ধনী হওয়াতে কোনো অপরাধবোধ নেই - টাকা ছড়ানোর মতো খাজাঞ্চিখানাও নেই! বিল গেটস
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2023/02/04/106967046-1635430835800-gettyima.jpg)
বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী বিল গেটস ব্যবসা ছাড়াও বহু জনকল্যাণমূলক কাজে নিজেকে সংযুক্ত রাখেন। একদল মানুষ এই কাজের প্রশংসা করলেও অনেকেই গেটসের জনকল্যাণমূলক এ কার্যক্রমগুলোকে 'লোক দেখানো' বলে অভিহিত করেন। একইসাথে একচেটিয়া অজস্র সম্পদের মালিক হওয়ার অনেকেই সমাজে বিদ্যমান বৈষম্যের জন্য মাইক্রোসফটের এ প্রতিষ্ঠাতাকে দোষী সাব্যস্ত করে থাকেন। খবর ফরচুনের।
সম্প্রতি বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অবশ্য এ বিষয়ে নিজের ভাবনা জানিয়েছেন বিল গেটস। নিজে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের মালিক হওয়াতে কোনো অপরাধবোধ নেই মার্কিন এ ধনকুবের। বরং বিল গেটস জানান, তিনি অজস্র অর্থ আয় করে নিশ্চিত করেন যে, সেই অর্থ যাতে সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তনে ব্যবহার করা হয়।
জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে নিজের সোচ্চার ভূমিকার কথা বিল গেটস বহু আগে থেকেই প্রকাশ করে আসছেন। অথচ চলাচলের ক্ষেত্রে তিনি নিজেই একটি প্রাইভেট জেট ব্যবহার করেন যা পরিবেশ দূষণের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত। এ প্রসঙ্গে প্রাইভেট জেট ব্যবহার করতে পারায় তিনি নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করেন বলে জানান।
একইসাথে বিবিসির সাক্ষাৎকারে মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, "জলবায়ুর নেতিবাচক পরিবর্তনের জন্য যারা দায়ী আমি তাঁদের দলভুক্ত নই। বরং আমার কোম্পানির পক্ষ থেকে জলবায়ু ইস্যুতে প্রতিনিয়ত বিলিয়ন ডলার খরচ করা হয়। এর মধ্যে দিয়ে আমি নিজেকে জলবায়ু সমস্যা সমাধানে যারা কাজ করছে তাদের দলভুক্ত বলে মনে করি।"
ধর্মে প্রতি অগাধ আস্থা থেকে তৈরি ব্যবসায়িক নীতি নিজের ব্যবসায় সাফল্য অর্জনে কার্যকরী ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন প্রায় ১১৫ বিলিয়ন ডলারের মালিক এ ধনকুবের। ঠাট্টা করে বিল গেটস বলেন, "আমার হয়ে কাজ করলে নিশ্চিতভাবে শত মিলিয়ন ডলার আয় করা যাবে।" একইসাথে বিশ্বের চতুর্থ ধনী এ ব্যক্তি জানান যে, তার সাথে কাজ করলে ব্যতিক্রমী ও আকর্ষণীয় বিষয়েও কাজ করা সম্ভব হবে।
নিজে মিতব্যয়ী জীবনযাপন করেন না-কি এমন প্রশ্ন করা হলে বিল গেটস জানান, চাকচিক্যময় কিংবা ব্যায়বহুল সামগ্রীর ওপর তিনি অর্থ ব্যয় করেন না। গেটস আরও বলেন, "আমার নিজের বড় আলমারি নেই। আমি জুয়েলারিও ব্যবহার করি না। আবার আমার টাকা ছড়ানোর মতো খাজাঞ্চিখানাও নেই।"
নিজের লাইফস্টাইল সম্পর্কে বলতে যেয়ে ৬৭ বছর বয়সী এ ধনকুবের বলেন, "উপহারের বক্স খোলার পর সেখানে থাকা র্যাপিং পেপারটি আমি ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য সংগ্রহ করে রাখি না। অন্যদিকে আমি আমার দাদিকে দেখতাম তিনি কখনও কোনো ব্যাগ কিংবা দড়ি ফেলে দিতেন না।"
মিতব্যায়িতার প্রশ্নে বিল গেটস হয়তো রসিকতা করেই নিজেকে দাদির সাথে তুলনা করেছেন। তিনি আরও বলেন, "আমার দাদির মত করে ভাবলে আমি হয়তো আসলেই অনেক খরচ করি। কেননা আমি প্রয়োজন শেষে ব্যাগ সোজা আবর্জনার ঝুড়িতে ফেলে দেই।"
বিল গেটস ও তার সাবেক স্ত্রী মেলিন্ডা গেটস যৌথ উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের সিয়াটলে ২০০০ সালে কার্যক্রম শুরু করে ফাউন্ডেশনটি। গেটস লার্নিং ফাউন্ডেশনের সঙ্গে উইলিয়াম এইচ গেটস ফাউন্ডেশন একীভূত করে এটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত জনকল্যাণমূলক নানা কাজে ফাউন্ডেশনটি প্রায় ৫৩ বিলিয়ন ব্যয় করেছে।