ইলনের টুইটার টেকওভার নিয়ে শঙ্কিত কোম্পানির কর্মীরা
ইলন মাস্ক টুইটারের নতুন মালিক হওয়ায় কোম্পানির ভবিষ্যৎ নিয়ে কর্মীদের মধ্যে নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকেই চিন্তিত তাদের চাকরি নিয়ে, আবার অনেকে চিন্তিত ওয়ার্ক ফ্রম হোম নিয়ে।
এর আগে, টেসলার প্রতিষ্ঠাতা জানিয়েছিলেন যে, তিনি এই প্ল্যাটফর্মের বাকস্বাধীনতার নীতি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চান। টুইটারের মডারেশন পলিসির পরিবর্তন করে 'ফ্রি স্পিচ' এর পরিধি বাড়াতে চান তিনি। তবে, তার সমালোচকদের দাবি, ইলন আদতে এই প্ল্যাটফর্মে 'হেট স্পিচ' এর সংখ্যা বাড়াবেন।
ইলন মাস্কের সাথে টুইটারের নতুন চুক্তিটি ছয় মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। কর্মীদেরকে বলা হয়েছে যে তাদের চাকরি এই ছয় মাস পর্যন্ত নিশ্চিত। তাদেরকে আরও বলা হয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের কর্মীদের 'ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা করা হয়নি'।
টুইটারের টেকওভার নিয়ে শঙ্কিত কর্মীদের মধ্যে একজন হলেন সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার অ্যাডিসন হাভেনস্টাইন। তিনি লিখেন, "টুইটারের ৯.২ শতাংশ কিনে নেওয়া এবং বোর্ডের সদস্য হওয়াই ইলন মাস্কের শেষ উদ্দেশ্য নয়। পরিস্থিতি সামনে অবশ্যই খারাপ হবে।"
ইলন এবং টুইটারের মধ্যে আলোচনা শুরু হয় রোববার। সোশ্যাল মিডিয়া সাইটের বোর্ড জানায়, তার কাছে টুইটার বিক্রয় ছিল 'আগামীর জন্য সবচেয়ে সেরা একটি পদক্ষেপ'।
কিন্তু কর্মীদের মধ্যে দেখা গেছে বিপরীত প্রতিক্রিয়া।
টুইটার প্রকৌশলী জে হলার লিখেন, "প্রথমবারের মতো টুইটারের দায়িত্বে এমন কেউ আছে, যাকে আমি নিজেই এই প্ল্যাটফর্মে ব্লক করেছিলাম।"
গ্লোবাল কিউরেশন স্ট্যান্ডার্ড বিষয়ক টুইটারের প্রধান কর্মকর্তা ক্লোয়ি বার্নস বলেন, "এ বিষয়টি অনেকের জন্য বিনোদন হতে পারে, তবে আমার জন্য তা অবশ্যই বিনোদন নয়।"
তবে, ইলন মাস্কের এই সিদ্ধান্তে বেশ ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন টুইটারের প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক ডরসি।
রেডিওহেড ব্যান্ডের গান 'এভ্রিথিং ইন ইটস রাইট প্লেস'-এর একটি স্পটিফাই লিঙ্ক পোস্ট করে ডরসি লিখেন, "আমি টুইটার ভালোবাসি। নীতিগতভাবে, আমি মনে করি না যে কারও টুইটারের মালিক হওয়া উচিত। এটি একটি প্রোটোকল হিসেবেই জনসাধারণের ভালো চায়। কিন্তু টুইটার কোম্পানির আসনে বসার মতো কেউ যদি থাকে, তাহলে সেখানে ইলনকেই একমাত্র সমাধান বলে বিশ্বাস করি আমি।"
এদিকে, কোম্পানির সিইও পরাগ আগরওয়াল এবং বোর্ডের চেয়ার ব্রেট টেলর কর্মীদের সাথে ইলন মাস্কের বিষয়ে আলোচনায় বসেন। সেখানেই তাদের চাকরির বিষয়টি তুলে ধরা হয়। তবে, কর্মীদের বর্তমান ওয়ার্ক ফ্রম হোম নিয়ম নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা তা স্পষ্ট নয়।
দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের মতে, আগরওয়াল কর্মীদের জানান যে তারা টুইটারের ভেস্টিং শিডিউল অনুযায়ী বোনাস পেতে থাকবে।
ইলন মাস্কের সাথে একটি স্টাফ ফোরাম তৈরির চেষ্টার কথাও জানান তিনি। তার সাথে চুক্তি চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত তিনি সিইও হিসেবে কোম্পানিতে থাকবেন বলেও যোগ করেন আগরওয়াল।
"তিনি [ইলন] চান টুইটার বিশ্বে একটি শক্তিশালী ও ইতিবাচক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হোক," বলেন টুইটার সিইও।
- সূত্র- ডেইলি মেইল