অস্কার ও স্বর্ণ পামজয়ী পরিচালক ডেভিড লিঞ্চ মারা গেছেন
অস্কার ও স্বর্ণ পামজয়ী মার্কিন পরিচালক ডেভিড লিঞ্চ ৭৮ বছর বয়সে মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) তার পরিবার এক ফেসবুক পোস্টে লিঞ্চের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
তার পরিবার এক ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছে, "গভীর দুঃখের সঙ্গে আমরা, তার পরিবার শিল্পী ও মানুষ ডেভিড লিঞ্চের মৃত্যুর সংবাদ জানাচ্ছি। এখন পৃথিবীতে একটি বড় শূন্যতা তৈরি হয়েছে, কারণ তিনি আর আমাদের মধ্যে নেই। তবে, তিনি যেমন বলতেন, 'ডোনাটের দিকে তাকাও, গর্তের দিকে নয়।' আজ একটি সুন্দর দিন, সোনালি রোদ এবং নীল আকাশে পরিপূর্ণ।"
গত আগস্টে লিঞ্চ জানিয়েছিলেন, তার এমফিসেমা (শ্বাসকষ্ট) ধরা পড়েছে এবং নভেম্বরে শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যার কথা প্রকাশ করেন। তিনি বলেছিলেন, "আমি একটি রুমের মধ্যে হাঁটতেও পারি না। এটা মাথার চারপাশে একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ নিয়ে হাঁটার মতো।"
সূত্রের বরাতে ডেডলাইন তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানলে নিজের বাড়ি ছাড়ার পর লিঞ্চের শারীরিক অবনতি ঘটে।
লিঞ্চ আমেরিকান সিনেমায় একান্ত নিজস্ব একটি ধারা তৈরি করেছিলেন। শিল্পকলার ছাত্র হিসেবে যাত্রা শুরু করা লিঞ্চ পরীক্ষামূলক শর্ট ফিল্ম বানানো এবং পরে তার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা 'ইরেজারহেড'-এর মাধ্যমে কাল্ট সাফল্য অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি 'ব্লু ভেলভেট', 'ওয়াইল্ড অ্যাট হার্ট' এবং 'মুলহল্যান্ড ড্রাইভ'-এর মতো পুরস্কারজয়ী সিনেমা এবং 'টুইন পিকস'-এর মতো অনবদ্য টিভি শো নির্মাণ করেন।
তিনি ব্লু ভেলভেট, দ্য এলিফেন্ট ম্যান এবং মুলহল্যান্ড ড্রাইভ সিনেমার জন্য অস্কারে তিনবার সেরা পরিচালক হিসেবে মনোনীত হন। ২০১৯ সালে তাকে একটি সারা জীবনের কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ সম্মানজনক অস্কার প্রদান করা হয়। ১৯৯০ সালে ওয়াইল্ড অ্যাট হার্ট-এর জন্য কান চলচ্চিত্র উৎসবে তিনি পাম দ'র (স্বর্ণ পাম) জিতেছিলেন।
২০১৮ সালে গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লিঞ্চ বলেছিলেন, "আমি সিনেমা বানাতে পছন্দ করি। আমি কাজ করতে ভালোবাসি। আমি তেমন বাইরে যেতে পছন্দ করি না।"
২০২৪ সালে তিনি জানিয়েছিলেন, দীর্ঘদিনের সিগারেট সেবন করায় তিনি গুরুতর শ্বাসকষ্টের রোগ এমফিসেমা-তে আক্রান্ত হয়েছেন।
১৯৪৬ সালে মন্টানায় জন্ম নেওয়া লিঞ্চ ১৯৬০ এর দশকে আর্ট কলেজে ভর্তি হন এবং 'সিক্স ম্যান গেটিং সিক' নামে তার প্রথম পরীক্ষামূলক শর্ট ফিল্ম তৈরি করেন। এরপর ১৯৭১ সালে লস অ্যাঞ্জেলেসে চলে আসেন এবং এএফআই কনজারভেটরিতে সিনেমা নির্মাণ শেখা শুরু করেন। সেখানে তিনি তার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবি ইরেজারহেড-এর শ্যুটিং শুরু করেন।