হাইকোর্টের রায় স্থগিত হলেও অব্যাহত থাকছে জাবি শিক্ষার্থীদের 'বাংলা ব্লকেড'
সরকারি চাকরিতে (৯ম থেকে ১৩ তম গ্রেড) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় ৪ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করলেও 'বাংলা ব্লকেড' চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের।
'এক দফা' দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত রাখা হবে বলে জানিয়েছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রশীদ জিতু।
এর আগে তিনি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেছিলেন, 'আমাদের দাবিটি গতকাল সংবাদ সম্মেলনেই পরিষ্কার করা হয়েছে, কাজেই আমাদের এক দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।'
আপিল বিভাগের শুনানি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, '২০১৮ সালে আমাদের আন্দোলন ছিল কোটা সংস্কারের আন্দোলন, এখনও আমরা সেটি বলছি।'
তিনি আরো বলেন, 'আমাদের দাবি সরকারি চাকরিতে সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাশ করে কোঠা পদ্ধতিকে সংস্কার করা। দাবিটি আমাদের নির্বাহী বিভাগের কাছে। তা সত্ত্বেও আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আপিল শুনানি যদি সম্পূর্ণভাবে আমাদের পক্ষে যায়, সেক্ষেত্রে আমরা পরবর্তীতে বিবেচনা করবো।'
এদিকে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে এবং কোটা ব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আজ (১০ জুলাই) ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
সকাল ১০:৩০ মিনিটে 'বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন'-এর ব্যানারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা 'এক দফা' দাবি আদায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। এই নিয়ে আজ অষ্টম দিনের মত ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এতে করে মহাসড়কের উভয় লেনে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছে যানজটে আটকে থাকা সাধারণ যাত্রীরা। তবে অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি পরিষেবার গাড়িগুলো শিক্ষার্থীদের অবরোধের আওতামুক্ত থাকবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনের সমন্বয়কদের ঘোষণা অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের আজকের অবরোধ কর্মসূচি সূর্যাস্ত পর্যন্ত অর্থাৎ সন্ধ্যা অবধি পালনের কথা রয়েছে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের 'এক দফা' দাবি, সরকারি চাকরিতে সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাশ করে কোঠা পদ্ধতিকে সংস্কার করা।
এর আগে শিক্ষার্থীরা সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হন। পরে সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মহাসড়কে নেমে এসে উভয় লেন অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
সরকারি চাকরিতে (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি) মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহাল রেখে হাইকোর্টের রায়ের ওপর চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।
হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুই শিক্ষার্থীর করা আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে আজ বুধবার (১০ জুলাই) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে গঠিত আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এ আদেশের ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র বহাল থাকছে।