মিরাজ-জাকেরের দৃঢ়তার পর বৃষ্টির কল্যাণে চতুর্থ দিনে মিরপুর টেস্ট
পূর্বাভাসে বৃষ্টির সম্ভাবনা ছিল। বৃষ্টি হানা দেয় দুপুর দেড়টার দিকে, ১টা ৪০ মিনিটে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট পর খেলা শুরু হলেও এবার আলোক স্বল্পতায় খেলায় বাধা, যে বাধা কাটিয়ে আর খেলা মাঠে গড়ায়নি। দিনের খেলা ৪০ ওভার বাকি থাকতেই বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন আম্পায়াররা।
এরপরও অবশ্য খেলা চলতে পারতো। কিন্তু এর জন্য কেবল স্পিনার ব্যবহার করতে হতো দক্ষিণ আফ্রিকাকে। আলোক স্বল্পতার কারণে প্রোটিয়াদের এই নির্দেশনা দেওয়া আম্পায়ারদের পক্ষ থেকে। বৃষ্টির পর স্পিনার দিয়ে শুরু করলেও একটা পর্যায়ে গিয়ে তারা পেসার ব্যবহার করতে চাইলে খেলা চালিয়ে নেওয়ার উপায় ছিল না, খেলা আবার বন্ধ হয়ে যায়। এরপর কিছুক্ষণ পরপর মাঠে গিয়ে আলোর অবস্থা দেখেন আম্পায়াররা। অবস্থার উন্নতি না দেখে বিকাল ৪টার দিকে দিনের খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।
দুই দিনেই শেষ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা জাগা টেস্ট গড়ালো চতুর্থ দিনে। বৃষ্টি বাধা ও আলোক স্বল্পতা একটি কারণ, তবে বাংলাদেশের দুই ব্যাটসম্যান মেহেদী হাসান মিরাজ ও জাকের আলী অনিকের দৃঢ়তার কথা আগে উল্লেখ করতে হবে। ধ্বংস্তূপে দাঁড়িয়ে এ দুজন জুটি গড়ে তোলেন, বাংলাদেশকে বাঁচান ইনিংস হারের হাত থেকে। মিরাজ-জাকেরের জুটিতেই লিড নেওয়া বাংলাদেশ এখন প্রোটিয়াদের বড় লক্ষ্য দেওয়ার স্বপ্নে।
৭ উইকেটে ২৮৩ রান তুলে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ, ঘরের মাঠের দলটির লিড দাঁড়িয়েছে ৮১। কাল ব্যাটিং করে এটাকে ২০০ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন বাংলাদেশের স্পিন কোচ মুশতাক আহমেদ। দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলঅ পাকিস্তানের সাবেক এই লেগ স্পিনার জানান, যেকোনো অবস্থায় বিশ্বাস রাখতে হবে।
বিশ্বাস রাখার পথে মিরাজই বাংলাদেশের অন্যতম ভরসা। টুকটাক ব্যাটিং পারলেও বাকি তিনজনই বোলার। ক্যারিয়ারের নবম টেস্ট হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া মিরাজ অপরাজিত আছেন ৮৭ রানে। তাকে অনেকটা সময় সঙ্গ দেওয়া নাঈম হাসান অপরাজিত ১৬ রানে। অষ্টম উইকেটে এ দুজন ৩৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েছেন। তবে ম্যাচের চেহারা পাল্টেছে মিরাজ-জাকেরের জুটিতে।
৩ উইকেটে ১০১ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করা বাংলাদেশ আজ ১১ রানের মধ্যেই তিন উইকেট হারায়। একে একে ফিরে যান আগের দিন ভালো লড়াই করা মাহমুদুল হাসান জয়, মুশফিকুর রহিম ও লিটন কুমার দাস। খাদের কিনারে চলে যাওয়া দলের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন মিরাজ ও জাকের। সপ্তম উইকেটে ২৫৪ বলে ১৩৮ রানের জুটি গড়েন তারা। এটা দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের সেরা সপ্তম উইকেট জুটি, সব মিলিয়ে চতুর্থ।
জাকেরের বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। দক্ষিণ আফ্রিকার বাঁহাতি স্পিনার কেশব মহারাজের শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ১১১ বলে ৭টি চারে ৫৮ রান করেন অভিষিক্ত ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। এরপর নাঈমকে নিয়ে আরও কিছুটা পথ পাড়ি দেন মিরাজ। পরে বৃষ্টি ও আলোক স্বল্পতায় খেলা বন্ধ হয়ে যায়। বাংলাদেশের এই ইনিংসে ৪টি উইকেট নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার কাগিসো রাবাদা। ৩ উইকেট পান মহারাজ।