ছবি আঁকতে পারত নিয়ান্ডারথালরা, স্পেনের প্রাগৈতিহাসিক গুহাচিত্র থেকে মিলল প্রমাণ
নিয়ান্ডারথাল প্রজাতি প্রাগৈতিহাসিক যুগের আধুনিক মানুষের পূর্বপুরুষের সঙ্গে আগের ধারণার চেয়েও বেশি সাদৃশ্যপূর্ণ এমন প্রমাণ মিলেছে। সম্প্রতি স্পেনে পাওয়া গুহাচিত্র প্রমাণ করে দিয়েছে যে, নিয়ান্ডারথালদের মধ্যেও শিল্পের প্রতি অনুরাগ ছিল!
স্পেনের দক্ষিণাঞ্চলের প্রদেশ মালাগার কাছেই অবস্থিত 'কেইভস অফ আর্দালেসে'র স্ট্যালাগমাইটস (গুহার মেঝে থেকে ওপরের দিকে উঠে যাওয়া পাথুরে স্তম্ভ বিশেষ) এর উপর রেড ওকার নামক রঙের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।
গবেষকদের মতে, এটি ৬৫ হাজার বছর আগে নিয়ান্ডারথাল মানবদের আঁকা। আর তাই যদি হয়, তাহলে তারাই হতে পারে পৃথিবীর প্রথমশিল্পী। প্রসিডিংস অফ দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সেস (পিএনএএস)-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় রোববার এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়।
এরকম দাবি করার পেছনে কারণ হলো, গুহাচিত্রগুলো যখন আঁকা হয়েছে; তখনো আধুনিক মানুষ এই পৃথিবীতে বসতি গড়ে তুলতে পারেনি।
আজ থেকে প্রায় ৪০ হাজার বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া নিয়ান্ডারথাল যে হোমো স্যাপিয়েন্সের নিকটাত্মীয় নতুন এ গবেষণা সেই ধারণাকেই জোরদার করে।
মালাগার এই গুহার ভেতরের চিত্রগুলো ১৫ থেকে ২০ হাজার বছর সময়কালের ব্যবধানে বিভিন্ন সময়ে আঁকা হয়। এর আগে একই গুহা পর্যবেক্ষণ করে গবেষকরা জানিয়েছিলেন যে, চিত্রগুলো হয়তোবা প্রাকৃতিক অক্সাইডের কারণে তৈরি হয়ে গেছে। কিন্তু এবার তারা সেই বক্তব্যকে নাকচ করে দিয়ে জানান, এগুলো আসলে মানুষেরই আঁকা।
পিএনএএস গবেষণার একজন লেখক, জোয়াও জিলহাও বলেন, "লালচে বাদামিরঙা ওকার পিগমেন্টেশনের মাধ্যমে স্ট্যালাগমাইটসে ছবিগুলো আঁকা হয়েছে। খুব সম্ভবত কোনো রীতির আনুষ্ঠানিকতার অংশ হিসেবে তারা ছবিগুলো আঁকে।"
তিনি আরও বলেন, "মূল বিষয়টা হলো, এই উদ্ভাবনের ফলে নিয়ান্ডারথালদের প্রতি আমাদের মনোভাব বদলে যাবে। মানবজাতির সঙ্গে তাদের সত্যিই ভালো যোগসূত্র রয়েছে। সাম্প্রতিক কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, তারা বিভিন্ন বস্তু পছন্দ করতো। মানুষের সঙ্গেও তারা সঙ্গম করেছে। আর এখন আমরা দেখাতে পারবো যে তারা ছবিও আঁকতো।"
এর আগে ফ্রান্সের শোভে-পঁ দা'র্ক গুহায় প্রাগৈতিহাসিক যুগের মানুষের আঁকা দেয়ালচিত্র পাওয়া যায়; যা ছিল ত্রিশ হাজার বছরেরও বেশি পুরানো।
- সূত্র: রয়টার্স