ব্যাংক লেনদেনের সময় পেরোনোর পর ভিআইপি গ্রাহককে ১৯ কোটি টাকা দেওয়া হয়: ইউনিয়ন ব্যাংক
ব্যাংক লেনদেনের সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর একজন ভিআইপি গ্রাহককে ১৯ কোটি টাকা দেওয়ার কথা জানিয়েছে ইউনিয়ন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। ব্যাংকের ভল্ট হিসাবে ১৯ কোটি টাকার গরমিলের ব্যাখ্যা হিসেবে বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকদের এ কথা জানান ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) হাসান ইকবাল।
সংবাদ সম্মেলনে হাসান ইকবাল বলেন, "বিকালে ব্যাংকের সময় শেষ হওয়ার পর একজন ভিআইপি গ্রাহককে টাকাগুলো দেওয়া হয়েছে।"
বিভিন্ন অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে ইউনিয়ন ব্যাংকের ১৯ কোটি টাকা উধাও হওয়ার ঘটনা প্রকাশের পর এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
তিনি আরও বলেন, "ব্যাংকের নীতিমালা লঙ্ঘন হলেও এমন ঘটনা নতুন নয়।" গ্রাহক-ব্যাংক সম্পর্কের খাতিরে এ ধরনের লেনদেন হয়ে থাকে বলে জানান তিনি।
এ ঘটনায় ইউনিয়ন ব্যাংকের গুলশান শাখায় কর্মরত তিন কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
ঘটনার অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি গঠন করার কথাও জানান ওই কর্মকর্তা। এছাড়া, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শক দলের উপস্থিতিতেই ১৯ কোটি টাকার হিসাব সমন্বয় করার কথাও জানান তিনি।
গত সােমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা ওই শাখা পরিদর্শনে গিয়ে ভল্ট খুলে টাকা গুনে কাগজপত্রের সঙ্গে বাস্তবে বড় ধরনের গরমিল পান।
শাখাটির কাগজপত্রে দেখানাে হয়েছে, ভল্টে ৩১ কোটি টাকা রয়েছে । কিন্তু পরিদর্শক দল গুনে পেয়েছেন ১২ কোটি টাকা। বাকি ১৯ কোটি টাকার ঘাটতি সম্পর্কে শাখাটির কর্মকর্তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শক দলকে কোনাে জবাব দিতে পারেননি।
এর আগে, ইউনিয়ন ব্যাংকের কোম্পানি সেক্রেটারি আলী হোসেইন ভূঁইয়া দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "ইউনিয়ন ব্যাংকের ভল্টের টাকার গরমিলের কোনো ঘটনা ঘটেনি।" তবে প্রতিষ্ঠানটিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শনের বিষয়েও তিনি কোনো কথা বলেননি।
ব্যাংকের ভল্ট হচ্ছে জমাকৃত টাকা রাখার নিরাপদ স্থান। নিয়ম অনুযায়ী, ভল্টের টাকার গরমিল থাকলে তা আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীকে জানাতে হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত ব্যাংকটি আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর কাছে এ ধরনের কোনাে অভিযােগ দায়ের করেনি বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "প্রতিবছরই আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে তফসিলি ব্যাংকগুলোর বড় বড় শাখাগুলোতে পরিদর্শন করা হয়ে থাকে। তবে ইউনিয়ন ব্যাংকের বিষয়টা আমি এখনও জানি না। তবে এমন কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে রুলস এবং রেগুলেটরি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
উল্লেখ্য, বিভিন্ন সংকটে থাকা ব্যাংকটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের আমানতের ওপর ভর করে চলছে। গত বছর শেষে ব্যাংকের আমানত ছিল ১৭ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। এর মধ্যে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের আমানত রয়েছে ৪ হাজার ১২৭ কোটি টাকা।