গাঁজা দিয়ে হেরোইন, ইয়াবা, ফেনসিডিল ঠেকানো গেলে আমি এর পক্ষে: এনবিআর চেয়ারম্যান
কেবল করহার আর দাম বাড়িয়ে তামাকজাত পণ্যের নিয়ন্ত্রণ কিংবা জনস্বাস্থ্যের ওপর বিশেষ 'ইমপ্যাক্ট' হয় না বলে মনে করছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মোঃ রহমাতুল মুনিম। তিনি মনে করেন, এজন্য উচ্চবিত্ত তো নয়ই, নিম্নবিত্তের মানুষও নেশা ছাড়বে না, বরং সন্তানের পড়ালেখার খরচ কেটে ওই টাকা নেশায় যাবে কিংবা তাদের স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পরিমাণ কমে যাবে।
বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় রাজস্ব ভবনে প্রাক বাজেট আলোচনায় তামাক নিয়ন্ত্রণে কর কিংবা দাম বাড়িয়ে দেওয়ার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এসব কথা বলেন।
এনবিআর আয়োজিত ওই আলোচনা সভায় অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্সের (এটিএমএ) প্রতিনিধিরা তামাক নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে তামাকজাত পণ্যের উপর ব্যাপকভাবে কর ও দাম বাড়ানোর দাবি জানান।
গত কয়েক বছর ধরেই তামাকবিরোধী সংগঠনগুলো তামাক ও নেশাদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে তামাকের দাম বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছে। এনবিআরও বছর বছর তামাকের উপর বাড়তি কর আরোপের মাধ্যমে তামাকের দাম বাড়িয়েই যাচ্ছে।
এনবিআর চেয়ারম্যান তামাকবিরোধী এসব সংগঠনের উদ্দেশ্যে বলেন, "আপনারা তামাকের দাম বাড়াতে বললে তামাক কোম্পানিগুলো খুশি হয়, আমরা খুশি হই।
কিন্তু দাম বাড়িয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ করা যায়- আপনাদের (তামাক বিরোধী জোট) এমন ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। দাম বাড়িয়ে ফেনসিডিল, হেরোইনের দিকে ঠেলে দিতে চাই না।"
মাত্রাতিরিক্ত দাম বাড়িয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণের কারণে অন্যান্য ক্ষতিকর নেশা আরো বাড়ছে কিনা, তা সম্পর্কে জানার অনুরোধ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, "যখন গাঁজা সুলভ ছিল, তখন হেরোইনসহ অন্যান্য মারাত্মক ক্ষতিকর নেশা এবং মানুষ হত্যার মতো অপরাধ কেমন ছিল, আর বর্তমানে সে পরিস্থিতি কেমন দাঁড়িয়েছে তা স্টাডি করা দরকার।"
তিনি বলেন, "আমি গাঁজার পক্ষে নই। কিন্তু গাঁজা দিয়ে হেরোইন, ইয়াবা, ফেনসিডিল ঠেকানো গেলে আমি গাঁজার পক্ষে।"
আলোচনায় এটিএমএ'র পক্ষে প্রস্তাব তুলে ধরেন সদস্য মনির হোসেন লিটন এবং সহ-আহ্বায়ক নাদিরা কিরণ।
এ সময় এটিএমএ'র পক্ষ থেকে বলা হয়, সরকার তামাক খাত থেকে যে পরিমাণ রাজস্ব আদায় করছে, এর স্বাস্থ্যগত ক্ষতি তার চেয়েও বেশি।
আলোচনা সভায় এনবিআরের সিনিয়র কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।