বাজে আম্পায়ারিংয়ের শিকার খেলাঘর, কী বলছেন আম্পায়ার কমিটির প্রধান
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) পক্ষপাতমূলক আম্পায়ারিংয়ের অভিযোগ বহু পুরনো। প্রতি আসরেই আম্পারিং নিয়ে বিতর্কও ওঠে। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত দিয়ে যাচ্ছেন আম্পায়াররা। যার খেসারত সবচেয়ে বেশি দিতে হচ্ছে প্রিমিয়ার লিগের দল খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতিকে।
আগের ম্যাচেই আবাহনী লিমিটেডের বিপক্ষে ম্যাচে বাজে আম্পায়ারিংয়ের শিকার হতে হয় খেলাঘরকে। মাসুদুর রহমান মুকুল অদ্ভুত এক সিদ্ধান্ত দেন খেলাঘরের বিপক্ষে। বৃহস্পতিবার রূপগঞ্জ টাইগার্সের বিপক্ষেও একাধিক বাজে আম্পায়ারিংয়ের শিকার হতে হয় খেলাঘরকে। ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত তারা ৩৬ রানে হেরে যায়।
রূপগঞ্জ টাইগার্সের বিপক্ষে বোলিংয়ের পর ব্যাটিংয়েও বাজে আম্পায়ারিংয়ের কবলে পড়তে হয় খেলাঘরকে। এই ম্যাচে আম্পায়ারিংয়ের দায়িত্বে ছিলেন মাহফিজুর রহমান ও সৈয়দ মোজাহিদুজ্জামান। মাহফিজুর রহমানের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আম্পায়ারিং করার অভিজ্ঞতা থাকলেও মোজাহিদুজ্জামানের নেই।
বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে রূপগঞ্জের দেওয়া ২৬০ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৪ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর দ্বিতীয় উইকেটে জুটি বাধে খেলাঘর। কিন্তু আম্পায়ারদের ভুলে খেলাঘরের লঙ্কান ক্রিকেটার উপুল থারাঙ্গা ১০ রানে আউট হয়ে ফিরে যান। ভিডিওতে দেখা যায়, রূপগঞ্জের অফ স্পিনার শরিফউল্লাহর ডেরিভারিটি লেগ স্টাম্পের বাইরে পিচ করবে। কিন্তু সামান্য আবেদনেই আম্পায়ার থারাঙ্গাকে আউট ঘোষণা করেন।
৪৬ বলে খেলাঘরের প্রয়োজন ছিলো ৫৭ রান। এ সময় ৫৯ রানে ব্যাটিং করতে থাকা ইলিয়াস সানী আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তের বলি হন। নাসুমের বলটি রিভার্স সুইপ খেলার চেষ্টা করেন সানী। কিন্তু তার পায়ে বল লাগতেই আম্পায়ার আউট দিয়ে দেন। যদিও ভিডিও দেখেও এই আউটটি নিশ্চিত হওয়ার উপায় নেই। সানীর আউটের পর দিক হারিয়ে ২২৩ রানে অলআউট হয়ে যায় খেলাঘর।
এই ম্যাচের ঘটনা সম্পর্কে অবগত বিসিবির আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ মিঠু। ইতোমধ্যে আম্পায়ারদের কাছে লিখিত ব্যাখা চেয়েছেন তিনি। এ নিয়ে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে তিনি বলেন, 'এই ম্যাচের ব্যাপারে আমি অবগত আছি। আমি ভিডিও দেখেছি। আমারও সন্দেহ হয়েছে। কারও ব্যাপারে সন্দেহ হলেই তাকে সাতদিনের জন্য আম্পায়ারিং থেকে বিরত রাখা হচ্ছে, তাদের কাছে ব্যাখা চাওয়া হয়েছে। এটা আনুষ্ঠানিক না হলেও অনানুষ্ঠানিকভাবে করছি আমি।'
'ওই ম্যাচে মুকুল নিজেই বলেছে আমার মনোযোগের ঘাটতি ছিল। আমি তখন বলেছি তুমি বিশ্রামে যাও। সাতদিনে মনোযোগ ঠিক করো, পরে দায়িত্বে ফিরে আসো। তবে আমাকে তো দুই পক্ষকেই আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে। আমি এখন যেটা করছি ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে এক সপ্তাহের জন্য ওই সকল আম্পায়ারদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিচ্ছি।' যোগ করেন তিনি।
মানসম্পন্ন আম্পায়ারের অভাবে সাম্প্রতিক সময়ে ভুলের পরিমাণ বেশি দেখা যাচ্ছে জানিয়ে ইফতেখার আহমেদ মিঠু আরও বলেন, 'অনেক সময় যেটা হয় কেউ ইচ্ছে করে কিংবা দূর্নীতির উদ্দেশ্যে এমন কিছু করে না। আমাদের বেশিরভাগ আম্পায়ারই নিম্ন মানের। তাদের ট্রেনিংয়ের স্বল্পতা আছে। ব্যাপারটা ট্রেনিং না করে গাড়ি চালানোর মতো। আমার ধারণা এখানে তেমন কিছুই ঘটছে। আমাদের চারজন এলিট আম্পায়ারের মধ্যে একজন মুকুল। সে এমন সিদ্ধান্ত নিলে বাকিদের অবস্থা কেমন, বোঝাই যায়।'