সাকিবকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়া হবে, জানালেন ক্রীড়া উপদেষ্টা
ভারত সফরে পুনে টেস্টের আগে সংবাদ সম্মেলনে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দেন সাকিব আল হাসান। টি-টোয়েন্টি অধ্যায়ের ইতি টেনে ফেলার কথা জানালেও ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলার ইচ্ছার কথা জানান তিনি। দেশে ফিরে খেলতে নিরাপত্তা নিশ্চয়তার কথা উল্লেখ করেন অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার। সেদিনই বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ জানান, সাকিবের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেবে না বিসিবি।
কদিন পরে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তিনি জানান, ফ্যাসিস্ট সরকারের সংসদ সদস্য হওয়ায় সাকিবের বিরুদ্ধে জনমনে তৈরি হওয়া ক্ষোভের বিপরীতে তার নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চাওয়ার ব্যাপারটি অবান্তর। ক্রীড়া উপদেষ্টার মতে, ক্রিকেটার সাকিবকে নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব হলেও জনগণের ক্ষোভ থাকলে সেই নিশ্চয়তা দেওয়া 'সম্ভব নয়'। যদিও কদিন পর সাকিবকে দেশের মাটিতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়ার কথা জানালেন আসিফ মাহমুদ।
৩ অক্টোবর পর্দা উঠেছে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের, প্রথম দিনই মাঠে নামে বাংলাদেশ। শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বসে দেশের মেয়েদের ম্যাচটি দেখেন আসিফ মাহমুদ। এরপর স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে সাকিবের নিরাপত্তার ব্যাপারে তিনি বলেন, 'দেখুন আমাদের একজন খেলোয়াড়কে অবশ্যই আমরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেবো। যেকোনো ধরনের অভিযোগ থাকলে সেটা তো আইনি বিষয়, সেটা ভিন্ন। সে বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে পারি না, আইন মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একটা স্পষ্টতা দিয়েছে।'
সাকিবের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে বলে জানান ক্রীড়া উপদেষ্টা। দেশের মাটিতে সাকিবের টেস্ট অধ্যায় শেষ হোক, সেই চাওয়া আসিফ মাহমুদেরও। তার ভাষায়, 'আমরা সাকিব আল হাসানের নিরাপত্তার কথা ইতোমধ্যে বলেছি এবং সেটা আমরা নিশ্চিত করবো। আমিও ব্যক্তিগতভাবে চাই এমন একজন খেলোয়াড়, দেশের জন্য যার এতো অর্জন রয়েছে, তিনি বাংলাদেশেই যেহেতু টেস্ট ক্যারিয়ার শেষ করতে চাচ্ছেন, ফেয়ারওয়েলটা পাক। এটা আমার আশা থাকবে।'
প্রথম ম্যাচ দেখার পর বিশ্বকাপে নারী দলকে নিয়ে আশাবাদী আসিফ মাহমুদ। নারী দল আর অবহেলিত থাকবে না জানিয়ে তিনি বলেন, 'নারী ক্রিকেট দল যে আর অবহেলিত থাকবে না, এখানে আমার উপস্থিতি দেখেই হয়তো আপনার বুঝতে পারবেন। যেহেতু নারী দল, তুলনামূলকভাবে তাদের অর্জন বেশি এবং আমরা আশা করছি এই বিশ্বকাপেও তারা একটা ভালো একটা অর্জন দেশের জন্য নিয়ে আসতে পারবে। সামনের দিনগুলোতেও তাদেরকে যথাযথভাবে যেন আমরা সেই সম্মানটা প্রদর্শন করতে পারি, এই অবহেলার অভিযোগ যেন না আসে, সেই জন্য আমরা কাজ করবো। আজ ম্যাচ দেখার পর বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের সফলতার ব্যাপারে আমি আশাবাদী।'
বিশ্বকাপ সংযুক্ত আরব আমিরাতে চলে গেলেও আসরটির আনুষ্ঠানিক আয়োজক বাংলাদেশই। আয়োজক হিসেবে পরিদর্শন করতেই মূলত সেখানে গেছেন বলে জানান আসিফ মাহমুদ। এই সফরে তিনি দুবাইয়ে আইসিসির একাডেমি মাঠ ঘুরে দেখাসহ বুঝতে চেয়েছেন ক্রিকেট অবকাঠামো। সেখান থেকে শিখে বাংলাদেশের ক্রিকেটে কাঠামো উন্নত করার কথা জানান তিনি।
ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, 'এই বিশ্বকাপটা বাংলাদেশে হওয়ার কথা ছিল, বিশেষ অবস্থার কারণে আমরা পারিনি। কিন্তু বাংলাদেশই আয়োজক আছে। যেহেতু আমরা আয়োজক, সেই জায়গা থেকে পরিদর্শন করা। একই সাথে আইসিসি একাডেমি মাঠ ঘুরে দেখেছি, এখানকার যে ক্রীড়া কাঠামো, সেটা বাংলাদেশে কীভাবে আমরা করতে পারি এবং বাংলাদেশের ক্রীড়া কাঠামো কীভাবে আরও ভালো করতে পারি এখান থেকে শিখে, সেই জন্য মূলত আসা।'