রহস্যময় রোগে মারা যাচ্ছে পাখি
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য-আটলান্টিক অঞ্চলে ডজন ডজন সংবার্ডের রহস্যময় মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ফলে রাজ্যের ওয়াইল্ডলাইফ কর্মকর্তারা এসব পাখিকে খাওয়ানো এবং স্নান করানোর সময় মানুষকে বিশেষ সতর্ক থাকতে বলেছেন।
মে মাসের শেষ দিকে ওয়াশিংটন ডিসিতে প্রথম পাখিমৃত্যুর খবর আসে। মধ্য-আটলান্টিক এবং দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলজুড়ে ওয়াইল্ডলাইফ এজেন্সির কর্মকর্তারা এখন প্রায়ই এ ধরনের খবর পেয়ে যাচ্ছেন।
আমেরিকার ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের ওয়াইল্ডলাইফ ভেটেরিনারি কেয়ারের প্রতিষ্ঠাতা এবং ভেটেরিনারিয়ান বেলিন্ডা বারওয়েল বলেন, "আমাদের এখানে প্রচুর পরিমাণে আক্রান্ত গ্রেকল (কাকগোত্রীয়) এবং ব্লু জে পাখি নিয়ে আসা হচ্ছে"।
তিনি জানান, চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসার সময় পাখিগুলো অত্যন্ত দুর্বল থাকে এবং চোখ মেলে তাকাতে পারে না।
বারওয়েল বলেন, "কখনো চোখগুলো সামান্য ফোলা থাকে, আবার কখনো চোখের ওপর আলাদা আবরণের মত থাকে। মাথাঘোরার মত স্নায়বিক রোগের লক্ষণ থাকে তাদের মধ্যে, খুব ধীরগতিতে সামনে-পেছনে মাথা দোলাতে দেখা যায় আক্রান্ত পাখিকে "।
ইউনিভার্সিটি অফ পেনসিলভেনিয়া জানিয়েছে, এই রহস্যময় অসুস্থতায় বেশ কয়েক প্রজাতির পাখি আক্রান্ত হয়েছে-ব্লু জে, ইউরোপীয় স্টারলিং, সাধারণ কাক বা গ্রেকল, আমেরিকান রবিন, নর্দার্ন কার্ডিনাল, হাউস ফিঞ্চ, হাউজ স্প্যারো, ইস্টার্ন ব্লুবার্ড, লাল-পেটযুক্ত কাঠঠোকরা এবং ক্যারোলিনা ওয়ারেন প্রভৃতি।
পেনসিলভেনিয়া ইউনিভার্সিটির ভেটেরিনারি মেডিসিনের টক্সিকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক লিসা মারফি বলেন, রহস্যময় এ অসুখ নিয়ে এখন পর্যন্ত কোন স্পষ্ট তথ্য তাদের হাতে আসেনি।
মারফির অভিমত, যেহেতু এ রোগটি কোন নির্দিষ্ট ভৌগলিক অঞ্চল কিংবা নির্দিষ্ট প্রজাতির পাখির ওপর সীমাবদ্ধ নয়, ফলে রোগটির সনাক্তকরণ ক্রমশ ঘোলাটে এবং চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে। ঠিক কীসের জন্য এভাবে পাখিগুলো মারা পড়ছে, তা নির্ণয় করা রীতিমত ধাঁধাঁর সামিল বলে তিনি মনে করেন। যত বেশি পরীক্ষা সম্পন্ন হবে, তত দ্রুত এর কারণ উদ্ঘাটন সম্ভব।
বনবিভাগের কর্মকর্তারা আপাতত মানুষকে সতকর্তার অংশ হিসেবে এসব পাখির খাওয়া এবং স্নানের স্থান ব্লিচ জাতীয় দ্রবণে ধৌত করার পরামর্শ দিয়েছেন। কোন পাখির অসুস্থতা দেখা মাত্রই রাজ্যের ওয়াইল্ডলাইফ এজেন্সিকে জানাতে বলা হয়েছে। অন্যান্য পোষা প্রাণি এবং ছোট বাচ্চাদের আক্রান্ত পাখির সংস্পর্শে যেতে না দিতে এবং মৃত পাখিকে দ্রুত সরিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে। মৃত পাখি স্থানান্তরের সময় আবশ্যিকভাবে গ্লাভস পরতে বলা হয়েছে।
গত বছরও ফিঞ্চ প্রজাতির পাখির ওপর সালমোনেলা বিষের প্রভাবের কথা শোনা গেছিল। তবে মারফি নিশ্চিত করেন, এবারের প্রাদুর্ভাবটি ভিন্ন।
- সূত্র- এনপিআর