এপোস্টিল কনভেনশনে যুক্ত হলো বাংলাদেশ, দেশে সত্যায়িত ডকুমেন্ট বিদেশে সত্যায়ন লাগবে না
বাংলাদেশ দ্য কনভেনশন অন অ্যাবোলিশিং দ্য রিকোয়ারমেন্ট অব লিগালাইজেশন অব ফরেন পাবলিক ডকুমেন্ট বা এপোস্টিল কনভেনশন-১৯৬১ তে যুক্ত হয়েছে। এতে দেশে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন করা ডকুমেন্ট আর অন্য দেশে পুনরায় সত্যায়ন করা লাগবে না। ফলে প্রতিবছর বিদেশগামী বাংলাদেশিদের আনুমানিক ৫০০-৬০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।
নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে সোমবার স্থানীয় সময় দুপুরে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশ এ কনভেনশনের পক্ষভুক্ত হয়। এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ দেশের পক্ষে 'ইনস্ট্রুমেন্ট অব অ্যাকসেশন' আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সেক্রেটারি জেনারেল ড. হাছানকে স্বাগত জানান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার বক্তব্যে বাংলাদেশের লাখ লাখ নাগরিকের জন্য এ চুক্তির প্রয়োজনীয়তা ও তাৎক্ষণিক সুবিধার কথা ব্যাখ্যা করেন।
তিনি বলেন, 'এর ফলে এখন থেকে বিদেশগামী ছাত্র-ছাত্রী, পেশাজীবী ও অভিবাসন প্রত্যাশীদের বিদেশে ভর্তি ও চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে যেসব পাবলিক ডকুমেন্ট সনাতন পদ্ধতিতে সত্যায়িত করতে হতো, তা দ্রুততর, সহজ ও সুলভভাবে করতে পারবে।'
এ কনভেনশনে যোগদান বাংলাদেশের জন্য যুগান্তকারী পদক্ষেপ এবং এতে দেশের শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, 'এর ফলে ই-এপিপি বা ইলেকট্রনিক এপোস্টিল প্রোগ্রাম পদ্ধতিতে সত্যায়ন করে ইলেকট্রনিক এপোস্টিল সার্টিফিকেট ইস্যু করা হবে, যার সত্যতা ও সঠিকতা সার্টিফিকেটে বিদ্যমান কিউআর কোড দিয়ে বিশ্বের যেকোনো জায়গা থেকে যাচাই করা যাবে। এতে বিদেশগামী ছাত্র-ছাত্রী এবং পেশাজীবীদের বিভিন্ন ধরনের হয়রানি ও ভোগান্তি সম্পূর্ণ লাঘব হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, 'নিজ দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ইস্যু করা এপোস্টিল সার্টিফিকেট ব্যবহার করলে বিদেশি দূতাবাস বা বিদেশি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা বিদেশি অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের সত্যায়নের জন্য শ্রম ও অর্থ ব্যয় করে তাদের দ্বারস্থ হতে হবে না। এতে প্রতিবছর বিদেশগামী বাংলাদেশিদের আনুমানিক ৫০০-৬০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।'
বর্তমানে বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ, চাকরির আবেদন, বিদেশে স্থায়ী হওয়া, বিদেশি নাগরিকদের সাথে বিবাহসহ নানা প্রয়োজনে বিদেশগামী ও বিদেশে অবস্থানরত নাগরিকদের বিভিন্ন দলিলাদি (যেমন- অ্যাকাডেমিক সার্টিফিকেট, জন্মনিবন্ধন সনদ, বৈবাহিক সার্টিফিকেট ইত্যাদি) একাধিক কর্তৃপক্ষের সত্যায়নের প্রয়োজন হয়। দেশের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সত্যায়নসহ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন শেষে সেবা প্রার্থীদের আবারও বিদেশি দূতাবাস, সংশ্লিষ্ট দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিদেশি বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সত্যায়ন করতে হয়, যা অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ, শ্রমসাধ্য ও ব্যয়বহুল।
অনুষ্ঠান শেষে নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্রসচিব পল হুজিস ড. হাছান মাহমুদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।