সাগরের এসিড বাড়ায় ক্ষয়ে যাচ্ছে কাঁকড়াদের খোলস
প্রশান্ত মহাসাগরের পানির এসিড এতোটাই বেড়ে গেছে যে সমুদ্রে থাকা কাঁকড়াদের খোলস পর্যন্ত ক্ষয়ে যাচ্ছে। আর এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কাঁকড়াদের স্নায়ুতন্ত্রও।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোসফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নোয়া) এর এক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে। চলতি মাসে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল সায়েন্স অব দি টোটাল এনভায়রনমেন্ট এ।
বিশ্বজুড়ে সুনীল অর্থনীতি বা ব্লু ইকোনমির এক বড় উৎস কাঁকড়া। আর কাঁকড়ারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া মানে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া। আর এমন পরিস্থিতিতে বিকল্প উপায় খুঁজে বের করতে হবে বলেই মনে করেন গবেষক নিনা বেডনারসেক।
সমুদ্রের এসিড বাড়ছে কেন
প্রতিনিয়ত কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় পানির এসিড (অম্লত্ব) বাড়ছে বলে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়। পরিবেশ থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষণ করার ফলে প্রশান্ত মহাসাগরের সমুদ্রের পানিতে পি-এইচ এর ঘনমাত্রা কমে যাচ্ছে। আর এর ফলেই বাড়ছে পানির অম্লত্ব।
কাঁকড়ারা কিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে
অম্লধর্মী বা এসিডিক পানিতে কার্বনেট আয়নের পরিমাণ কম থাকে। ফলে এই আয়ন নির্ভর ক্রাস্তেশিয়ান বা খোলসওয়ালা প্রাণি ও কোরালরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কেননা পানিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ কার্বনেট আয়নের অভাবে শক্ত খোলস গড়তে পারে না এরা।
আর শুধু কাঁকড়াই নয়, সাগরের বসবাস করা শামুক, ঝিনুক ও প্ল্যাঙ্কটনের দৃঢ় বিকাশের জন্য কার্বনেট আয়ন অপরিহার্য। অর্থাৎ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে একটি বিপুল সংখ্যার জীব।
সমাধান কি
গবেষণায় দুই ধরনের সমাধানের কথা বলেছে নোয়া। প্রথমত, প্রকৃতিতে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ কমাতে হবে। এলক্ষ্যে সচেতন হতে হবে নীতি নির্ধারকদের। আর দ্বিতীয়ত, সামুদ্রিক এই জলজ পরিবেশের উপর নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীকে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। কয়েক বছরের মধ্যেই এই পরিবেশের যে পরিবর্তন হবে তা নিয়ে মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরি করার জন্য নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয় গবেষণায়।