টেক্সটাইল খাতে সাব-কন্ট্রাক্টিং চালুর অনুমতি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়
উৎপাদন সক্ষমতার তুলনায় অধিক রপ্তানি চাহিদা রয়েছে- স্পিনিং ও উইভিং খাতের এমন কোম্পানিগুলো অন্য কোম্পানি থেকে সাব-কন্ট্রাক্টের ভিত্তিতে পণ্য উৎপাদন করে তা নিজের উৎপাদিত পণ্য হিসেবে রপ্তানি করতে পারবে। কিছু কোম্পানির কাছে বিপুল পরিমাণ রপ্তানি অর্ডার থাকা এবং ছোট ও মাঝারি মানের কিছু কোম্পানির উৎপাদন সক্ষমতা কাজে লাগানো যাচ্ছে না বলে এ সুযোগ দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
এ সিদ্ধান্তের ফলে স্পিনিং ও উইভিংখাতের যেসব মিলের কাজ নেই, তারা একদিকে কাজ পাবে, অন্যদিকে রপ্তানিও বাড়বে বলে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানিয়েছেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস এসোসিয়েশনের সেক্রেটারি মনসুর আহমেদ।
'সাব-কন্ট্রাক্টিং সুবিধার সুযোগ দেওয়ায় এ খাতের রুগ্ন মিলগুলো বিনিয়োগ সুরক্ষা পাবে, শ্রমিকদের কর্মসংস্থানও অব্যাহত থাকবে। সাব-কন্ট্রাক্ট থেকে আয়ের অর্থে মিলগুলো তাদের ব্যাংক ঋণ পরিশোধের সুযোগ পাবে', যোগ করেন তিনি।
টেক্সটাইল খাতের কিছু বড় কোম্পানির কাছে উৎপাদন সক্ষমতার তুলনায় বেশি রপ্তানি অর্ডার আসছে, অন্যদিকে কিছু কোম্পানি কাজের অভাবে রুগ্ন হয়ে পড়ছে- এমন তথ্য উল্লেখ করে গত জানুয়ারিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন। তিনি বলেন, যেসব কোম্পানির হাতে অধিক রপ্তানি চাহিদা রয়েছে, তারা সাব-কন্ট্রাক্টের ভিত্তিতে অলস পড়ে থাকা কোম্পানি থেকে পণ্য উৎপাদন করার সুযোগ পেলে রপ্তানি বাড়বে, কর্মসংস্থানও সুরক্ষিত হবে। তার প্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মার্চের প্রথম সপ্তাহে এখাতে সাব-কন্ট্রাক্টিং করার অনুমতি দিয়েছে।
রপ্তানিমুখী স্পিনিং ও উইভিং মিলগুলো বন্ডেড ওয়্যারহাউজ সুবিধায় কাঁচামাল আমদানি করে। নিয়মানুযায়ী এসব কাঁচামাল অন্য কোম্পানিতে স্থানান্তর করার সুযোগ নেই। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সাব-কন্ট্রাক্টেও পারমিশন দেওয়ায় এখন এসব কাঁচামাল ব্যবহার করে অন্য কারখানায় পণ্য উৎপাদন করলেও তা সাব-কন্ট্রাক্ট দেওয়া কোম্পানির নিজস্ব উৎপাদিত পণ্য হিসেবে বিবেচিত হবে বলে জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আর কন্ট্রাক্টিং মিল সাব-কন্ট্রাক্টিং মিলের উৎপাদন সক্ষমতা নিজের সক্ষমতা হিসেবে দেখাতে পারবে।
দেশের প্রধান রপ্তানিখাত তৈরি পোশাক শিল্পের প্রয়োজনীয় সুতা ও কাপড় সরবরাহ করে প্রচ্ছন্ন রপ্তানিকারক হিসেবে বড় ভূমিকা রাখছে টেক্সটাইল সেক্টর। এছাড়া, স্থানীয় জনগোষ্ঠীর বস্ত্র চাহিদা মেটাতেও বড় ভূমিকা রাখছে খাতটি।
বিটিএমএ'র মতে, এককভাবে দেশের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগখাত টেক্সটাইল শিল্পে বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা। দেশের জিডিপিতে এ খাতের অবদান প্রায় ১৩ শতাংশ। এ খাত দেশের নিটওয়্যারের প্রায় ৯০ ভাগ ও উভেন গার্মেন্টসের প্রায় ৪০ ভাগ কাঁচামালের যোগান নিশ্চিত করে।
বিটিএমএ'র সদস্যভুক্ত কারখানার সংখ্যা ১৪৮৮টি। এর মধ্যে ইয়ার্ন ম্যানুফ্যাকচারিং মিল ৪৩৩টি, ফেব্রিক ম্যানুফ্যাকচারিং মিল ৮০৯টি এবং ডায়িং, প্রিন্টিং, ফিনিশিং মিল রয়েছে ২৪৬টি।