মহাসড়কে মাতাল চালক শনাক্তে ‘অ্যালকোহল ডিটেক্টর’
মদ বা কোনো ধরনের নেশাজাতীয় দ্রব্য খেয়ে মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালানো চালকদের শনাক্ত করতে বিশেষ একটি ডিভাইস নিয়ে মহাসড়কে অভিযান শুরু করেছে হাইওয়ে পুলিশ।
১২ অক্টোবর থেকে ‘অ্যালকোহল ডিটেক্টর’ নামের ওই যন্ত্র দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ড ও মীরসরাইয়ের বিভিন্ন স্পট থেকে এ অভিযান শুরু করা হয়।
জানা যায়, সারাদেশের হাইওয়ে পুলিশের কাছে চীন থেকে আমদানিকৃত যন্ত্রগুলো তুলে দেওয়া হয়েছে। তারা এ নিয়ে দুরপাল্লার বাস-ট্রাক ও ভারী যানবাহনের চালকদের পরীক্ষা করবেন।
রোববার সকালে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বারো আউলিয়া ও মীরসরাইয়ের সোনাপাহাড় এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অভিযান চালায় হাইওয়ে পুলিশ।
বারো আউলিয়া হাইওয়ে থানার ওসি আবদুল আউয়াল এ প্রসঙ্গে ইউএনবিকে জানান, “অ্যালকোহল ডিটেক্টর দিয়ে মহাসড়কে অভিযানের খবর শুনে ইতোমধ্যে অনেক চালক সচেতন হয়েছেন। কয়েকজন চালক অ্যালকোহল বা মাদক সেবন করেন এমন বুঝতে পারলেও, প্রাথমিকভাবে আমরা তাদের নেশাগ্রস্ত হয়ে যানবাহন চালানোর বিষয়ে সর্তক করে ছেড়ে দিয়েছি।”
হাইওয়ে পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশে এই প্রথম ‘অ্যালকোহল ডিটেক্টর’ দিয়ে অভিযানে নেমেছে পুলিশ। চালকের মুখের বাতাস শুঁকে যন্ত্রটি ৪ সেকেন্ডের মধ্যে তিনি মদ্যপ কি না, তা শনাক্ত করতে পারে।
হাইওয়ে পুলিশের এক সদস্য জানান, ফলাফল ‘হ্যাঁ’ হলে সে ক্ষেত্রে ওই চালকের নাম, গাড়ির নম্বর, লাইসেন্স নম্বর ও পরীক্ষাকারী পুলিশ কর্মকর্তার নাম, ব্যাজ নম্বর ও দায়িত্বরত ইউনিটের নাম যন্ত্রটিতে লিখে দিলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওই চালক ও পুলিশ কর্মকর্তার সব তথ্যসহ একটি প্রিন্ট কপি বের হয়ে আসে।
এ কাগজ দিয়ে মোটরযান আইনের ১৪৪ ধারায় অভিযুক্ত চালকের বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে।
পুলিশ জানায়, অনেক মাদকসেবী চালক গাড়ি চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটান। তাই মাদকাসক্ত চালকদের চিহ্নিত করতে ‘অ্যালকোহল ডিটেক্টর’ আমদানি করা হয়েছে।
যন্ত্রটি দেখতে অনেকটা বড় মুঠোফোন সেটের মতো। সামনের দিকে সরু পাইপের মতো একটি অংশ রয়েছে। মাদক পরীক্ষার সময় চালককে যন্ত্রটির সামনের পাইপ মুখে দিয়ে ফুঁ দিতে হয়।
এরপর চার সেকেন্ডের মধ্যেই যন্ত্রের মনিটরে ভেসে ওঠে ফলাফল। চালক মদ্যপ হলে শতাংশসহ ‘ইয়েস’ লেখা ওঠে। আর মদ্যপ না হলে ওঠে, ‘নো’।
জোরারগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক সোহেল সরকার জানান, তারা মীরসরাইয়ে অভিযান শুরু করেছেন। প্রথম দিন মহাসড়কের সোনাপাহাড় এলাকায় বিভিন্ন যানবাহনের ২৫ চালককে পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। তবে তাদের মধ্যে কোনো মদ্যপ চালক পাওয়া যায়নি।