বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে স্বতন্ত্র ‘চলচ্চিত্র’ বিভাগের দাবি চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আইন ১৯৮৯ এর নতুন খসড়া অধ্যাদেশে নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র উপবিভাগ থেকে 'চলচ্চিত্র' বাদ দেওয়ায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
আজ এ প্রতিবাদ জানিয়ে এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছেন তারা। তারা তাদের বিবৃতিতে চলচ্চিত্রের জন্য আলাদা বিভাগ করার দাবি জানান।
চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেন, "এছাড়া, আজ গণঅভ্যুত্থানের পরে যখন নতুন সময়ে গণঅভ্যুত্থানকে ও মানুষের মুক্তিমুখীন লড়াইকে ধারণ করা এবং চলমান দেশগঠন ও সংস্কার প্রক্রিয়ায় পুরো জাতি ঐক্যবদ্ধ, এই নবজাগরণকে সবচেয়ে ভালোভাবে ধারণ করতে পারে যে মাধ্যম, শিল্পকলার সেই অন্যতম শাখা চলচ্চিত্রকে একাডেমি থেকে বাদ না দিয়ে বরং স্বতন্ত্র বিভাগ গঠন করা হোক।"
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, শিল্পকলা একাডেমিতে চলচ্চিত্র বিষয়ক কার্যক্রমের বিষয়টি স্বাধীনতার পর থেকেই রয়েছে। ১৯৭৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আইন জাতীয় সংসদে পাস হওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাকালের আইনে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পাঁচটি বিভাগ নিয়ে যাত্রা শুরু করে। এই পাঁচটি বিভাগ ছিল-চারুকলা বিভাগ, নাট্যকলা বিভাগ, সঙ্গীত ও নৃত্যকলা বিভাগ, চলচ্চিত্র (সিনেমাটোগ্রাফি) বিভাগ,গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগ। অর্থাৎ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির শুরু থেকেই পৃথক 'চলচ্চিত্র বিভাগ' ছিল।
এছাড়া চলচ্চিত্র দেখার জন্য তথ্য মন্ত্রণালয় আছে। তথ্য মন্ত্রণালয় দেখে চলচ্চিত্রের কারখানা (এফডিসি), সেন্সর ও সনদ, প্রশিক্ষণ (বিসিটিআই), সরকারি তথ্যচিত্র (ডিএফপি), চলচ্চিত্রের আর্কাইভ। এত কিছু থাকার পরও স্বাধীনতার পর থেকে শিল্পকলা একাডেমিতে চলচ্চিত্র উপবিভাগ ছিল। কারণ শিল্পকলা বা আর্ট হিসেবে চলচ্চিত্রকে দেখার কোনো প্রতিষ্ঠান তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ছিল না। তাই শিল্পকলা একাডেমিতে বহু বছর ধরেই চলিচ্চত্রের শিল্পকলার দিকটি চর্চিত হয়ে আসেছ।
তাছাড়া যারা চলচ্চিত্রের শিল্পকলার দিকটি নিয়ে চর্চা করেন, ফিল্ম সোসাইটিগুলো, ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটি, শর্ট ফিল্ম ফোরাম, তরুণ ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্মমেকার, সবার পদচারণার ক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল একাডেমি। দু'বছর পরপর যে ইন্টারন্যাশনাল শর্ট ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্ম ফেস্টিভাল হয়, বা রেইনবোর ঢাকা ফিল্ম ফেস্টিভাল, তারও অন্যতম ভেন্যু ছিল একাডেমি।
তাই চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আশা করছেন, শিল্পকলা একাডেমি কর্তৃপক্ষের বোধোদয় হবে এবং নবনিযুক্ত সংস্কৃতি উপদেষ্টা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। পাশাপাশি আমরা এও দাবি করছি, নতুন সময়ের দাবি ও প্রয়োজন অনুযায়ী সরকার সংস্কৃতি নীতিমালারও প্রয়োজনীয় পরিমার্জনা করবে।