মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে যা বলেছেন ভুক্তভোগীরা
'চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার' এর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই পৃথক দুটি মামলা করেছেন দুজন ভিকটিম। মানব পাচার ও নির্যাতনের অভিযোগে এসব মামলা করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার (২ মে) উভয় মামলা দায়ের করা হয় মিরপুর থানায়।
মানবপাচারের অভিযোগে করা মামলায় বাদী এম রাকিব উল্লেখ করেন যে, বছর চারেক আগে ধানমন্ডি বয়েস স্কুল সংলগ্ন রাস্তার ফুটপাতে দুই বছরের শিশুকে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে শিশুটিকে উদ্ধার করে তিনি চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ারে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করান। শিশুটির দেখাশোনা ও চিকিৎসার জন্য মিল্টন তাঁর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নেন। প্রায়ই শিশুটিকে রাকিব সেখানে দেখতে যেতেন। সম্প্রতি মিল্টন তাঁকে জানান, আদালতের মাধ্যমে রাকিব চাইলে শিশুটিকে দত্তক নিতেও পারেন। "তবে কিছুদিন আগে হঠাৎ করে আমাকে আশ্রম থেকে ফোন করে শিশুটিকে দত্তক না নেওয়ার জন্য হুমকি দেওয়া হয়। পরে আমি জানতে পারি ওই শিশুকে কোথাও বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।"
সম্প্রতি মিল্টন সমাদ্দারকে নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে লেখালেখি শুরু হলে রাকিবের নজরে আসে এবং মিরপুর মডেল থানায় মানবপাচার প্রতিরোধ আইনে মামলা করেন। এতে মিল্টন সমাদ্দারের নাম উল্লেখ করে তিনি অজ্ঞাত আরও ৩-৪ জনকে আসামি করেছেন।
নির্যাতনের অভিযোগে অপর মামলাটি করেছেন রাজধানীর দারুস সালাম এলাকার বাসিন্দা মতিউর রহমান মল্লিক। মামলায় বাদী বলেছেন, তিনি ২০২১ সালের ৩ মার্চ মিরপুর-১ নম্বরের দক্ষিণ বিছিলের রাস্তায় একজন অন্ধ ব্যক্তি পড়ে থাকতে দেখেন। পরে তাকে উদ্ধার করে দারুস সালাম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে ওই ব্যক্তির চিকিৎসার জন্য মিল্টনের প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যান। পরের দিন তিনি জানতে পারেন ওই ব্যক্তিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তার সন্দেহ হলে তিনি ৪ মার্চ মিল্টনের প্রতিষ্ঠানে যান। এসময় মিল্টন, তার স্ত্রীসহ অজ্ঞাতনামা অনেকে মতিউরকে মারধর করে আটকে রাখেন। তিনি ঘটনার সময়ের দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করলে তা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। আর অন্ধ লোককে উদ্ধারের পর যে জিডি করেছিলেন সেটির কপিও কেড়ে নেওয়া হয়। পরে অনেক সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিয়ে তিনি সেদিন ছাড়া পান।
গতকাল বুধবার (১ মে) ডিবি পুলিশের অভিযানে মিল্টন সমাদ্দার আটক হলে আজ বৃহস্পতিবার তিনি মিরপুর থানায় মামলা করেন।
গ্রেপ্তারের পর আজ মিল্টন সমাদ্দারকে এসব মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সাতদিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
এদিন দুপুরে ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ জানান, রিমান্ডে নেওয়ার পর তার সব অপকর্ম তদন্ত করে বের করা হবে।