জি-২০: ঐতিহাসিক কর্পোরেট ট্যাক্স চুক্তিতে সম্মত হয়েছেন বিশ্ব নেতারা
ইতালির রোমে শনিবার (৩০ অক্টোবর) বিশ্বের বড় অর্থনৈতিক দেশগুলোর জোট জি-২০ এর ১৬তম সম্মেলন শুরু হয়েছে। দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তন ও করোনা মহামারি মোকাবেলার পাশাপাশি বিশ্বের বড় ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর কর নির্ধারণের বিষয়টিও উঠে এসেছে।
জি-২০ জোটের নেতারা বিশ্বের বড় কর্পোরেশন বা বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর লাভের উপর ১৫ শতাংশ কর নির্ধারণে সম্মত হয়েছেন। মূলত 'লো ট্যাক্স জুরিসডিকশন' বা স্বল্প করের এখতিয়ারে যেন প্রতিষ্ঠানগুলো কর ফাঁকি দিতে না পারে, সে উদ্দেশ্যেই এমন চুক্তিতে পৌঁছেছেন তারা।
করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর বিগত দু'বছরের মাঝে এটিই বিশ্ব নেতাদের প্রথম ব্যক্তিগত সম্মেলন, যেখনে তারা পরস্পরের মুখোমুখি হয়েছেন।
জি-২০ জোট ১৯টি দেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমন্বয়ে গঠিত বিশ্বের ধনী এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর একটি সংগঠন। তবে, গতকাল শুরু হওয়া ১৬তম রোম সম্মেলনে চীনের শি জিনপিং এবং রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিন সরাসরি উপস্থিত ছিলেন না; তারা ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে সম্মেলনে সংযুক্ত হয়েছিলেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুসারে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত এই কর চুক্তিটি আজ (৩১ অক্টোবর) আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে এবং এটি কার্যকর হবে ২০২৩ সালের মধ্যে।
মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি জ্যানেট ইয়েলেন বলেন, ঐতিহাসিক চুক্তিটি বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি 'গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত' এবং এই চুক্তির মাধ্যমে কর্পোরেট ট্যাক্সেশনে লোকসানের অবসান ঘটবে।
টুইটারে তিনি লিখেছেন, মার্কিন কোম্পানিগুলোকে আরও বেশি কর দিতে হলেও এই চুক্তির মাধ্যমে ব্যবসায়ী এবং কর্মীরা উপকৃত হবেন।
আগামীকাল (১ নভেম্বর) গ্লাসগোতে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক বহুল প্রত্যাশিত কপ-২৬ সম্মেলন শুরুর আগে জি-২০ নেতারা এক হয়েছেন রোম সম্মেলনের মাধ্যমে।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি একসঙ্গে কাজ করার বার্তা দিয়ে শুরু করেন দুই দিনব্যাপী জি-২০'র এই সম্মেলন।
বিশ্ব নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, "একা পথ চলা কোনো বিকল্প হতে পারেনা। আমাদের মাঝে মতভেদগুলো কাটিয়ে উঠতে যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে"।
এছাড়া, জলবায়ু বিষয়ক আলোচনাও গুরুত্ব পাচ্ছে চলমান এই সম্মেলনে। কার্বন নিঃসরণ কমাতে জরুরী পদক্ষেপ না নেওয়া হলে ভবিষ্যতে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে এক ভয়ঙ্কর বিপর্যয়; ক্রমাগত এমন সতর্কবার্তাই দিয়ে যাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
সেইসঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্যের নেতারা পৃথকভাবে ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম নিয়ে 'গুরুতর এবং ক্রমবর্ধমান উদ্বেগ' প্রকাশ করেছেন সম্মেলনে। উল্লেখ্য, ইরান জি-২০ জোটের সদস্য নয়।
যৌথ এক বিবৃতিতে দেশগুলো জানিয়েছে, ইরান যদি তার পারমাণবিক অগ্রগতি অব্যাহত রাখে, তবে তা ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তিতে ফিরে আসার সম্ভাবনা এবং অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সম্ভাবনাকে বিপন্ন করে তুলবে।
তারা ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে 'বিপদ এড়াতে পথ পরিবর্তনের' আহ্বান জানিয়েছেন।
- সূত্র- বিবিসি