ট্রাম্পের ‘হাশ মানি’ মামলার রায় ঘোষণা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত
নিউ ইয়র্কের একজন বিচারক নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের 'হাশ মানি' বা গোপন অর্থপ্রদান মামলার রায় ঘোষণা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছেন। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত ৩৪টি ব্যবসায়িক নথি জালিয়াতির অভিযোগে জুন মাসে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল।
ট্রাম্পের আইনজীবীরা এই মামলাটি খারিজের আবেদন করবেন বলে জানিয়েছেন। তবে প্রসিকিউটর অ্যালভিন ব্র্যাগের দাবি, ট্রাম্প তার আইনজীবীকে অর্থ প্রদানের মাধ্যমে আমেরিকান ভোটারদের প্রতারিত করেছেন।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) বিচারক হুয়ান মেরচান ঘোষণা দেন, ২৬ নভেম্বরের জন্য নির্ধারিত রায় ঘোষণার তারিখ অনির্দিষ্টকালের জন্য "স্থগিত করা" হলো।
বিচারক মেরচান ট্রাম্পের আইনজীবীদের ২ ডিসেম্বরের মধ্যে মামলা খারিজের আবেদন জমা দেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। প্রসিকিউটর ব্র্যাগের অফিস ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাল্টা-মোশন জমা দিতে পারবে। এরপর আর কোনো যুক্তি গ্রহণ করা হবে না বলে অনলাইনে প্রকাশিত আদালতের নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
ট্রাম্পের আইনজীবীরা প্রথমে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চেয়েছিলেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ের ওপর ভিত্তি করে প্রেসিডেন্টের আইনি সুরক্ষা নিয়ে একটি সিদ্ধান্ত চান। মেরচান জানিয়েছেন, উভয়পক্ষের আবেদন পর্যালোচনা করার পর তিনি এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন।
ব্র্যাগের মামলার মূল বিষয় ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার, যেটি ট্রাম্প তার আইনজীবী মাইকেল কোহেনকে দিয়েছিলেন। অভিযোগ অনুযায়ী, এই অর্থ ব্যবহার করে প্রাপ্তবয়স্ক চলচ্চিত্র অভিনেত্রী স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে চুপ করানো হয়েছিল, যাতে তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে একটি সম্পর্ক থাকার বিষয়টি প্রকাশ না করেন।
প্রসিকিউটরদের দাবি, এই অর্থপ্রদান ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রভাব ফেলেছিল। নির্বাচনে ট্রাম্প ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ১১টি ইনভয়েস, ১২টি ভাউচার এবং ১১টি চেকের জন্য অভিযোগ আনা হয়েছে, যা তার আইনজীবী মাইকেল কোহেনের নামে তৈরি করা হয়েছিল। এই নিয়ে মার্কিন ইতিহাসে প্রথমবার একজন সাবেক প্রেসিডেন্টকে ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
বিচারের রায় ঘোষণার পর ট্রাম্প জুনে বলেছিলেন, "এটি একটি ভুয়া, অপমানজনক বিচার। আসল রায় হবে ৫ নভেম্বর, জনগণের কাছে। আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব এবং জিতব।"
শেষ পর্যন্ত ট্রাম্প ৩১২ ইলেকটোরাল কলেজ ভোট, সাতটি "সুইং রাজ্য" এবং জনপ্রিয় ভোট জিতে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কামালা হ্যারিসকে পরাজিত করেন।
প্রসিকিউটররা মামলাটি খারিজ করতে অস্বীকার করেছেন, তবে তারা বিচারক মেরচানকে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত [২০২৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত] মামলার কোনো পরবর্তী পদক্ষেপ না নিতে অনুরোধ করেছেন।
ট্রাম্পের আইনজীবীরা দাবি করেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন মামলা চলতে থাকলে সেটি শাসনকাজে "অসাংবিধানিক প্রতিবন্ধকতা" সৃষ্টি করবে। তারা মামলাটি খারিজ করার জন্য আবেদন করেছেন।