‘রেহানা মরিয়ম নূরে’র আন্ডাররেটেড অভিনেত্রীরা
সম্প্রতি কান চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নিয়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে বাংলাদেশি চলচ্চিত্র 'রেহানা মরিয়ম নূর'। তরুণ নির্মাতা আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদের এ চলচ্চিত্রে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন আজমেরী হক বাঁধন।
এরইমধ্যে চলচ্চিত্রটির প্রধান চরিত্রকে নিয়ে দেশে ও দেশের বাইরে নানা আলোচনা হয়েছে। তবে বাঁধন ছাড়াও এই চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন আরও কয়েকজন অভিনয়শিল্পী, যাদের বেশিরভাগই তরুণ। তাদের নিয়ে খুব একটা আলোচনা হয়নি।
চলুন, এমন কয়েকজনের সঙ্গে আমরা পরিচিত হই।
আফিয়া তাবাসসুম বর্ণ
'রেহানা মরিয়ম নূরে'র গল্প একটি মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষক রেহানাকে কেন্দ্র করে। এ চরিত্রে অভিনয় করেছেন বাঁধন। কিন্তু রেহানা যার জন্য প্রতিবাদী হয়ে ওঠে, যে মেয়েটি আরেক শিক্ষকের কাছে নিগ্রহের হলে এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ওঠে রেহানা, সেই মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন বর্ণ।
চরিত্রটি নিয়ে কথা হয় বর্ণের সঙ্গে। তিনি বলেন, 'আমি চলচ্চিত্রে মেডিক্যাল স্টুডেন্টের চরিত্রে অভিনয় করেছি। আমার এক বন্ধুর বিষয় নিয়ে কথা বলতে স্যারের রুমে যাই। কিন্তু স্যার তখন কথার ফাঁকে আমাকে এবিউজ করে। আমি সেটা মেনে নিতে পারি না। কাঁদতে কাঁদতে তার রুম থেকে বের হওয়ার সময় রেহানা ম্যাম (বাঁধন) দেখতে পান। তারপরই নানা রকম ঘটনার মধ্যে দিয়ে যায় আমার অভিনীত চরিত্রটি।'
তিনি জানান, চলচ্চিত্রে তার নাম অ্যানি। এরকম চরিত্রে অভিনয় করা তার জন্য আনন্দের। আরও বেশি আনন্দ, এটাই বর্ণের প্রথম চলচ্চিত্র। অবশ্য আগে থেকেই মডেলিং করেন। নামি-দামি ব্র্যান্ডের ফটোশুটের পাশাপাশি কয়েকটি টিভিসিও করেছেন। কিন্তু 'রেহানা' টিমের সঙ্গে কীভাবে যুক্ত হলেন, জানতে চাইলেন বর্ণ বলেন, 'চলচ্চিত্রের একজন সহকারী পরিচালকের মাধ্যমে তারা আমার ছবি পান। তারপর যোগাযোগ হয়। অডিশন দিতে হয়েছে। তারপর সবকিছু ফাইনাল হয়েছে।'
বর্ণ এখন পড়াশোনা করছেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসে। অভিনয়ে নিয়মিত হতে চান তিনি।
জোফরি লুসাই
"আমি খেলনা ছবি নামে প্রোডাকশন হাউসটার সঙ্গে কাজ করেছি একটা বিজ্ঞাপনে। খেলনা ছবি 'রেহানা'রই প্রোডাকশন হাউস। সেখান থেকে একদিন যোগাযোগ করা হয় আমার সঙ্গে। ছবি দিতে বলেন তারা। তারপর তো ছবি দিই। অডিশন দিই। এরপর আমাকে তারা জানান, ফাইনালি আমি কাজ করছি এই চলচ্চিত্রে," রেহানার সঙ্গে যুক্ত হওয়া প্রসঙ্গে এভাবেই বললেন জোফরি লুসাই।
শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'শুরুতে আমি জানতাম না আমাকে কোন ক্যারেক্টার প্লে করতে হবে। পরে আমাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারপর আমার ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে অভিনয়ের জায়গাটা। আমি সেই স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করেছি। আমি একজন মেডিকেল স্টুডেন্টের চরিত্রে অভিনয় করেছি। এটা আমার জন্য দারুণ অভিজ্ঞতা।'
লুসাইও পড়াশোনা করছেন ইউনির্ভাসিটি অব লিবারেল আর্টসে। বাবার চাকরিসূত্রে তার বেড়ে ওঠা পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায়।
আফিয়া জাহিন জাইমা
আফিয়া জাহিন জাইমা অভিনয় করেছে রেহানার মেয়ের চরিত্রে। যখন শুটিং চলে, তখন তার বয়স মাত্র ৬ বছর। 'রেহানা মরিয়ম নূর' চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত হওয়া নিয়ে কথা বলেন তার মা শামসিয়া নুর মৌ।
তিনি বলেন, 'আমাদের তখন বাসা ছিল খিলগাঁওয়ে। সেখানকার চৌধুরী পাড়া মাঠে প্রতিদিন বিকেলে গৃহকর্মীর সঙ্গে খেলতে যেত আমার মেয়ে। সেখানেই ওই ছবির একজন সহকারী পরিচালক আমার মেয়েকে দেখেন। তারপর তারা যোগাযোগ করেন। একদিন তাদের অফিসে যেতে বলেন। আমরা যাওয়ার পর আমার মেয়েকে একটা সংলাপ বলতে বলেন। সেটা ঠিকঠাক বলে আমার মেয়ে। তারপর বেশ কয়েকটি ধাপ পার হওয়ার পর তারা ওকে চূড়ান্ত করেন।'
চরিত্রতে অভিনয় করা জাইমার জন্য কঠিন ছিল কি না, জানতে চাইলে তার মা বলেন, 'ওকে যেভাবে পরিচালক অভিনয় করতে বলেছেন, সেভাবেই করেছে। কঠিন বা সহজ- ওটা ও বোঝেই নাই। ছয় বছরের বাচ্চা আর কতটুকুই বুঝবে?'
জাইমার এটা ছিল প্রথম অভিনয়। সেও বেশ উপভোগ করেছে বলে জানান তার মা।