কৃষিপণ্যের আমদানি-রপ্তানিতে গতি আনতে ২৭ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করছে ইউএসডিএ
অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধি এবং আমদানি সহজ করতে ২৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করছে ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচার (ইউএসডিএ)।
বুধবার ঢাকার একটি হোটেলে ইউএসডিএ এর অর্থায়নে পরিচালিত বাংলাদেশ ট্রেড ফেসিলিটেশন প্রজেক্টের উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। প্রকল্পটি ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সাল সময় পর্যন্ত বাস্তবায়িত হবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার।
বাংলাদেশ ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন প্রকল্পের মাধ্যমে চট্টগ্রাম সি পোর্ট এবং শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি করে কোল্ড চেইন তৈরিতে গুরুত্ব দেয়া হবে।
প্যারিশেবল, নন-প্যারিশেবল সব ধরনের কৃষি পণ্যের রপ্তানি কোন কারণে দেরি বা সমস্যায় পড়লে দ্রুত কোল্ড স্টোরেজে রাখা যায়।
এছাড়া আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়া সহজ করতে অটোমেশন, অনলাইন সার্টিফিকেশন, ঝুঁকিভিত্তিক পণ্য ছাড়করণ প্রক্রিয়া শক্তিশালী করা, আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়ার নিয়ম কানুন, বিভিন্ন দেশের আমদানি-রপ্তানিকারক ও পণ্য নিয়ে তথ্যভান্ডার তৈরি এবং দেশের পণ্য বাণিজ্যিকীকরণে গুরুত্ব দেয়া হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের পণ্যের অবস্থান নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে প্রকল্পটি। কৃষিপণ্য ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকারী পণ্যের বাজারজাতকরণ সহজ করতে বাণিজ্য পদ্ধতির আইনি ও অবকাঠামোগত সংষ্কার, পণ্যের গুণগত মান নিশ্চিত করতে পরীক্ষা পদ্ধতির উন্নয়ন, ঝুঁকিভিত্তিক পণ্য খালাসে কাঠামোগত পরিবর্তনে প্রকল্পটির মাধ্যমে কাজ করা হবে।
ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, ব্যবসাবান্ধব বাণিজ্য পরিবেশ সৃষ্টি এবং বাংলাদেশি পণ্যের আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো সংষ্কারে বাংলাদেশ সরকারের কার্যক্রমে যুক্তরাষ্ট্র সরকার সহায়তা অব্যাহত রাখবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ তার বক্তব্যে বলেন, ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন এগ্রিমেন্ট বাস্তবায়নের উন্নয়ন সহযোগীদের কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রয়োজন। যেখানে কৃষি বাণিজ্য সম্প্রসারণে ইউএসডিএ কারিগরি সহায়তা দিতে এগিয়ে এসেছে। প্রকল্পের কার্যক্রমগুলো বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সংস্থার কার্যক্রম সমন্বয় করবে।
প্রকল্পটির কার্যক্রম সম্মন্ধে এক উপস্থাপনায় বলা হয়, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই), বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ), বাংলাদেশ কস্টমস, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সহ কয়েকটি সংস্থা এই প্রকল্পে কাজ করবে।
সংস্থাগুলোর ল্যাবরেটরীর উন্নয়ন এবং পণ্য পরীক্ষার মান উন্নয়ন করে ল্যাবের সক্ষমতাকে আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যাওয়া হবে। রপ্তানি বা আমদানির জন্য সার্টিফিকেশন জটিলতা দূর করা হবে। সার্টিফিকেশন পদ্ধতিকে অনলাইনভিত্তিক করা হবে। যাতে করে দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবসায়ীরা এটি পেতে পারেন।
এছাড়া কোন পণ্য আমদানি হয়ে আসার পর যাতে দ্রুত পরীক্ষা করে ছাড় করানো যায় সে বিষয়টিও এর মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে।
এছাড়া কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ পণ্যের আমদানি রপ্তানিকারকদের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পূর্ণ আলাদা একটি তথ্যভান্ডার তৈরি করবে। যেখানে বিভিন্ন দেশের আমদানি রপ্তানিকারকদের তালিকা, কোন দেশে কোন পণ্যের চাহিদা রয়েছে, বিভিন্ন দেশের বাজার, আমদানি-রপ্তানির নিয়মকানুনের সমস্ত তথ্য এর মধ্যে থাকবে। কিভাবে দ্রুত পণ্যের সার্টিফিকেশন ও ল্যাব টেস্টের তথ্য পাওয়া যাবে সে বিষয়েও বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হবে।
প্রকল্প পরিচালক মাইকেল জে. পার বলেন, প্রকল্পটি শেষ হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো পরবর্তী কার্যক্রম চালিয়ে নেবে।