জামিন পেলেন সাংবাদিক রোজিনা
দণ্ডবিধি ও অফিশিয়াল সিক্রেক্টস অ্যাক্টের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলাম জামিন পেয়েছেন।
আজ রোববার রোজিনা ইসলামের জামিন আবেদন বিষয়ে শুনানি হয়। পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকা এবং পাসপোর্ট জমা দেওয়ার শর্তে তিনি জামিন পান।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) রোজিনা ইসলামের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
রোজিনা ইসলামের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী বলেন, "আদালত আজ মৌখিক আদেশ দিয়েছেন। আশা করি আমরা শীঘ্রই লিখিত আদেশ পেয়ে যাব। কারা কর্তৃপক্ষের আনুষ্ঠানিকতা নিয়ে কোনও সমস্যা তৈরি না হলে রোজিনা আজই কারাগার থেকে বেরিয়ে আসবেন"।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২০ মে) রোজিনা ইসলামের জামিন আবেদনের ওপর শুনানি শেষ হয়। জামিন আবেদনের শুনানি গ্রহণ করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বাকী বিল্লাহ।
ঘণ্টাব্যাপী শুনানিতে দুই পক্ষের আইনজীবীরা ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন। তবে আদালত তাৎক্ষণিকভাবে সেদিন কোন সিদ্ধান্ত দেননি।
উল্লেখ্য, রোজিনা ইসলাম গত সোমবার (১৭ মে) বিকাল ৩ টা ৩০ মিনিটে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন সচিবের সঙ্গে মিটিংয়ের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। সেখানে তাকে ছয় ঘন্টা একটি কক্ষে আটকে রাখা হয় এবং এই সময়ে তিনি অসুস্থ হয়ে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার পর তাকে পুলিশের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়ের করা অভিযোগে বলা হয়, তিনি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন কেনা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ সরকারি নথি নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু রোজিনা এই অভিযোগ অস্বীকার করেন।
রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে মামলা হয়। তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩৭৯ ও ৪১১ ধারায় এবং অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ৩ ও ৫ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
পরদিন মঙ্গলবার রোজিনাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে হাজির করে পুলিশ। অন্যদিকে রোজিনা ইসলামের আইনজীবীরা তার জামিন আবেদন জানান। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ওই দিন রোজিনার রিমান্ড আবেদন নাকচ করেন এবং জামিন আবেদনের ওপর অধিকতর শুনানির জন্য ২০ মে (বৃহস্পতিবার) দিন ধার্য করেন। এরপর আদালতের নির্দেশে রোজিনাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
১৮ মে তার শুনানির পর অন্য এক সাংবাদিকের করা ভিডিও রেকর্ডিংয়ে দেখা যায় রোজিনা বলছেন, 'স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিয়ে আমার করা রিপোর্টের জের ধরেই আমার সাথে এখন অন্যায় আচরণ করা হচ্ছে।'
অনুসন্ধানী সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম সরকারি দুর্নীতি নিয়ে করা প্রতিবেদনের জন্য পরিচিত। সাম্প্রতিক সময়ে স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতি উন্মোচনকারী বেশ কিছু প্রতিবেদন করেছেন তিনি।
রোজিনার করা সাম্প্রতিক প্রতিবেদনগুলোতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়োগে ঘুষ নেয়া, মহামারিকালে জরুরি চিকিৎসা সেবা সামগ্রী ক্রয়ে অনিয়ম, এয়ারপোর্টে বিদেশ থেকে সাহায্য হিসেবে আসা জরুরি চিকিৎসা সামগ্রী ১০ মাস ধরে আটকে রাখার মত বিষয়গুলো উঠে এসেছে।