আজও সড়ক অবরোধ বেক্সিমকো ও হামিম গ্রুপের শ্রমিকদের
গাজীপুর মহানগরীর সারাবো এলাকায় বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকেরা এক মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে ৭ম দিনের মতো চক্রবর্তী এলাকায় চন্দ্রা–নবীনগর মহাসড়ক অবরোধ করে আজও বিক্ষোভ করছেন।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে সড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকরা।
অপরদিকে, জিরানী এলাকায় হামিম গ্রুপের দ্যাটস ইট নিটওয়্যার কারখানার শ্রমিকরাও আজ সকাল থেকে জিরানী এলাকায় চন্দ্রা–নবীনগর সড়ক অবরোধ করে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করছেন।
এর আগে, গেল বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনে নামেন বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকেরা। শুক্রবার বিরতি দিয়ে শনিবার থেকে টানা আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন তারা। আর এই লাগাতার সড়ক অবরোধে চরম বিপাকে পড়েছেন সড়কে চলাচলকারী সাধারণ মানুষ; একইসঙ্গে পণ্য পরিবহনও মারাত্বকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
ওই রুট ব্যবহারকারী যাত্রী ও চালকেরা ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েছেন। ব্যাটারি রিকশা করে যাতায়াত করছেন অনেকে। উত্তরবঙ্গের যানবাহন বিকল্প গাজীপুরের ঢাকা–টাঙ্গাইল মহাসড়ক ও ধামরাই–কালিয়াকৈর আঞ্চলিক সড়ক ব্যবহার করে ঢাকার সাথে সড়ক যোগাযোগ বজায় রেখেছে।
স্থানীয়রা জানান, বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে পোশাক ও সিরামিক কারখানায় ৪১,০০০ কর্মী রয়েছেন। ওই কারখানার শ্রমিকেরা গেল সপ্তাহখানেক ধরেই সড়ক অবরোধ করে অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবি জানাচ্ছেন। এক মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে বেক্সিমকোর শ্রমিকদের আন্দোলন টানা
অপরদিকে, হামিম গ্রুপের দ্যাটস ইট নিটওয়্যার কারখানার শ্রমিকরা জানান, গতকাল বুধবার সকাল ৬টার দিকে কারখানার সামনে বাস চাপায় তাদের কারখানার ৩ শ্রমিক আহত হন। এর প্রতিবাদে তারা গত দুদিন ধরে ফ্লাইওভার নির্মাণ ও কারখানার অব্যবস্থাপনা দূর করাসহ বিভিন্ন দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন।
প্রথমদিনে ১১টার দিকে সেনা সদস্যরা ও শিল্প পুলিশ এসে শ্রমিকদেরকে বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। কিন্তু এ কারখানার শ্রমিকরা আজও সড়কে নেমেছেন।
ঘটনাস্থলে গিয়ে সেনাসদস্য, শিল্প পুলিশ ও গাজীপুর মহানগর পুলিশ শ্রমিকদেরকে বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করছে।
শিল্প পুলিশ জানায়, গাজীপুর মহানগরীর কাশেমপুর থানাধীন সারোবো এলাকায় বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ভিতরে এসব কারখানার মালিক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শিল্প উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর সালমান এফ রহমানকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের ব্যাংক হিসাবও জব্দ করা হয়। এরপর থেকে প্রতিষ্ঠানটি শ্রমিকদের বেতন সঠিক সময়ে পরিশোধ করতে পারছে না। প্রতিমাসেই শ্রমিকরা আন্দোলন করে বেতন আদায় করছেন।
গত কয়েক মাসের মতো চলতি মাসেও অক্টোবরের বেতনের দাবিতে সড়কে নেমেছেন শ্রমিকরা।
এদিকে, শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার জন্য সরকার বেক্সিমকোকে ঋণ দিয়েছে। আগামী ২২ তারিখ তাদের বেতন দেওয়া হবে— এমন আশ্বাসেও শ্রমিকরা সড়ক ছাড়তে রাজি হননি।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের কাশিমপুর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, "সকাল থেকে শ্রমিকদের অবরোধের কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। আমরা শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি। শ্রমিকরা সড়ক থেকে চলে গেলে যান চলাচল শুরু হবে।"