ক্রেতাদের আকর্ষণ বাড়াচ্ছে রাজা, বাদশা ও বাহাদুর
দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযাহা উপলক্ষে ক্রেতাদের নিকট আকর্ষণ বাড়াচ্ছে রাজা, বাদশা ও বাহাদুর নামের তিনটি বিশাল আকৃতির গরু।
৪০ মণ ওজনের বাহাদুরের দাম ২০ লাখ, ৩৭ মণ ওজনের রাজার দাম ১৮ লাখ ও ২৮ মণ ওজনের বাদশার দাম ১৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।
তবে করোনার কারণে কাঙ্খিত দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন খামারি জিয়াউর রহমান মানিক।
এদিকে, বড় আকারের গরুগুলো দেখতে অনেকেই এখন ভীড় করছেন তার খামারে।
দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার বিনোদনগর গ্রামের জিয়াউর রহমান নিজের খামারে সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে বড় আকারের এই তিনটি ষাড় লালন-পালন করছেন। কিন্তু করোনার কারণে চলমান লকডাউনে বড় আকারের এসব গরু বিক্রি করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তিনি।
খামারি জিয়াউর রহমান মানিক বলেন, "পাঁচ বছর আগে প্রাণী সম্পদ থেকে নেওয়া বীজের মাধ্যমে খামারের নিজস্ব গাভী থেকে ফ্রিজিয়াম জাতের তিনটি ষাড়ের বাছুরের জন্ম হয়। এরপর গত পাঁচ বছর যাবত কোরবানি ঈদকে ঘিরে তাদের লালন পালন করে আসছি। এতদিন গরুর পরিপক্কতা না আসায় বাজারজাত করা সম্ভব হয়নি।"
"যে তিনটি বড় আকারের গরু রয়েছে এর মধ্যে কালো বর্ণের গরুটির নাম রেখেছি বাহাদুর যার ওজন এসেছে প্রায় ৪০ মণ। কালো সাদা বর্ণের একটি গরুর নাম রেখেছি রাজা। ওর ওজন এসেছে ৩৭ মণ। একই বর্ণের অপর একটি গরু রয়েছে যার নাম রেখেছি বাদশা," বলেন তিনি।
"বাহাদুরের উচ্চতা ৫ ফিট ২ইঞ্চি, লম্বায় ৭ ফিট ৮ ইঞ্চি, রাজা উচ্চতা ৫ফিট ৫ ইঞ্চি এবং লম্বায় ৭ ফিট ২ ইঞ্চি, আর বাদশার উচ্চতা ৫ ফিট ও লম্বায় ৭ ফিট। কোনো প্রকার হরমন জাতীয় ইনজেকশন বা ট্যাবলেট কোন কিছু প্রয়োগ না করে সম্পূর্ণ দেশী খাবার ও বিভিন্ন ধরনের ফলমুল খাইয়ে এই গরুগুলোকে লালন-পালন করা হয়েছে," বলেন মানিক।
উপজেলায় তার ষাড়গুলো সবচেয়ে বড় আকারের বলে দাবি করেন তিনি।
"আমিতো অনেক আশা করে রেখেছি যে, এবারের ঈদে এগুলো বিক্রি করবো কিন্তু যদি বিক্রি করতে না পারি তাহলে আমি অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবো। প্রতি সপ্তাহে এই তিনটি গরুর জন্য আমার খাবার বাবদ ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। আর এই খরচ বহন করা বিশাল এক ক্ষতির ব্যাপার হয়ে যাবে," বলেন তিনি।
"প্রথম দিকে খরচ কিছুটা কম হলেও গত দেড় বছর ধরে খরচ বেশি হচ্ছে। এখন পর্যন্ত এই গরু তিনটির পেছনে ২০ লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। তবে আশা রাখছি আমি এই ঈদে গরু তিনটি নিয়ে ঢাকায় যাবো। সেখানে হয়তোবা বিক্রি করতে পারবো। তবে এখন পর্যন্ত কোন পার্টি কোন দাম বলেনি বা দেখতে আসেনি। তবে, অনেকেই বলেছেন ঢাকায় নিয়ে আসেন, আমরা নিবো," বলেন তিনি।
নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের ভেটেরিনারী সার্জন ডা. শফিউল ইসলাম বলেন, "জিয়াউর রহমান মানিক তিনটি গরু মোটাতাজা করেছেন। গরুগুলো আকারে বেশ বড়। ফ্রিজিয়াম জাতের গরুগুলোকে কোনো ওষুধ ছাড়াই সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে মোটাতাজা করা হয়েছে। আমাদের মাঠকর্মী নিয়মিত তাদের সাথে যোগাযোগ করছে, বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এই গরুগুলো হয়তো আমাদের এই অঞ্চলে বিক্রি হবে না। ঢাকা অথবা বিভাগীয় শহরে পাঠাতে হবে। অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমেও বিক্রির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ট্রেনের মাধ্যমে বা অন্য কোনও উপায়ে তাদেরকে ঢাকাতে পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"