চাকরির বাজার স্বাভাবিক হয়ে উঠছে
দেশের করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোতে জনবল নিয়োগ প্রি-প্যান্ডেমিক অবস্থায় ফিরেছে। হেভি ইন্ডাস্ট্রি, ইঞ্জিনিয়ারিং ও কন্সট্রাকশন, হসপিটাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার, এগ্রো বেইজড ইন্ডাস্ট্রি, রিয়েল এস্টেট এবং ট্রেডিং সেক্টরে গত ফেব্রুয়ারিতে চাকরির বিজ্ঞাপন আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে বলে জানিয়েছে বেসরকারি ও করপোরেট খাতের প্রায় ৪০ হাজার প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের প্লাটফর্ম বিডিজবস ডট কম।
প্রতিষ্ঠানটির তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর থেকে বেশকিছু সেক্টরে জনবল নিয়োগ প্রি-প্যান্ডেমিক লেবেলে উন্নীত হয়েছে। ব্যাংক ও নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ফার্মাসিউটিক্যালস, এডুকেশন ও ইনফরমেশন টেকনোলজিখাতে গত ফেব্রুয়ারিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রি-প্যান্ডেমিক পর্যায়ে পৌঁছেছে। তবে গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল সেক্টর; সরকারি-আধা সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো এখনও আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কম নিয়োগ দিচ্ছে।
বিডিজবস ডট কমের তথ্য অনুযায়ী, গতবছর ফেব্রুয়ারিতে তাদের প্লাটফর্মে মোট ৪৯৭০টি চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়েছিল বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। লকডাউন চলাকালে গতবছর এপ্রিলে চাকরির বিজ্ঞাপন কমে ৬২৮টিতে নেমেছিল। গত সেপ্টেম্বর থেকে এ হার বাড়তে থাকে। এবছর ফেব্রুয়ারিতে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০৪৩টি।
বিডিজবস ডট কমের সিইও ফাহিম মসরুর দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, করপোরেট সেক্টরে জনবল নিয়োগ গত নভেম্বর- ডিসেম্বরে প্রি-প্যান্ডেমিক লেবেলে পৌঁছেছে। তবে প্রতিবছর বেসরকারি খাতে জনবল নিয়োগে ১০-১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও এবার তা নেই।
'রেস্টুরেন্ট, হসপিটালিটি, লজিস্টিক্স সেক্টরে জনবল নিয়োগের চাহিদা বাড়ছে। কোভিড পরিস্থিতিতে ই-কমার্স ব্যবসা সম্প্রসারণ হওয়ায় ডেলিভারিম্যানের চাহিদা অনেক বেড়ে যাওয়ায় কোম্পানিগুলো পর্যাপ্ত ডেলিভারিম্যান পাচ্ছে না'- যোগ করেন তিনি।
অবশ্য সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) গত সেপ্টেম্বর মাসেই কর্মসংস্থান প্রি-প্যান্ডেমিক পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে দাবি করেছে। সংস্থাটির জরিপ তথ্য অনুযায়ী, দেশে কোভিড সংক্রমণের সময় বা গতবছর মার্চে ১৭ শতাংশ ব্যবসায়ীর দোকান খোলা ছিল। জুলাই মাসে এটি কমে ১০ শতাংশে নামার পর সেপ্টেম্বরে প্রি-কোভিড পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। অর্থাৎ, লকডাউনের সময় যেসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী দোকান বন্ধ রেখে পেশা পরিবর্তন করেছিলেন, তারা সেপ্টেম্বর থেকেই আবার ব্যবসায় ফিরেছেন।
ব্যবসা চালু করেছে ছোট ছোট কারখানাগুলো
করোনার প্রভাবে কর্মসংস্থানে কতোটা প্রভাব পড়ছে, কিংবা এখন পরিস্থিতি কেমন- সে সম্পর্কে কোন তথ্য নেই শ্রম মন্ত্রণালয়ে। তবে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের ধারণা, কোভিডের কারণে বৃহৎ শিল্পখাতগুলোতে কারখানা লে-অফ না হওয়া এবং সকল খাত পুনরায় চালু হওয়ার পর কর্মসংস্থান আগের অবস্থায় পৌঁছেছে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (লেবার উইং) ড. মো. রেজাউল হক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, তৈরি পোশাকখাতসহ রপ্তানিমুখী খাতগুলোর শ্রমিকদের বেতন-ভাতা প্রণোদনা হিসেবে সরকার থেকে পরিশোধ করায় এসবখাতের কোন কোম্পানি লে-অফ হয়নি। তবে কোন কোন কারখানায় কিছু শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঘটনা ঘটতে পারে। অন্যান্যখাতের ছোট-খাট কোন কারখানা বন্ধ হলেও সেগুলো এখন চালু হয়েছে।
'আগের সমান শ্রমিক ছাড়া কারখানা পুরোপুরি চালু করা সম্ভব নয়। তাই আমরা মনে করছি, ওয়ার্কার নিয়োগ প্রি-প্যান্ডেমিক পর্যায়ে পৌঁছেছে', যোগ করেন তিনি।
করোনার কারণে প্রায় ৩২ হাজার শ্রমিক চাকরি হারিয়েছিল বলে তখন জানিয়েছিল কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় তৈরি পোশাক, লেদার ও ফুটওয়্যারখাতের বেকার শ্রমিকদের দেওয়া নগদ সহায়তা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন প্রায় ১৬,৫০০ শ্রমিক, যার মধ্যে ১৬ হাজারেরও বেশি তৈরি পোশাকখাতের।
বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ বলছে, কারখানা পুরোদমে চালু হওয়ার পর ইউরোপে সেকেন্ড ওয়েভের কারণে লকডাউন শুরু হয়েছে। ফলে ওভেন গার্মেন্টের রপ্তানি অর্ডার কমে যাওয়ায় এ ধরণের কারখানাগুলোতে নতুন করে শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। আগামী জুন-জুলাইয়ের আগে উভেন কারখানাগুলোতে নতুন শ্রমিক নিয়োগের সম্ভাবনা দেখছেন না তারা। তবে রপ্তানি বাড়তে থাকায় নিটওয়্যার কারখানাগুলো নতুন করে শ্রমিক নিয়োগ দিচ্ছে।
বিজিএমইএ প্রেসিডেন্ট রুবানা হক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'আমরা আশা করছি যে, পশ্চিমা অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে এবং আমরা পূর্ণ সক্ষমতা অনুযায়ী রপ্তানি আদেশ পাব। আর তখনই আমরা শ্রমিক নিয়োগ শুরু করতে পারব।'
গিভেন্সি গ্রুপের চেয়ারম্যান ও বিজিএমইএ'র সাবেক সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ টিবিএসকে বলেন, নিটওয়্যার কারখানাগুলো কিছু কিছু শ্রমিক নিয়োগ দিলেও বেশিরভাগ উভেন কারখানায় এখন কোন কাজ নেই। উভেন কারখানাগুলোতে নিয়োগ এখন প্রায় বন্ধ আছে। আগামী জুন-জুলাইয়ে ইউরোপে লকডাউন প্রত্যাহার হলে এখাতে রিক্রুটমেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
পর্যটন সচল হয়নি পুরোদমে
অভ্যন্তরীণ পর্যটন উন্মুক্ত হলেও ইনবাউন্ড ও আউটবাউন্ড পর্যটন এখনও সচল হয়নি। ফলে এখাতের বড় প্রতিষ্ঠানগুলো এখনও নতুন করে জনবল নিয়োগ করছে না বলে জানান ট্যুরস অপারেটরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর প্রেসিডেন্ট মো. রাফিউজ্জামান।
তিনি বলেন, 'আমাদের অভ্যন্তরীণ পর্যটন খুবই কম। মেইনস্ট্রিম প্রতিষ্ঠানগুলো ইনবাউন্ড ও আউটবাউন্ড পর্যটনের সঙ্গে সম্পৃক্ত, যেখানে এখনও স্থবিরতা বিরাজ করছে। এ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে এখাতে রিক্রুটমেন্ট হবে না'।
অনেক কিন্ডারগার্টেন চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে
গতবছর মার্চ থেকে সব ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার পর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিন্ডারগার্টেনগুলো। অনেক কিন্ডারগার্টেন বন্ধ হয়ে গেছে, শিক্ষকরা অন্য পেশায় সম্পৃক্ত হয়েছেন। আগামী ৩০ মার্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত হলেও অনেক কিন্ডারগার্টেন আর চালু হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে এখাতে শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ প্রি-প্যান্ডেমিক লেবেলে পৌঁছতে অন্তত বছরখানেক লেগে যাবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের সভাপতি মিজানুর রহমান।
তিনি বলেন, প্রায় তিন হাজার কিন্ডারগার্টেন বন্ধ হয়েছে, যা আবার চালুর সম্ভাবনা কম। অনেকে শিক্ষক ছাঁটাই করেছে। বেতন বন্ধ হওয়ায় অনেক শিক্ষক পেশা বদল করেছে। তাদের ফিরে পাওয়া যাবে না। তবে নতুন করে নিয়োগের বিষয়টি নির্ভর করছে শিক্ষার্থী ভর্তির ওপর।
'আগের বছরের তুলনায় এবার ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। আশা করছি, কিন্ডারগার্টেন খোলার পর নতুন করে শিক্ষার্থী ভর্তি হবে। আশানুরূপ শিক্ষার্থী না পেলে প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন নিয়োগ দেওয়ার বদলে কম শিক্ষক নিয়েই তা পরিচালনা করবে'- যোগ করেন তিনি।
'নতুন কর্মসংস্থান বৃদ্ধির হার আশানুরূপ নয়'
বর্তমান শ্রমবাজার পরিস্থিতি নিয়ে গবেষণা করছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সানেম, যা আগামী ১০ মার্চ প্রকাশ করছে সংস্থাটি। এই গবেষণা দলের সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা টিবিএসকে বলেন, 'এখনও আমাদের অর্থনীতি শতভাগ সামর্থ্য নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্কিত প্রায় সব খাত বন্ধ রয়েছে। কিছু খাত ধীরে ধীরে সচল হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের মাঝে এখনও আস্থা ফিরে না আসায় বড় বিনিয়োগ আসছে না। এর ফলে নতুন কর্মসংস্থান প্রত্যাশিত হারে বাড়ছে না'।
তিনি বলেন, বিদ্যমান শিল্প কারখানা ও বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানগুলো কোন রকমে টিকে থাকার চেষ্টার অংশ হিসেবে চালু রাখা হচ্ছে। এখন এসব ব্যবসায় তেমন লাভ না হলেও কর্মসংস্থান কোভিড পূর্ববর্তী সময়ের কাছাকাছি রয়েছে।
বিদিশা বলেন, 'আমাদের বিপুল পরিমাণ মানুষের কর্মসংস্থানের মূল ভরসা রপ্তানিখাতগুলো, বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্প। এসবখাতে কর্মরতদের আয় ও বেকার শ্রমিকদের কর্ম ফিরে পেতে আরও কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে'।
'পিপিই, মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজারের মতো নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সামগ্রী উৎপাদন ও বিপণনে নতুন করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। ইদানিং ক্যাটারিং ব্যবসাও সম্প্রসারিত হচ্ছে। সরকারের প্রণোদনা পেলে এসবখাতে বিপুল কর্মসংস্থান হতে পারে। ফার্মাসিউটিক্যাল, চামড়া শিল্প ও আইসিটি খাতে এমনিতেই বিপুল পরিমাণে কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা রয়েছে'- যোগ করেন তিনি।
সরকারি নিয়োগে গতি ফিরছে
করোনার প্রভাব কমতে থাকায় বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (বিপিএসসি)সহ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরগুলো স্থগিত থাকা নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়ার পাশাপাশি নতুন করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া শুরু করেছে। দ্রুত নিয়োগ দিয়ে সরকারের শূন্যপদ পূরণে গত মাসে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে মন্ত্রণালয়গুলোকে তাগাদা দেওয়া হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোতেও নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের জুনে সরকারের শূন্যপদের সংখ্যা ছিল ৩,০৯,৯৫৯। কোভিড পরিস্থিতিতে ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়া থমকে যাওয়ায় ২০২০ এর জুনে শূন্যপদ বেড়ে দাঁড়ায় ৩,৪৩,৬০৩। ১০ হাজারেরও বেশি পদ শূন্য রয়েছে এমন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ রয়েছে আটটি।
২০১৯ সালে বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর ওই বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাঁচ বছর মেয়াদে ১ কোটি ২৮ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টির নির্দেশ দেন।
এ জন্য ব্যবসা ও বিনিয়োগ বাড়ানো, ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম ত্বরান্বিত করাসহ বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, এই পাঁচ বছরের মধ্যে প্রতি পরিবারে অন্তত একজন করে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে সরকারি দপ্তরগুলোতে থাকা শূন্যপদ দ্রুত নিয়োগ দিয়ে পূরণ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর ওই মৌখিক নির্দেশনার গুরুত্ব তুলে ধরে তখনকার মুখ্যসচিব মো. নজিবুর রহমান ওই বছরের ৪ মার্চ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছিলেন। তারপর সরকারি নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে তৎপরতা শুরুর পরই করোনার প্রভাবে তা থমকে যায়।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, করোনার কারণে কর্মসংস্থান সৃষ্টি তেমনভাবে থমকে যায়নি। লকডাউনের সময় কিছুটা স্থবিরতা ছিল, যা বাউন্স ব্যাক করেছে।
তিনি বলেন, সরকার বিনিয়োগ আকৃষ্টের মাধ্যমে কর্মসংস্থান বাড়াতে মিরসরাইতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর, আড়াইহাজারে জাপান ইকোনমিক জোন ও মাতারবাড়িতে পুরোদমে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এসব জায়গায় দেশি-বিদেশি বিনিয়োগও আসছে।
কৃষি ও শিল্পে শ্রমিক সংকট রয়েছে। ধান কাটার সময় শ্রমিক পাওয়া যায় না। গার্মেন্টস, ওষুধ খাতেও দক্ষ শ্রমিকের ঘাটতি রয়েছে। তবে বেকারত্ব রয়েছে গ্রাজুয়েটদের মধ্যে। কারণ, তারা সবাই অফিস জব চায়। গ্রাজুয়েশনের বিষয় নির্ধারণের করার আগেই ক্যারিয়ার প্লানিং ও ক্যারিয়ার চয়েস ঠিক করার পরামর্শ দেন তিনি।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে মাসে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগ দিতে আবারও মন্ত্রণালয়গুলোকে চিঠি দিয়েছে। জনবল নিয়োগে মন্ত্রণালয়গুলোর কোন সমস্যা থাকলে সে তথ্যসহ নিয়োগ পরিকল্পনার তথ্য পাঠাতে বলেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। দ্রুত শূন্যপদ পূরণে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংক হোয়াইট কলার জবের গুরুত্বপূর্ণ উৎস
হোয়াইট কলার জবের অন্যতম ক্ষেত্রে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলো। এসব ব্যাংক ও সরকারের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলে প্রায় ৫৪ হাজার পদ শূন্য রয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোর নবম ও দশম গ্রেডে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি (বিএসসি)। এ কমিটি কোভিডকালীন সময়ে প্রায় পাঁচ হাজার ব্যাংক কর্মকর্তা নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ছয় লাখেরও বেশি আবেদন সংগ্রহ করলেও নিয়োগ পরীক্ষা নেয়নি।
বিএসসি'র সদস্য সচিব ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক আরিফ হোসেন খান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'যেসব পদে প্রার্থীর সংখ্যা ১০ হাজার পর্যন্ত, আমরা এখন তাদের পরীক্ষা নিচ্ছি। কিন্তু অফিসার, অফিসার (ক্যাশ) ও সিনিয়র অফিসার পদে কয়েক লাখ করে আবেদন জমা পড়েছে। এসব প্রার্থীদের পরীক্ষা নেওয়ার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রেখেছি, কিন্তু কোভিড সংক্রমণের আশঙ্কায় পরীক্ষা নিচ্ছি না'।
'আগামী ১৯ মার্চ ৪১তম বিসিএসের কয়েক লাখ প্রার্থীর প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হবে। তার অভিজ্ঞতা ও জনমত পর্যালোচনা করে নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া শুরু করবো আমরা', যোগ করেন তিনি।