জুলাই অভ্যুত্থানে নিহতদের পরিবার, আহতদের জন্য ৬৩৭.৮০ কোটি টাকা ছাড়ের অনুমোদন
জুলাইয়ের অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবারকে সহায়তা এবং আন্দোলনে আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে গতকাল (৩০ ডিসেম্বর) ৬৩৭.৮০ কোটি টাকা ছাড়ের অনুমোদন দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
২০২৫ সালের ১০ জানুয়ারি তারিখ থেকে নিহতদের পরিবার ও আহতদের আর্থিক অনুদান দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
সোমবার সন্ধ্যায় টিবিএসকে তিনি বলেন, "পুরো টাকাই অনুদান হিসেবে দেওয়া হবে। তবে এখনই এককালীন পুরো অর্থ দেওয়া সম্ভব হবে না। এখন একটি অংশ দেওয়া হবে। বাকি অংশ আগামী অর্থবছরের বাজেট থেকে জুন মাসের পর দেওয়া হবে।"
এর আগে, ড. সালেহউদ্দিন আহমেদকে লেখা এক চিঠিতে দ্রুত শহীদ পরিবারকে সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি আহতদের অনুদান ও চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে দ্রুত ৬৩৭.৮০ কোটি টাকা ছাড় করার অনুরোধ জানান ফাওজুল কবির খান এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের প্যাডে লেখা ওই চিঠিতে ফাওজুল কবির খানের সঙ্গে স্বাক্ষর করেছেন মো. নাহিদ ইসলাম— যার কপি টিবিএস দেখেছে।
গত অক্টোবরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ব্যক্তিদের প্রত্যেকের পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হওয়ার দেড় মাস পরও টাকা না দেওয়ায় জনমনে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ছে বলে অর্থ উপদেষ্টাকে জানানো হয় ওই চিঠিতে।
ফলে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবারকে অনুদান এবং আহত ছাত্র-জনতার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ৬৩৭.৮০ কোটি টাকা ছাড় করতে অর্থ উপদেষ্টাকে অনুরোধ করেন দুই উপদেষ্টা।
এর আগে, গত ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভা শেষে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারকে ৩০ লাখ করে টাকা অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ুবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম।
ফাওজুল কবির খান ও মো. নাহিদ ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, জুলাই অভ্যুত্থানে ৮২৬ জন শহীদ হয়েছেন— যাদের প্রত্যেকের পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা হারে মোট ২৪৭.৮০ কোটি টাকা দিতে হবে।
এছাড়া, অভ্যুত্থানে ১৫,০০০ আহতদের অনুদান বাবদ ২৯০ কোটি টাকা এবং দেশে-বিদেশে আহতদের চিকিৎসা বা কনসালটেন্সি বাবদ ১০০ কোটি টাকা ছাড় করার অনুরোধ করা হয়েছে।
আহতদের মধ্যে মারাত্বক আহত ১,০০০ জনের প্রত্যেককে ৫ লাখ টাকা; ৩,০০০ জনের প্রত্যেককে ৩ লাখ টাকা; ৪,০০০ জনের প্রত্যেককে ২ লাখ টাকা এবং বাকি ৭,০০০ জনের প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা হারে দেওয়ার অনুরোধ করেন ফাওজুল কবির ও নাহিদ ইসলাম।
গত ২১ ডিসেম্বর জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের নামের তালিকা চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে প্রথম ধাপের খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে গণ-অভ্যুত্থানসংক্রান্ত বিশেষ সেল। প্রথম ধাপের খসড়া তালিকায় শহীদ ৮৫৮ জন এবং আহতের সংখ্যা ১১,৫৫১ জন।