'কল সেন্টারের অপরাজিতা' উপন্যাসের রয়্যালটি থেকে অনুদান
চলতি বছরের শুরুতে প্রকাশনা সংস্থা প্রথমা থেকে প্রকাশিত হয় রাহিতুল ইসলামের আলোচিত উপন্যাস 'কল সেন্টারের অপরাজিতা' যেখানে উঠে এসেছে একটি মেয়ের জীবনের নানা সংগ্রামের কথা। বরাবরই লেখক তাঁর সব বইয়ের প্রথম রয়্যালটির অর্থ সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য ব্যয় করেন। সেই ধারাবাহিকতায় 'কল সেন্টারের অপরাজিতা' উপন্যাস থেকে প্রাপ্ত প্রথম রয়্যালটি ৫০ হাজার টাকা লেখক প্রথম আলো ট্রাস্টকে অনুদান হিসেবে দিয়েছেন। অনুদানের অর্থ থেকে প্রথম আলো ট্রাস্ট দুজনকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবে।
অনুদানের অর্থ থেকে ৩৫ হাজার টাকার চিকিৎসা সহায়তা পাবেন নাটোরের মেয়ে সানজিদা আক্তার, যিনি গত বছরের নভেম্বরে অ্যাসিড সন্ত্রাসের শিকার হন। প্রথম আলো ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় বর্তমানে ইস্পাহানী ইসলামিয়া চক্ষু ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে তাঁর চোখের চিকিৎসা চলছে। রয়্যালটির বাকি ১৫ হাজার টাকা পাবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী মো. শাহিন আলম। তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের মাস্টার্সের ছাত্র।
শাহিন আলম তাঁর মতো দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের অনলাইনে মাইক্রোসফট অফিসের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। দেশ–বিদেশ থেকে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা তাঁর কাছে এই প্রশিক্ষণ নেন। নির্বিঘ্নে প্রশিক্ষণের জন্য শাহিন আলমের একটি জুম আইডি প্রয়োজন। 'কল সেন্টারের অপরাজিতা' থেকে প্রাপ্ত রয়্যালটির অংশ থেকে তাঁর জুম আইডিটি এক বছরের জন্য কিনে দেওয়া হবে, যাতে তিনি তাঁর কাজটি চালিয়ে যেতে পারেন।
কথাসাহিত্যিক রাহিতুল ইসলাম বলেন, 'প্রথমেই ধন্যবাদ জানাব আমার প্রিয় পাঠকদের। কারণ, তাঁরা বই পড়েন, বই কেনেন, যে কারণে আমি বইয়ের প্রথম রয়্যালটির টাকাটি সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের দিতে পারি। 'কল সেন্টারের অপরাজিতা' একজন সংগ্রামী নারীর গল্প। যে অপরাজিতা পরাজয় মানে না। আমিও আমার এই বইয়ের প্রথম রয়্যালটির টাকা একজন সংগ্রামী মানুষ ও অপরাজিতার হাতে তুলে দিতে পেরে আনন্দিত।'
সাধারণত আমরা যখন কোনো গল্প বা উপন্যাস পড়ি, তখন লেখকের কল্পনা আর লেখার কৌশলের সঙ্গে আমাদের কল্পনা মিশিয়ে নিয়ে সেটির ভালো–মন্দ মূল্যায়ন করি। কিন্তু রাহিতুল ইসলাম লেখক হিসেবে একটু ব্যাতিক্রম। তিনি সাধারণত সত্য ঘটনা অবলম্বনে তাঁর বই লিখে থাকেন, যে কারণে পাঠক কেবল একটি চরিত্র সম্পর্কেই জানেন—তা নয়। এ–ও জানেন যে এই দেশের কোনায় কোনায় কত গল্প লুকিয়ে আছে।