মদে আঁকা ছবি
ছবি আঁকার জন্যে মানুষ কত রকম মাধ্যমই না ব্যবহার করে-তৈলচিত্র, জলরং কিংবা অ্যাক্রিলিক। তাই বলে মদ? ছবি আঁকতে সার্বিয়ান চিত্রশিল্পী সানিয়া ইয়ানকোভিচ এই বিশেষ পানীয়ই বেছে নিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে রেড, হোয়াইট, রোজ ইত্যাদি।
বিভিন্ন বস্তুকে শিল্পে রূপান্তরিত করা ছিল সানিয়া ইয়ানকোভিচের নেশা। মদকে একবার শিল্পকাজে ব্যবহারের চেষ্টা করার পর তিনি যেন সত্যিকার অর্থেই এর নেশায় আটকে যান! মদ দিয়ে তার ছবি আঁকার বিষয়টি যে শুধু ব্যতিক্রমধর্মী- তা নয়, যথেষ্ট রোমাঞ্চকরও ছিল।
ওয়াইন ও অ্যাকুয়ারেল নিয়ে নির্মিত একটি নাটক থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ইয়ানকোভিচ তার এই শিল্পের নাম দিয়েছেন, 'ওয়াইনরেলা'।
বছরের পর বছর ধরে ক্যানভাসে তার মদের ব্যবহারের ফলে শিল্পকর্মের ধরনও বদলে যেতে থাকে।
নিজের পেইন্টিং সম্পর্কে সানিয়া ইয়ানকোভিচ বলেন, 'এই পেইন্টিংগুলো ভিন্নধর্মী ও কৌতুহল জাগানিয়া। কেননা, এখানে শুধুই বিস্তৃত শিল্প ইতিহাসই দেখানো হয়নি; বরং গাঁজন ও অক্সিডেশন প্রক্রিয়ার ফলে ছবিগুলোর রঙ হালকা বদলে যেতে থাকে- যা একে আরও সুন্দর করে তোলে।'
"মদের দাগ লাল ও পার্পল রঙ থেকে আস্তে আস্তে বাদামিরঙা হয়ে উঠে এমন একটি রঙের সমন্বয় তৈরি করে, যা অন্য কোনো পিগমেন্টেশনের পক্ষে অনুকরণ করা সম্ভব নয়। এই প্রক্রিয়াকে 'এজিং প্রসেস'ও বলা হয়ে থাকে," বলেন তিনি।
শুরুর দিকে সানিয়া সব রকম মদই ব্যবহার করতেন- দেশি কিংবা বিদেশি থেকে শুরু করে মার্লট কিংবা রন রিজলিং। ধীরে ধীরে তিনি আবিষ্কার করেন, কোন রঙ সাদা ক্যানভাসে কীভাবে মিথস্ক্রিয়া করে। তাই চিত্রকর্মের মানের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে তিনি বিভিন্ন মদ থেকে প্রত্যাশিত রঙ আনার ব্যাপারটি শিখেছেন।
সানিয়া নিজের এই চিত্রকর্মগুলোকে রহস্যময় বলে আখ্যা দিয়েছেন। তার মতে, এগুলো যেন মদের মতোই সজীব থাকে সব সময়, যদিও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এরা সামান্য রঙ বদলায়।
গত ছয় বছর ধরে ইয়ানকোভিচ তার 'ওয়াইনরেলা' পদ্ধতি ব্যবহার করে বহু বিচিত্রধর্মী শিল্পকর্ম তৈরি করেছেন। তার আঁকা এসব ছবির মধ্যে রয়েছে 'গেম অব থ্রোনস'-এর চরিত্র থেকে শুরু করে মোনালিসা, মেরিলিন মনরোর পোর্ট্রেটও।
দুবাইয়ে বসবাসরত চিত্রশিল্পী সানিয়া ইয়ানকোভিচ তার শিল্পকর্মগুলোকে অনলাইনে ও তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রোফাইলের (ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক) মাধ্যমে বিক্রি করেন।
- সূত্র: অডিটি সেন্ট্রাল