টুথব্রাশ বিক্রেতা থেকে বলিউড রাজত্ব করা কে এই একমাত্র বিলিয়নিয়ার?
বিশ্বজুড়ে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে ভারতের অন্যতম সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি বলিউড। নামকড়া সব তারকার পাশাপাশি উপহার দিয়ে যাচ্ছে নানা ব্লকবাস্টার সিনেমা।
এমনকি গতবছর বিশ্বব্যাপী ভারতীয় সিনেমা আয় করেছে ১৩,১৬১ কোটি রুপি। একইসাথে দেশের বাইরে আয় করেছে ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
ভারতীয় সিনেমাগুলোর এমন সাফল্যে অভিনেতা-অভিনেত্রী ও প্রয়োজকদের অর্থ-সম্পদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে অবাক করার মতো বিষয় হচ্ছে, তবুও বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে বিলিওনিয়ারের সংখ্যা মাত্র একজন।
বলিউডের সর্বোচ্চ ধনীর তালিকায় প্রথমে রয়েছে সিনেমা প্রযোজক রনি স্ক্রুওয়ালা। এক্ষেত্রে তিনি পেছনে ফেলেছেন শাহরুখ খান, করণ জোহর ও আদিত্য চোপড়ার মতো বড় বড় তারকাকে।
রনি স্ক্রুওয়ালার সম্পদের পরিমাণ ১.৫৫ বিলিয়ন ডলার। এক্ষেত্রে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভূষণ কুমার; যার সম্পদের পরিমাণ বিলিয়নের চেয়ে কম। আর প্রায় ৮৫০ বিলিয়ন ডলারের মালিকানা নিয়ে পরবর্তী অবস্থানে রয়েছেন শাহরুখ খান ও আদিত্য চোপড়া।
জুহি চাওলা ভারতের সবচেয়ে ধনী অভিনেত্রী। তার সম্পদের পরিমাণ ৫৫০ মিলিয়ন ডলার।
কেব্ল টেলিভিশনের জনক বলা যায় রনিকে। ১৯৮১ সালে একজন সাধারণ কেবল অপারেটর হিসাবে কাজ শুরু করেছিলেন রনি। তবে তারও আগে ১৯৮০ সালে তিনি 'লেজার ব্রাশেস' নামের একটি টুথব্রাশ কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। অল্প দিনের মধ্যেই এটি দেশের সবচেয়ে বড় দাঁতের ব্রাশ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান হয়ে ওঠে।
পরের বছর রনি একটি কেবল পরিষেবা প্রতিষ্ঠান তৈরি করেন। মুম্বই-এর বহুতলের বেসমেন্টে ভিডিও মেশিন বসানোর কাজ করত তার সংস্থা। নব্বইয়ের দশকে দূরদর্শন প্রযোজনা সংস্থা হিসাবে রনি ইউটিভি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তখন তার সম্বল ছিল ৩৭,৫০০ টাকা।
আস্তে আস্তে প্রতিষ্ঠানের প্রচার-প্রসার হয়। তৈরি হয় সিনেমা প্রযোজনা এবং পরিবেশনা সংস্থা 'ইউটিভি মোশন পিকচার্স'। অনেক জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সিনেমার পরিবেশক এই সংস্থা। 'রং দে বসন্তী', 'স্বদেশ', 'হায়দার', 'বারফি'-র মতো সিনেমা পরিবেশনার দায়িত্বে ছিল রনির সংস্থা।
২০১২ সালে ৩ হাজার ৭১২ কোটি টাকার বিনিময়ে ডিজ়নি রনির সংস্থাটি কিনে নেয়। নাম হয় ডিজ়নি ইউটিভি। তখন অবশ্য ২৩ শতাংশ শেয়ার ছিল রনির। ২০১৪ সালে তিনি বেরিয়ে আসেন প্রতিষ্ঠান থেকে।
২০২২ সালে বন্ধ হয়ে যায় প্রতিষ্ঠানটি। এখন রনি আপগার্ড কোম্পানির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারপার্সন। আরও নানা ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করেছেন তিনি। একটি ক্রীড়ামূলক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মালিক তিনি। আর একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান 'স্বদেশ ফাউন্ডেশন'ও কিনেছেন তিনি।
২০১৪ সালে আবার চলচ্চিত্র ব্যবসায় আসেন রনি। নাম হয় 'আরএসভিপি মুভিজ়'। সমালোচকদের প্রশংসাধন্য ছবি 'রাত অকেলি হ্যায়', 'মর্দ কো দার্দ নেহি হোতা'-র মতো ছবির প্রযোজক তারা। ভিকি কৌশল অভিনীত 'উরি: সার্জিক্যাল স্ট্রাইক' তৈরি হয়েছিল এই সংস্থার ব্যানারেই। বিশ্বজুড়ে ৩৫০ কোটি রুপিরও বেশি ব্যবসা করেছিল এই সিনেমা।
অনুবাদ: মোঃ রাফিজ খান