ডেল্টার প্রকোপে হার্ড ইমিউনিটি অর্জনে ৮০% এর বেশি মানুষকে টিকার আওতায় আনতে হবে
ইনফেকশাস ডিজিজেস সোসাইটি অফ আমেরিকা (আইডিএসএ) জানিয়েছে, করোনার ডেল্টা ধরনের কারণে এখন ৮০ শতাংশের বেশি- খুব সম্ভবত, প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনতে না পারলে হার্ড ইমিউনিটি অর্জিত হবে না।
আগে হার্ড ইমিউনিটি অর্জনের জন্য আনুমানিক ৬৭ শতাংশ জনসংখ্যাকে টিকার আওতায় আনার প্রয়োজন ছিল।
৩ আগস্ট এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে আইডিএসএ জানিয়েছে, যত সংখ্যক মানুষকেই টিকার আওতায় আনা হোক না কেন, এখন সম্ভবত জনাকীর্ণ স্থানে এবং আবদ্ধ পাবলিক স্পেসে এন৯৫ মাস্ক পরার বিষয়টি বিবেচনা করার সময় এসেছে।
ওই ব্রিফিংয়ে বার্মিংহামের অ্যালাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিনের সহকারী অধ্যাপক রিকার্ডো ফ্রাঙ্কো বলেন, 'সমস্যা হলো, ডেল্টা ধরনের সংক্রমণ ক্ষমতা অনেক বেশি। এর ফলে হার্ড ইমিউনিটি অর্জনের জন্য অনেক বেশি সংখ্যক মানুষকে টিকার আওতায় আনতে হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'ডেল্টার জন্য এখন ৮০ শতাংশের বেশি, সম্ভবত ৯০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনা প্রয়োজন।'
একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর মধ্যে যদি নির্দিষ্ট অনুপাতে টিকা দেওয়া যায়, তাহলে ওই জনগোষ্ঠীতে আর সংক্রমণ হয় না। একেই হার্ড ইমিউনিটি বলে। হার্ড ইমিউনিটি অর্জনের প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে।
ইংরেজি হার্ড (herd) শব্দটি এসেছে ভেড়ার পাল থেকে। ইমিউনিটি মানে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। আগে ভেড়ার পালকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে টিকা দেওয়া হতো। মোট ভেড়ার মধ্যে ৮০ শতাংশ ভেড়াকে টিকা দিলে ওই ভেড়ার পালে আর সংক্রমণ ছড়াত না। সবগুলো ভেড়াকে টিকা না দিলেও এদের মধ্যে এক ধরনের সুরক্ষা বলয় সৃষ্টি হতো। এটাই হার্ড ইমিউনিটি।
অধ্যাপক ফ্রাঙ্কো বলেন, যেসব দেশে টিকা দেওয়ার হার বেশি, সেসব দেশের টিকা না নেওয়া ব্যক্তিরাও বেশ উপকৃত হচ্ছেন। অন্যদিকে টিকা দেওয়ার হার কম যেসব দেশে, সেখানে টিকা না নেওয়া ব্যক্তিরা তুলনামূলক কম উপকার পাচ্ছেন।
তিনি আরও জানান, হামের ক্ষেত্রে হার্ড ইমিউনিটি অর্জনের জন্য সবচেয়ে বেশি মানুষকে টিকার আওতায় আনতে হয়। হামের বেলায় ৯৫ শতাংশ জনগণকে টিকা দিতে পারলে তবেই ওই জনগোষ্ঠীর মধ্যে হার্ড ইমিউনিটি গড়ে ওঠে।