ইন্ডিপেন্ডেন্স কাপের চ্যাম্পিয়ন সৌম্যদের মধ্যাঞ্চল
এবারের বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ (বিসিএল) ওয়ালটন মধ্যাঞ্চলময় হয়ে থাকলো। লঙ্গার ভার্সন কি ওয়ানডে; সবখানেই তাদের জয়জয়কার। চারদিনের টুর্নামেন্টের শিরোপা জেতা মধ্যাঞ্চল ইন্ডিপেন্ডেন্স কাপ নামের বিসিএল ওয়ানডের টুর্নামেন্টেও শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জিতে নিয়েছে। সাকিব আল হাসানকে ছাড়াই বিসিবি দক্ষিণাঞ্চলকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে দলটি।
শনিবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে বিসিবি দক্ষিণাঞ্চলকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে সৌম্য সরকার, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মোহাম্মদ মিঠুনদের দল মধ্যাঞ্চল। দক্ষিণাঞ্চলের দেওয়া ছোট লক্ষ্য ৪৫ বল হাতে রেখেই পেরিয়ে যায় তারা।
টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামা দক্ষিণাঞ্চল বড় সংগ্রহ গড়তে পারেনি। মোসাদ্দেক হোসেন, নাজমুল ইসলাম অপু, সৌম্য সরকার, হাসান মুরাদ, মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীদের বোলিং তোপের মুখে ৪৮.৫ ওভারে ১৬৩ রানে অলআউট হয় দক্ষিণাঞ্চল। জবাবে ওপেনার মিজানুর রহমানের পর ম্যাচ ও সিরিজ সেরার পুরস্কার জেতা মোসাদ্দেক ও আল-আমিন জুনিয়রের ব্যাটে ৪২.৩ ওভারে সহজ জয় তুলে নেয় মধ্যাঞ্চল।
জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা ভালোই হয় মধ্যাঞ্চলের। উদ্বোধনী জুটিতে ৬৫ রান যোগ করেন দুই ওপেনার মিজানুর রহমান ও সৌম্য সরকার। ২১ রান করা সৌম্যর বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। বাঁহাতি এই ওপেনারের বিদায়ে এলোমেলো হয়ে পড়ে মধ্যাঞ্চলের ইনিংস।
মাত্র ১১ রানের মধ্যে ফিরে যান আব্দুল মজিদ, মোহাম্মদ মিঠুন ও মিজানুর রহমান। ফেরার আগে ৫৩ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৯ রান করেন মিজানুর। হঠাৎ দিক হারানোর দলের হাল ধরেন মোসাদ্দেক ও আল-আমিন জুনিয়র। এই দুজন দলকে আর চাপ বুঝতে দেননি। মধ্যাঞ্চলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন তারা।
দলের অবস্থা বিবেচনা করে ব্যাট চালানো অধিনায়ক মোসাদ্দেক একটু বেশিই ধীর গতিতে ব্যাটিং করেন। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ৮৫ বলে ২টি চারে ৩৩ রানে অপরাজিত থাকেন। ৬৯ বলে ৬টি চারে ৫৩ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন আল-আমিন জুনিয়র। দক্ষিণাঞ্চলের স্পিনার নাসুম আহমেদ ৩টি ও শেখ মেহেদি হাসান একটি উইকেট নেন।
এর আগে ব্যাটিং করা দক্ষিণাঞ্চলের শুরুটাও খারাপ ছিল না। উদ্বোধনী জুটিতে ৫১ রান করেন দুই ওপেনার পিনাক ঘোষ ও এনামুল হক বিজয়। ৩৪ বলে ২০ রান করে থামেন বিজয়। এরপর বিদায় নেন ৪৭ বলে ২টি চার ও একটি ছক্কায় ৩৫ রান করা পিনাক।
এরপর দক্ষিণাঞ্চলের মাত্র দুজন ব্যাটসম্যান রান করতে পেরেছেন। অমিত হাসান ২৯ ও নাহিদুল ইসলাম ৩১ রান করেন। এ ছাড়া অধিনায়ক জাকির হাসান ১৪ ও কামরুল ইসলাম রাব্বি ১২ রান করেন। দলটির কোনো ব্যাটসম্যানই ওয়ানডে মেজাজে ব্যাট চালাতে পারেননি, সবাই খেলেছেন টেস্ট মেজাজে। মধ্যাঞ্চলের মোসাদ্দেক হোসেন, নাজমুল ইসলাম অপু, সৌম্য সরকার, হাসান মুরাদ ও মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী ২টি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বিসিবি দক্ষিণাঞ্চল: ৪৮.৫ ওভারে ১৬৩ (পিনাক ৩৫, বিজয় ২০, অমিত ২৯, নাহিদুল ৩১, জাকির ১৪; মোসাদ্দেক ২/৪৫, নাজমুল ২/২৮, সৌম্য ২/১৯, মুরাদ ২/২৯, মৃত্যুঞ্জয় ২/২৬)।
ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল: ৪২.৩ ওভারে ১৭৪/৪ (মিজানুল ৩৯, সৌম্য ২১, মোসাদ্দেক ৩৩*, আল-আমিন ৫৩*; নাসুম ৩/৩২, মেহেদি ১/৩২)।
ফল: ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা: মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত (মধ্যাঞ্চল)
টুর্নামেন্ট সেরা: মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত (মধ্যাঞ্চল)
টুর্নামেন্ট: মধ্যাঞ্চল চ্যাম্পিয়ন