তর্ভুক্ত ১০৭ দেশে ১৩০ কোটি (২২ শতাংশ) মানুষ বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের ভেতর জীবন কাটায়; এদের বেশিরভাগই আফ্রিকা (৫৫ কোটি ৮০ লাখ) এবং দক্ষিণ এশিয়ার (৫৩ কোটি) নাগরিক- দুই অঞ্চল মিলিয়ে ৮৪.৩ শতাংশ।
এই ১৩০ কোটির মধ্যে ৬৪ কোটি ৪০ লাখই শিশু; অর্থ্যাৎ, ১৮ বছরের কম বয়সী।
দক্ষিণ এশিয়ায় তৃতীয় অবস্থানে বাংলাদেশ
০ থেকে ১-এর মধ্যে পয়েন্ট দিয়ে একটি সারি তৈরি করেছে এমপিআই; এ ক্ষেত্রে যে দেশে দারিদ্র্যের মাত্রা বেশি, সেটির পয়েন্ট বেশি।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের স্কোর ভারত (০.১২৩), নেপাল (০.১৪৮), ভুটান (০.১৭৫), পাকিস্তান (০.১৯৮) ও আফগানিস্তানের (০.২৭২) চেয়ে ভালো।
এ অঞ্চলে শুধু মালদ্বীপ (০.০০৩) ও শ্রীলংকা (০.০১১) বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে।