মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, কক্সবাজারে অনলাইন জুয়ার মচ্ছব
অনলাইন জুয়া প্ল্যাটফর্ম ওয়ানএক্সবেটবিডি ডটকমের ( 1xbetbd.com) সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে শনিবার (১৩ নভেম্বর) দেশের তিন জেলা থেকে নয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
রোববার এক ব্রিফিংয়ে সিআইডি কর্মকর্তারা জানান, প্ল্যাটফর্মটি রাশিয়া থেকে পরিচালিত হচ্ছে এবং গ্রেপ্তার হওয়ার বাংলাদেশিরা সম্ভবত ওই প্ল্যাটফর্মের কার্যক্রম পরিচালনার কাজে জড়িত ছিল।
গ্রেপ্তারকৃতরা জানিয়েছেন, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা ও কক্সবাজারে অনলাইন জুয়ার প্রচলন বেশি। দেড় লাখের বেশি ব্যবহারকারী ১এক্সবেটবিডি ডটকম ও মোস্টবেটবিডি ডটকমসহ তিনটি অনলাইন জুয়া প্ল্যাটফর্মের সাথে যুক্ত বলে জানিয়েছেন সিআইডির তদন্তকারীরা।
সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক কামরুল আহসান বলেন, 'তদন্তে আমরা দেখেছি বাংলাদেশে এই অনলাইন জুয়া প্ল্যাটফর্মের কার্যক্রম ও অর্থ লেনদেনের সাথে ৭০ জনেরও বেশি লোক জড়িত।'
বিশ্বকাপ, ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল), বিগ ব্যাশ ও ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের মতো আন্তর্জাতিক স্পোর্ট টুর্নামেন্টগুলো চলাকালে অনলাইনে জুয়া খেলা বেড়ে যায়। এই জুয়ার প্ল্যাটফর্মগুলোতে প্রতিদিন গড়ে ৩ কোটি থেকে ৫ কোটি টাকা লেনদেন হচ্ছে বলে জানান সিআইডি কর্মকর্তা।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—নাজমুল হক, স্বপন মাহমুদ, আসলাম উদ্দিন, মুরশিদ আলম লিপু, শিশির মোল্লা, মাহফুজুর রহমান নবাব, নবাবের স্ত্রী মনিরা আক্তার, সাদিক ও মাসুদ খান।
সিআইডি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এদের মধ্যে স্বপন, মুরশিদ ও মাহফুজুর মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) 'নগদ'-এর বিক্রয় প্রতিনিধি। এছাড়াও নগদের একজন সেলস ম্যানেজার আত্মগোপনে রয়েছেন বলে জানিয়েছে সিআইডি।
এই নয়জনকে শনিবার মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা ও কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কামরুল আহসান বলেন, অনলাইনে জুয়া খেলার জন্য এমএফএসগুলোর, বিশেষ করে নগদের অপব্যবহার করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, 'আমরা সন্দেহ করছি, এমএফস কর্মকর্তারা খুব ভালো করেই জানেন যে তাদের প্ল্যাটফর্মগুলো অনলাইন জুয়ার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।'
তিনি বলেন, যথাযথ যাচাই-বাছাই ও ব্যাকগ্রাউন্ড খতিয়ে না দেখেই এমএফএসের এর বিক্রয় প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। লেনদেনের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য বিক্রয় প্রতিনিধিদের ওপর প্রায়ই চাপ দেওয়া হয়, যার কারণে তারা অনলাইন জুয়ার অর্থ লেনদেনে জড়িত হচ্ছেন।
কামরুল বলেন, ব্যবসায়িক সিমগুলো কেবল বিক্রয় প্রতিনিধি ও ব্যবস্থাপকদের জন্য বরাদ্দ থাকলেও তারা এসব সিম বিভিন্ন জেলায় অন্যদের কাছে বিক্রি করছিলেন এবং সেসব সিম ব্যবহার করে অবৈধ লেনদেন করা হচ্ছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলো এই নিয়ম লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তেমন আগ্রহী নয়।