যে দেশে বিজ্ঞান ও প্রকৌশলে নারীদের সংখ্যাই বেশি
বহুকাল থেকেই বিশ্বজুড়ে জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চার ক্ষেত্রেও লিঙ্গ বৈষম্য চলে আসছে। উন্নত দেশগুলো তা অনেকটা ভালোভাবে কাটিয়ে উঠলেও এখনও বিজ্ঞানের চর্চায় নারীদের চেয়ে পুরুষদের অংশগ্রহণ বেশি। তবে এ বিষয়টিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিজ্ঞান ও প্রকৌশলের চর্চায় পুরুষদের চেয়েও বেশিহারে অংশগ্রহণ করে যাচ্ছেন নরওয়ে, ডেনমার্ক, বুলগেরিয়াসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশের নারীরা।
সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরিসংখ্যান বিষয়ক দপ্তর ইউরোস্ট্যাট একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। বিজ্ঞানে নারী ও মেয়েদের অংশগ্রহণ নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে একটি দিবস পালন করা হয় ১১ ফেব্রুয়ারি। ওই দিবস উপলক্ষ্যে ইউরো স্ট্যাটের প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, নরওয়ের সকল বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলীর ৫৫ শতাংশই হলেন নারীরা যা ইউরোপের যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি।
ওই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত বছর ইউরোপের দেশ লিথুয়ানিয়ার ৫৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলী ছিলেন নারী, লাটভিয়ায় ছিলেন ৫২ দশমিক ৭ শতাংশ, ডেনমার্কে ছিলেন ৫১ দশমিক ৭ শতাংশ এবং বুলগেরিয়ায় ৫০ দশমিক ১৪ শতাংশ।
ইউরোপের দেশগুলোর এ তালিকায় সবার নিচে আছে লুক্সেমবার্গ যেখানে বিজ্ঞান ও গবেষণা বিষয়ক খাতে নারীদের অংশগ্রহণ মাত্র ২৭ দশমিক ৯৭ শতাংশ। এছাড়াও ফিনল্যান্ড, হাঙ্গেরি এবং জার্মানির অবস্থানও তালিকার নিচের দিকে। তবে জার্মানির ক্ষেত্রে তাদের কিছু কিছু প্রদেশে বিজ্ঞান ও প্রকৌশলে নারীদের অংশগ্রহণের হার যেমন ৫০ এর কাছাকাছি আবার কিছু প্রদেশে ৩০ শতাংশের নিচেও আছে।
গড় হিসেবে পুরো ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশে বিজ্ঞান এবং প্রকৌশল চর্চায় নারীদের হার এখন ৪১ দশমিক ১ শতাংশ। ২০০২ সালে প্রথম যখন এই পরিসংখ্যান শুরু হয় তখন নারীদের অংশগ্রহণ ছিলো ৩০ দশমিক ৩ শতাংশ।
এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ২৭টি দেশের মোট ১ কোটি ৫৪ লাখ বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলীর মধ্যে নারী ও পুরুষের সংখ্যা যথাক্রমে- ৬৩ ও ৯১ লাখ।
ওই প্রতিবেদনটি বলছে, গত ২০ বছরে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী দেশ সুইজারল্যান্ডের বিজ্ঞান ও প্রকৌশল খাতে নারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে ৩০ দশমিক ৬ শতাংশ। ১৯৯৯ সালে যে হার ছিলো মাত্র ১০ দশমিক ৭ শতাংশ ২০১৯ সালে এসে তা হয়েছে ৪১ দশমিক ৩ শতাংশ।
একই সময়ে ডেনমার্কে এ হার প্রায় ২৬ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৫১ দশমিক ৭২ শতাংশ। নরওয়েতেও বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ।
তবে সব দেশেই যে এই অংশগ্রহণ বেড়েছে তা মোটেও নয়। কিছু কিছু দেশে প্রকৃতভাবে বিজ্ঞান ও প্রকৌশলে নারীদের অংশগ্রহণ কমেছে। এর মধ্যে রয়েছে ফিনল্যান্ড। ১৯৯৯ সালে এই দেশটিতে বিজ্ঞান ও প্রকৌশলে নারীদের অংশগ্রহণ ছিল ৫০ দশমিক ৯ শতাংশ। তবে ২০ বছরে ২০ শতাংশেরও বেশি কমে তা বর্তমানে হয়েছে ৩০ দশমিক ৫ শতাংশ। এভাবে বিভিন্ন হারে নারীদের অংশগ্রহণ কমেছে এস্তোনিয়া, হাঙ্গেরি এবং বেলজিয়ামের মতো দেশগুলোতেও।