রুশ বাহিনীর সহযোগী মুসলিম চেচেন যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে বুলেটে শূকরের চর্বি ব্যবহার করছে ইউক্রেনীয়রা
ইউক্রেনের ন্যাশনাল গার্ড তাদের টুইটার অ্যাকাউন্টে সম্প্রতি একটি বিতর্কিত ভিডিও শেয়ার করেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ইউক্রেন আগ্রাসনে রুশ সেনাদের পক্ষ নেওয়া মুসলিম চেচেন যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য বুলেটে শূকরের চর্বির প্রলেপ দিচ্ছে এক আজভ যোদ্ধা। আল জাজিরার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য।
আজভ বাহিনী অতি ডানপন্থী স্বেচ্ছাসেবক পদাতিক সামরিক দল, যাদেরকে প্রায়ই 'নব্য-নাৎসি' হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। চরম জাতীয়তাবাদী অস্ত্রধারী এই বাহিনী নাৎসিবাদকে সমর্থনের পাশাপাশি 'হোয়াইট সুপ্রিমেসি' বা শ্বেতাঙ্গ আধিপত্য বিস্তারের মতাদর্শকেও সমর্থনের জন্য অভিযুক্ত। ২০১৪ সালে পূর্বে ইউক্রেনে রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে দেশটির সামরিক বাহিনীর সঙ্গে প্রথমবারের মতো যুদ্ধে অংশ নেয় চরমপন্থী এই বাহিনী। এরপর থেকেই তারা ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে নিয়মিত সশস্ত্র সংঘাতে সহযোগিতা করে আসছে।
ন্যাশনাল গার্ডের শেয়ার করা ওই ভিডিওটিতে দেখা যায়, একজন ব্যক্তি (আজভ যোদ্ধা) চেচেন যোদ্ধাদের 'মুসলিম ভাই' সম্বোধন করে বলছেন, "আমাদের দেশে আপনারা স্বর্গে যাবেন না। আপনাদেরকে স্বর্গে যেতে দেওয়া হবে না। দয়া করে বাড়ি ফিরে যান। এখানে আপনি সমস্যায় পড়বেন।"
ইউক্রেনের সরকারি সামরিক বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হলেও, আজভ যোদ্ধারা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসিদের ব্যবহৃত 'উলফস্যাঞ্জেল' চিহ্নের ব্যবহার এখনও অব্যাহত রেখেছে বলে জানা যায়।
রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের দাবি, ইউক্রেনের সরকারি বাহিনীতে আজভ যোদ্ধাদের মতো এমন গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তির কারণেই তিনি সেখানে 'বিশেষ সামরিক অভিযান' চালিয়েছেন। ইউক্রেনকে নাৎসিমুক্ত করা রাশিয়ার সামরিক অভিযানের উদ্দেশ্য বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এক সংবাদ সম্মেলনে রুশ সামরিক বাহিনীও বলেছে, তাদের অভিযানের একটি বড় অংশজুড়ে রয়েছে 'নাৎসি বাহিনী' প্রতিরোধ কার্যক্রম।
এর আগে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়ার চেচনিয়া অঞ্চলের নেতা রামযান কাদিরভ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র। তাই ইউক্রেনে চলমান আগ্রাসনে রুশ সেনাদের সহায়তা করতে চেচন যোদ্ধাদের ইউক্রেনে মোতায়েন করেছেন তিনি। শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ কথা জানান।
কাদিরভ প্রায়ই নিজেকে পুতিনের 'সৈনিক' হিসেবে দাবি করেন। এর আগে চেচেন বাহিনীকে রাশিয়ার পক্ষে সিরিয়া এবং জর্জিয়াতেও মোতায়েন করা হয়েছিল। এবার তিনি রুশ নেতার পক্ষ নিয়ে তার বাহিনীকে নিজের সরকারের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন; ইউক্রেনকে 'নব্য-নাৎসিমুক্ত' করতে চেচেন যোদ্ধাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। তবে, ইউক্রেনের কর্মকর্তারা 'নব্য-নাৎসিবাদের' পুরো বিষয়টিই দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
- সূত্র: আল জাজিরা