কাতারে নতুন শ্রমনীতি: বাতিল হল কাফালা
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে শ্রমনীতি সংস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ঢাকায় প্রাপ্ত আইএলও-এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১৬ অক্টোবর কাতারের মন্ত্রিসভায় সর্বসম্মতভাবে নতুন শ্রমনীতিটি নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়।
আগামী ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকেই এ নতুন শ্রম আইন কার্যকর হবে। ফলে বাংলাদেশিসহ নানা দেশের অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষায় এক নতুন সম্ভাবনা তৈরি হল।
এ আইন সংস্কার কার্যক্রমের আওতায় সাত দশকের পুরনো ‘কাফালা’ পদ্ধতির অবসান ঘটছে। ফলে অভিবাসী শ্রমিকরা পছন্দমতো চাকরি পরিবর্তনের স্বাধীনতা পাবেন। দেশে ফেরা বা বেড়াতে যেতে অনুমতির কড়াকড়ি কমবে। ন্যূনতম মজুরির বৈষম্যও অনেকটাই দূর হবে।
কাফালা বা স্পনসরশিপ ব্যবস্থাটি কাতারে শুরু হয়েছিল ১৯৫০ সালে। দেশটির অর্থনৈতিক বিকাশের ওই সময়ে প্রয়োজন অনুযায়ী দ্রুত শ্রমিক সরবরাহ এবং প্রয়োজন ফুরালে ফেরত পাঠানোর সুবিধা নিশ্চিত করতে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এতে অভিবাসী শ্রমিকদের চাকরি পরিবর্তনের জন্য নিয়োগকর্তার কাছ থেকে অনাপত্তিপত্র নেওয়া (এনওসি) বাধ্যতামূলক ছিল।
গালফ সহযোগিতা কাউন্সিল বা জিসিসি সদস্যভুক্ত দেশগুলোর পাশাপাশি জর্ডান ও লেবাননেও ব্যবস্থাটি কার্যকর রয়েছে।
কিন্তু এখন কাতারের মন্ত্রিসভায় নতুন ডিক্রির অনুমোদনের ফলে সামরিক বাহিনী ছাড়া অন্য কোনো কর্মস্থলের শ্রমিকদের চাকরি পরিবর্তন ও বহির্গমনের জন্য অনাপত্তিপত্র বাধ্যতামূলক রইল না।এছাড়া বৈষম্যহীন ন্যূনতম মজুরি কাঠামো প্রতিষ্ঠার জন্যও নতুন নীতিমালা হয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যে কাতারেই প্রথম এ ধরনের আইন কার্যকর হতে যাচ্ছে।
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-এর মহাপরিচালক গাই রাইডার কাতার সরকারের শ্রমনীতি সংস্কারের উদ্যোগে স্বাগত জানিয়ে এক বিবৃতিতে বলেন, “এসব পদক্ষেপ অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার যেমন নিশ্চিত করবে, তেমনি তাদের মাধ্যমে কাতারের সামগ্রিক উৎপাদনশীলতাও বাড়বে, অর্থনীতি সুসংহত হবে।”
আইএলও বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি টুওমো পোটিয়াইনেন বলেন, “কাতারে যে ৪ লাখ বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিক রয়েছেন, তাদের ৭৫ শতাংশই নির্মাণশিল্পে জড়িত। নতুন সংস্কারের কারণে তারা সরাসরি উপকৃত হবেন। এর ফলে বৈষম্যহীন মজুরি ও শ্রমঅধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।”