স্ত্রীকে তাজমহলের আদলে বাড়ি উপহার দিলেন ভারতীয় ব্যবসায়ী
মুঘল সম্রাট শাহজাহানের তৈরি স্থাপত্য তাজমহলের কথা শোনেননি এমন মানুষ এই একবিংশ শতাব্দীতে পাওয়াই যাবে না। স্ত্রী মমতাজ মহলের প্রতি ভালোবাসা থেকে এবং তার স্মৃতি রক্ষার্থে কালজয়ী সমাধিস্তম্ভটি তৈরি করেছিলেন শাহজাহান। কিন্তু সম্রাট শাহজাহান একাই যে প্রেমের জন্যে এতখানি মনপ্রাণ নিবেদন করেছেন তা কিন্তু নয়। প্রেমের খাতিরে এবার শাহজাহানের সমপর্যায়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন ভারতেরই এক ব্যবসায়ী। নিজের স্ত্রীর জন্য আসল তাজমহলের এক-তৃতীয়াংশ আকারের তাজমহল নির্মাণ করেছেন তিনিও!
কিন্তু পার্থক্য হলো, তাজমহলের এই রেপ্লিকাটি কোনো সমাধিস্তম্ভ নয়; বরং এটি একটি বাসভবন হিসেবেই ব্যবহৃত হচ্ছে।
আমাদের এ গল্পের নায়ক ও প্রেমিক পুরুষটির নাম আনন্দ প্রকাশ চৌকসে (৫২)। ভারতের মধ্যপ্রদেশের বোরহানপুরে একটি হাসপাতালের মালিক তিনি। আনন্দ প্রকাশের ভাষ্যে, সম্রাট শাহজাহানের স্ত্রী মমতাজও নিজের ১৪তম সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে বোরহানপুরেই মারা যান। প্রাথমিকভাবে তাকে এখানেই কবর দেওয়া হয় এবং পরে আগ্রায় নিয়ে যাওয়া হয়। আগ্রায় মমতাজের কবরের ওপর 'প্রেমের স্তম্ভ' হিসেবে পরিচিত তাজমহল গড়ে তোলেন শাহজাহান।
আনন্দ প্রকাশ চৌকসে তার রেপ্লিকা তাজমহলটি নির্মাণ করেছেন বোরহানপুরে। তাজমহলের জন্য রাজস্থানের যে শহর থেকে মার্বেল পাথর আনা হয়েছিল, সেই একই শহর থেকে আনা মার্বেল পাথর ব্যবহার করা হয়েছে এই তাজমহলে। তাছাড়া আসল তাজমহলের মতো একটি বিশাল গম্বুজ, সূক্ষ কারুকাজের মিনার এবং আগ্রার তাজমহলের আদলে আরও কিছু কারুকাজও আছে এতে।
"আমি একদিন মজা করে আমার স্ত্রীকে বলছিলাম যে তুমি মারা গেলে আমি একট তাজমহল বানাবো। একথা শুনে সাথে সাথেই সে নিষেধ করলো এবং বললো, সে মারা যেতে চায় না। তখন আমি বললাম, তাতে কোনো অসুবিধা নেই। তুমি বেঁচে থাকতেই আমি তাজমহল বানাবো", বলেন আনন্দ প্রকাশ।
তিনি আরও জানান, রেপ্লিকা তাজমহলটি নির্মাণ করতে শিল্পীদের ৩ বছর সময় লেগেছে। অন্যদিকে সম্রাট শাহজাহান তার তাজমহল নির্মাণ করেছিলেন ১৬৩২ থেকে ১৬৫৪ সালের মধ্যে।
সম্রাট শাহজাহানের তাজমহলের এলাকাজুড়ে সমাধি এবং মসজিদ রয়েছে। তাছাড়া আরও কিছু মুঘল রাজকীয় ব্যক্তিত্বের সমাধিও এখানে রয়েছে। তাজমহলের অদ্বিতীয় সৌন্দর্য্যের জন্য এটি ভারতের অন্যতম প্রধান পর্যটন আকর্ষণ। প্রতি বছর দেশ বিদেশের লাখো মানুষ তাজমহল দেখার জন্য ছুটে আসেন। তাজমহলকে ঘিরে আগ্রার হাজারো মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে এবং এটি আগ্রার অর্থনীতির প্রসার ঘটিয়েছে।
সূত্র: এপি