খাগড়াছড়িতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা
স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে খাগড়াছড়ি। ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে আবারো বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে খাগড়াছড়ির জনজীবন। এরমধ্যে বৃষ্টি না থামায় বাড়ছে জনমনের আশঙ্কা।
আজ বৃহস্পতিবার (২২ আগষ্ট) ভোর রাত থেকে জেলা জেলা সদরের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে পৌর বাস টার্মিনাল পৌরসভার গঞ্জপাড়া, অপর্ণা চৌধুরী পাড়া, রাজ্যমনি পাড়া, কালাডেবা, বটতলী, ফুটবিল, শান্তিনগর, মুসলিম পাড়া পুরোপুরি পানির নিচে। হঠাৎ এই বন্যায় আটকা পড়েছে বহু মানুষ। সেনাবাহিনী, স্বেচ্ছাসেবকসহ বিভিন্ন সংস্থা মাঠপর্যায়ে কাজ করছে।
গত দুই মাসে এই নিয়ে চার বার খাগড়াছড়ি প্লাবিত হয়েছে। এতে দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে জীবনযাত্রা। শহরের শান্তিনগর এলাকার বাসিন্দা প্রশান্ত দে বলেন, গতকাল(বুধবার) সকালে পানি নেমে যাওয়ার পর কাদা, আবর্জনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে ঘরে উঠেছিলাম। আজকে ভোরে আবার পানি উঠে ঘরের অনেক জিনিস নষ্ট হয়ে গেছে। স্মরণকালে এমন বন্যা দেখিনি।
জেলা সদর ছাড়াও দীঘিনালা, পানছড়ি, রামগড়ের অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। দীঘিনালার কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্রে পানি ঢুকেছে। চেঙ্গী, মাইনী ও ফেনী নদীতে বিপৎসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক মো: সহিদুজ্জামান জানান, খাগড়াছড়ি পৌরসভায় ১৮টিসহ পুরো জেলায় ৯৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রিতদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
টানা বর্ষণের কারণে জেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসের আশংকা দেখা দিয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাদদেশে বসবাসকারীদের নিরাপদে সরে যেতে বলা হচ্ছে। রামগড়ের জালিয়াপড়া এলাকায় পাহাড় ধসে পড়ায় খাগড়াছড়ির সাথে ঢাকার যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
খাগড়াছড়ি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির যু্ব প্রধান ইব্রাহিম খলিল বলেন, শহরের গঞ্জপাড়া ও উত্তর গঞ্জপাড়ায় অনেক পরিবার আটকা পড়েছে। বোট না থাকায় নিজেরা ভেলা বানিয়ে অনেককে উদ্ধার করেছি। তারপরও অনেকে আটকা পড়েছেন।
কেবল খাগড়াছড়ি সদরেই ৩ হাজারের মতো পরিবার আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। জেলা শহরে ১৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে বন্যার্তরা রয়েছেন।
সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় খাগড়াছড়ির সাথে দীঘিনালা এবং রাঙ্গামাটির লংগদু ও বাঘাইছড়ির সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। গত তিনদিন ধরে সাজেকে আটকা পড়া প্রায় ২৫০জন পর্যটক এখনো ফিরতে পারেননি।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিরিন আক্তার বলেন, সাজেক-দীঘিনালার সংযোগ সড়কের বেশ কয়েকটি পয়েন্ট ডুবে গেছে। পানি সরে গেলে পর্যটকরা ফিরতে পারবেন।