পদ্মা সেতু পাড়ি দিতে বাইকের ১০০, বাসের লাগবে ২৪০০ টাকা
পদ্মা সেতু পারাপারের জন্য টোল হার নির্ধারণ করেছে সরকার। আজ মঙ্গলবার (১৭ মে) সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় বিভিন্ন পরিবহনের জন্য আলাদা আলাদা টোল হার নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
পদ্মা সেতু পার হতে সর্বনিম্ন টোল দিতে হবে মোটরসাইকেল আরোহীকে। মোটরসাইকেলের জন্য টোল নির্ধারণ হয়েছে ১০০ টাকা, কার ও জিপ ৭৫০ টাকা, পিকআপ এক হাজার ২০০ টাকা, মাইক্রোবাস এক হাজার ৩০০ টাকা। ছোট বাস (৩১ আসন বা এর কম) এক হাজার ৪০০ টাকা, মাঝারি বাস (৩২ আসন বা এর বেশি) দুই হাজার টাকা এবং বড় বাস (৩ এক্সেল) দুই হাজার ৪০০ টাকা।
ছোট ট্রাক (৫ টন পর্যন্ত) এক হাজার ৬০০ টাকা, মাঝারি ট্রাক (৫ টনের অধিক থেকে ৮ টন পর্যন্ত) দুই হাজার ১০০ টাকা, মাঝারি ট্রাক (৮ টনের অধিক থেকে ১১ টন পর্যন্ত) দুই হাজার ৮০০ টাকা, ট্রাক (৩ এক্সেল পর্যন্ত) পাঁচ হাজার ৫০০ টাকা এবং চার এক্সেলের ট্রেইলারের টোল ৬ হাজার টাকার বেশি নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার দিন থেকেই এই টোল হার কার্যকর হবে।
টোল হারের প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য গত ২৮ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠায় সেতু মন্ত্রণালয়। সেতু বিভাগের প্রস্তাবিত সেই টোল হারই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অনুমোদন করেছে বলে জানানো হয় প্রজ্ঞাপনে।
এই টোল হারে সেতু পারাপারের জন্য বর্তমান ফেরিভাড়ার দেড়গুণ খরচ হবে। আর দেশের দ্বিতীয় দীর্ঘতম সেতু বঙ্গবন্ধু সেতুর টোলের তুলনায় পদ্মা সেতুর টোল হার হবে প্রায় দ্বিগুণ।
আগামী মাসের শেষ নাগাদ পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এখন উদ্বোধন অনুষ্ঠানের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে।
সেতু বিভাগ জানিয়েছে, পদ্মা সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের জন্য ম্যুরাল ও ফলক নির্মাণের কাজ চলছে। ৪০ ফুট উচ্চতার দুটি ম্যুরাল স্থাপন করা হচ্ছে মাওয়া ও জাজিরা পয়েন্টে। এই ম্যুরালে দুটিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিকৃতি থাকবে।
পদ্মা সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য টোল আদায়কারী ও ঠিকাদার নিয়োগ দিয়েছে সেতু বিভাগ। এই কাজ দেওয়া হয়েছে কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে কর্পোরেশন (কেইসি) এবং চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানিকে (এমবিইসি), যারা বর্তমানে মূল সেতু নির্মাণের কাজ করছে। আর পরামর্শক সংস্থা হিসাবে কাজ করবে কেইসি।
আগামী পাঁচ বছরের জন্য সেতুর দুই প্রান্তে টোল আদায়ের আধুনিক পদ্ধতি ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা চালু করবে প্রতিষ্ঠান দুটি।
পদ্মা সেতু চালু হলে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৯টি জেলার সঙ্গে দেশের বাকি অংশের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হবে। এছাড়া ঢাকা-ভাঙ্গা সড়কে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের ফলে এই রুটে যাতায়াতের সময় এক ঘণ্টা কমে যাবে বলে জানিয়েছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা।
যাতায়াত সুবিধার পাশাপাশি পদ্মা সেতু অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। সমীক্ষা অনুসারে, পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ১.২৩ শতাংশ হারে বাড়বে। আর দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জিডিপি বাড়বে ২.৩ শতাংশ।