রাশিয়া থেকে দুই-তৃতীয়াংশ তেল আমদানি কমাতে একমত ইইউ নেতারা
রাশিয়ার কাছ থেকে দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি পরিমাণে তেল আমদানি বন্ধের পরিকল্পনায় একমত হয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতারা ।
এর ফলে সমুদ্রপথে রাশিয়া থেকে ইউরোপে তেল আমদানি বন্ধ হবে। ইউরোপের দেশগুলো রাশিয়া থেকে যে তেল আমদানি করে তার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই আসে সমুদ্রপথে।
তবে নিষেধাজ্ঞার এই সিদ্ধান্ত পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল আমদানিকে আপাতত প্রভাবিত করবে না। হাঙ্গেরির বিরোধিতার কারণে এ বিষয়ে কিছুটা আপসের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইইউ।
পাইপলাইনে তেল আমদানি বন্ধের বিষয়ে দ্বিমত জানিয়েছে দেশটি। ফলে রাশিয়ার ওপর এই নিষেধাজ্ঞা ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে এক ধরনের সমঝোতার মাধ্যমে হয়েছে।
ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রধান চার্লস মিশেল বলেন, এই সমঝোতার ফলে রাশিয়া যুদ্ধে যে অর্থ ব্যয় করছে সেটির বড় একটি উৎস বন্ধ হবে।
এ নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার ওপর ৬ষ্ঠ বারের মতো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশের সবগুলোই অংশ নিয়েছে।
ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রধান আরও বলেন, রাশিয়ার সবচেয়ে বড় ব্যাংক এবং তিনটি রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ব্যাপারেও ইউরোপীয় নেতারা একমত হয়েছেন।
বৈঠকে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধের ব্যাপারে হাঙ্গেরির বিরোধিতার কারণ হল, দেশটি নিজের চাহিদার ৬৫ শতাংশ তেলই পাইপলাইনের মাধ্যমে রাশিয়া থেকে আমদানি করে। ফলে রাশিয়ার তেলের যোগান বন্ধ হয়ে গেলে ব্যাপক জ্বালানি সংকটে পড়বে হাঙ্গেরি।
এর আগে, রুশ তেল আমদানি বন্ধে ইউরোপীয় কমিশন একটি প্রস্তাব দিয়েছিল। এ লক্ষ্যে মাসখানেক আগে সদস্য দেশগুলোর জন্য একটি আইনও তৈরি করেছিল কমিশন। তবে সেখানে বাধা হয়ে দাঁড়ায় হাঙ্গেরি।
এছাড়া স্লোভাকিয়া এবং চেক প্রজাতন্ত্রের মতো যেসব দেশের সমুদ্রবন্দর নেই, তারাও রাশিয়ার তেলের ওপর থেকে নির্ভরতা কমিয়ে আনতে সময় চেয়েছে।
ইউরোপে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির কারণে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি পুরোপুরি বন্ধ করার বিষয়ে অনেক দেশই একমত হতে পারছে না। অন্যান্য জিনিসের মতো জ্বালানির মূল্যও বেশ উর্ধ্বমুখী।
আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় রাশিয়ার তেলের ওপর পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে ইউরোপীয় দেশগুলো।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লেইন জানান, এই নিষেধাজ্ঞা আরও বিস্তৃত হওয়ার সুযোগ ছিল। কারণ জার্মানি এবং পোল্যান্ড এ বছরের মধ্যেই রাশিয়ার কাছ থেকে ধীরে ধীরে পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল আমদানি বন্ধ করে দিতে স্বেচ্ছায় সম্মত হয়েছে।
হাঙ্গেরি, চেক প্রজাতন্ত্র এবং স্লোভাকিয়ার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এর ফলে বাকি থাকবে ১০ থেকে ১১ শতাংশ।
ব্রাসেলসের বৈঠকে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান বেশ কঠোর অবস্থার নেন। তিনি বলেন, জ্বালানি সরবরাহ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
"আগে আমাদের সমাধান দরকার, তারপর নিষেধাজ্ঞা," বলেন হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী।
- সূত্র: বিবিসি